বিজেপি শাসিত রাজ্যে প্রশাসনের বাধা সত্ত্বেও ত্রিপুরায় থেকেই কাজ করতে চায় প্রশান্ত কিশোরের আইপ্যাক। রবিবার গভীর রাত থেকে সোমবার পর্যন্ত আইপ্যাকের টিমকে আগরতলার একটি হোটেলে আটকে রাখা হয়েছিল। মঙ্গলবারেও তাঁদের গতিবিধি অবাধ করে দেওয়া হবে, এমন কোনও নিশ্চয়তা মেলেনি। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁরা ত্রিপুরায় কাজ চালিয়ে যেতে চান।
রবিবার গভীর রাতে আগরতলার ওই হোটেলে হানা দেয় ত্রিপুরা পশ্চিম জেলার পুলিশ। গত সপ্তাহ থেকে ওই হোটেলে থেকেই আইপ্যাকের ২৩ জনের প্রতিনিধিদল রাজ্য জুড়ে সমীক্ষার কাজ চালাচ্ছিল। সোমবারও হোটেলে আটক ছিল আইপ্যাকের দল। ত্রিপুরা পুলিশের অভিযোগ ছিল, করোনা সংক্রমণের সময় বাইরের রাজ্য থেকে ওই ২৩ জন এসেছেন। তাই তাঁদের কোভিড পরীক্ষা করানো হচ্ছে। সোমবার তাঁদের কোভিড পরীক্ষা করানোর পরেও মঙ্গলবারও তাঁরা হোটেলেই ‘বন্দি’ রয়েছেন। সেখানে থেকেই তাঁরা ত্রিপুরা প্রদেশ তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। আইপ্যাকের প্রতিনিধিদের হোটেলে আটকে রাখার প্রতিবাদে মঙ্গলবার ত্রিপুরা প্রদেশ তৃণমূল নেতৃত্ব রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ দিবস পালনের ডাক দিয়েছেন।
রবিবার গভীর রাত থেকে আইপ্যাকের প্রতিনিধিদের হোটেলে পুলিশ দিয়ে আটকে রাখার বিষয়টি ত্রিপুরা তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি আশিষ লাল সিংহ জানান কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসস্থান লাগোয়া দফতরে। সূত্রের খবর, শীর্ষনেতৃত্বের নির্দেশেই ত্রিপুরার প্রতিবাদ দিবস পালনের কর্মসূচি নিয়েছে সে রাজ্যের তৃণমূল। প্রসঙ্গত, ওই ঘটনার প্রতিবাদে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে আক্রমণ করেছেন বিজেপি-কে। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যের বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের কাছে হেরে যাওয়ার ভয়ে এখন থেকেই শঙ্কিত ত্রিপুরার বিজেপি সরকার এই ধরনের পদক্ষেপ করছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, রাজনৈতিক ভাবেই এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করা হবে। তার মধ্যেই আইপ্যাকের টিম জানিয়েছে, তারা হোটেলে থেকেই কাজ চালিয়ে যেতে চায়।
সূত্রের খবর, হোটেলবন্দি আইপ্যাকের প্রতিনিধিরা প্রদেশ তৃণমূল নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছেন, বিপ্লব দেবের সরকারের কোনও চাপের কাছে নতিস্বীকার করবেন না তাঁরা। বরং ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের লক্ষ্যে আইপ্যাক যে সমীক্ষার কাজ তাঁরা শুরু করেছে, তা তাঁরা চালিয়ে যাবেন। এখন যে তাঁরা আগরতলা ছেড়ে যাচ্ছেন না, তা-ও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রদেশ ত্রিপুরা তৃণমূল নেতৃত্বকে। সোমবার রাতে হোটেলবন্দি আইপ্যাকের প্রতিনিধিরা রাজ্যের তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে নিজেদের কাজ নিয়ে আলোচনাও করেছেন। কোনও কাজে তাঁদের সহযোগিতা প্রয়োজন হলে তা নিয়ে আলোচনা করার পরিসর রয়েছে বলেও ত্রিপুরার তৃণমূল নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। ত্রিপুরা তৃণমূলের নেতা আশিস লাল সিংহ মঙ্গলবার আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে আইপ্যাকের প্রতিনিধিদের কথা হয়েছে। তাঁরা আমাদের জানিয়েছেন, কোনও পরিস্থিতিতেই তাঁরা ত্রিপুরার কাজ থামাবেন না। হোটেলে অন্যায় ভাবে তাঁদের আটক রাখা হলেও আগামী বিধানসভা নির্বাচনের জন্য জমি তৈরির কাজের চেষ্টা তাঁরা চালিয়ে যাবেন।’’