শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়
একাধিক ডিগ্রি থেকেও চাকরি পাওয়া যাচ্ছে না। কত কত শিক্ষিত ছেলেমেয়ে বেকার হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন! এ বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হল, তারা আসলে শিক্ষিত বেকারে পরিণত হয়েছে। শিক্ষা মেলার সূচনার দিনে এমনই মন্তব্য করলেন রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। মন্ত্রীর এমন মন্তব্যে তৈরি হল বিস্তর জল্পনা। বিরোধীদের দীর্ঘ দিনের অভিযোগ, রাজ্যের শিক্ষিত যুবক-যুবতীদের চাকরি দিতে ব্যর্থ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। শোভনদেবের মন্তব্যের পর প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি বেকার সমস্যা নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ বকলমে স্বীকার করে নিলেন রাজ্যের মন্ত্রী?
শনিবার দুপুরে নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে শিক্ষা মেলার আয়োজন করা হয়। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় অংশ নিয়েছিল ওই মেলায়। অনুষ্ঠানে শোভনদেব ছাড়াও হাজির ছিলেন রাজ্যের আরও দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও হুমায়ুন কবীর। তাঁদের সামনে বক্তৃতা করতে গিয়ে শোভনদেব বলেন, ‘‘এ বছর মাধ্যমিকে ১২ লক্ষ পড়ুয়া পরীক্ষা দিয়েছে। তাদের মধ্যে পাশ করেছে ৮৬ শতাংশ। ওরা সবাই শিক্ষিত বেকার হয়ে গেল। এর পর ওরা উচ্চমাধ্যমিক দেবে, গ্র্যাজুয়েশন দেবে, মাস্টার্স দেবে। এত ছেলে তৈরি হচ্ছে প্রতি দিন, কিন্তু ওরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। শুধু গ্র্যাজুয়েট হয়ে চাকরি পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু এমএ পাশ করে মিলছে না চাকরি।’’
খড়দহের বিধায়ক শোভনদেবের এই মন্তব্যেই বিতর্ক হয়েছে। বিরোধীদের প্রশ্ন, মন্ত্রী কি রাজ্যের শিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের চাকরি না পাওয়ার কথাই বলতে চাইছেন? যদিও শাসক দলের দাবি, ওই মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে গোটা দেশের কথাই বলতে চেয়েছেন শোভনদেব। এই দাবির পক্ষে যুক্তি খাড়া করতে গিয়ে ওই অনুষ্ঠানে রাজ্যের কারিগরিমন্ত্রী হুমায়ুনের বক্তৃতার অংশ তুলে ধরছেন তাঁরা। শিক্ষা মেলায় হুমায়ুন বলেন, ‘‘গ্র্যাজুয়েশন বা মাস্টার্সের মতো ডিগ্রি থাকলেও এখন চাকরি পেতে সমস্যা হয়। এখন ডিগ্রির সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজন কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণও।’’ হুমায়ুনের পাশাপাশি শোভনদেবও রাজ্যের তরুণ সমাজকে আসলে ওই কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ারই পরামর্শ দিয়েছেন আসলে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।