বাবার অনুপস্থিতিতে মানিকতলার কর্মীদের সঙ্গেই দলীয় কর্মসূচিতে শ্রেয়া পাণ্ডে। —নিজস্ব চিত্র।
১১ বছর বয়সে বাবার হয়ে ভোটার স্লিপ লিখে দিয়ে পেতেন ৫০ টাকা। তাতেই ছিল ছেলেবেলার আনন্দ। কিন্তু বয়সের সঙ্গে বদলেছে দায়িত্ব। আপাতত অসুস্থ বাবার যাবতীয় কাজ নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন শ্রেয়া পাণ্ডে। রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষামন্ত্রী সাধন পাণ্ডের অভিনেত্রী কন্যা এখন তাঁর বাবার বিধানসভা কেন্দ্র মানিকতলার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।তবে কি তিনি এ বার সক্রিয় রাজনীতিতে আসবেন? শ্রেয়ার স্পষ্ট জবাব, ‘‘কর্মী হয়েই রাজনীতিতে থাকতে চাই।’’
বাবাসাধন ৯ বারের বিধায়ক। রাজ্যের মন্ত্রীও। গত ১৭ জুলাই থেকে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।কিন্তু মানিকতলার মানুষের জনপরিষেবা পেতে যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তাই নিয়ম করে বাবার অফিসে বসছেন শ্রেয়া।সাধনের চেয়ারের পাশেই একটা ছোট চেয়ার নিয়ে বসে জনতার কথা শুনছেন। শ্রেয়ার দাবি, সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন সমস্যা মেটানোর। কখনও বসছেনকাঁকুড়গাছির বাড়ির অফিসে। কখনও বা গোয়াবাগানের অফিসে বসছেন। দলীয় কর্মসূচীতে কর্মীদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শামিল হচ্ছেন। ২১ জুলাই মুখ্যমন্ত্রী ভার্চুয়াল জনসভার বক্তৃতা কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে শুনেছেন। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, আগামী ১৬ অগস্ট ‘খেলা হবে দিবস’ পালন করবে দল। তাই স্বাধীনতা দিবসের পাশাপাশি ‘খেলা হবে দিবস’-এরও প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। খুঁটি পুজো থেকে রক্তদান শিবির, মন্দির উদ্বোধন থেকে মাজারে চাদর দেওয়ার অনুষ্ঠানে সাধনের যে সব আমন্ত্রণ আসছে, সেখানেও বাবার হয়ে যাচ্ছেন তিনি।
অভিনয়ের কাজ ছাড়াও ব্যবসা ছিল শ্রেয়ার। কিন্তু গত নভেম্বরে সাধন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তার পর নিজের পেশাগত দুনিয়া থেকে স্বেচ্ছাবসর নেন সাধন-কন্যা। শ্রেয়া বলেন, ‘‘জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই বাবাকে রাজনীতি করতে দেখছি। তাই ছোটবেলা থেকে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছি বলা যায়। নানা সময়ে রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও অংশ নিয়েছি। বাবা যখনই অসুস্থ হয়েছেন, তখনই তাঁর কাজকর্ম দেখেছি। এখন বাবা হাসপাতালে। তাই একজন কর্মীর মতোই তাঁর দায়িত্ব সামলাচ্ছি। যাতে বাবা বাড়ি এসে দেখেন যে, তাঁর অনুপস্থিতিতে কোনও কাজ আটকে থাকেনি।’’
সক্রিয় রাজনীতিতে আসবেন? কিংবা জনপ্রতিনিধি হতে চান? এমন জোড়া প্রশ্নের উত্তরে সাধন কন্যার জবাব, ‘‘ছোটবেলায় বাবার ভোটার স্লিপ লেখা থেকে শুরু করে গত বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত আমি কর্মী হিসেবেই কাজ করেছি। কর্মী হয়েই থাকতে চাই। দল যদি কোনওদিন কোনও দায়িত্ব দেয়, তা হলে অবশ্যই সে দায়িত্ব পালন করব।’’