রামপুরহাটে তৃণমূলের সভায় শত্রুঘ্ন সিন্হা। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
আগামী লোকসভা নির্বাচনে দেশের সরকার পরিবর্তনে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বড় ভূমিকা পালন করবেন বলে দাবি করলেন অভিনেতা তথা আসানসোলের তৃণমূল সাংসদ শত্রুঘ্ন সিন্হা। রবিবার রামপুরহাটে দলীয় কর্মসূচিতে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার’ আখ্যা দিয়ে শত্রুঘ্ন বলেন, ‘‘২০২৪ সাল লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রের সরকার পরিবর্তনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হবেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব।’’
পূর্ব ঘোষণা মতোই রামপুরহাটে এ দিন বিকেলে তৃণমূলের মহামিছিলে উপস্থিত ছিলেন শত্রুঘ্ন। রামপুরহাটের সেচ কলোনি সংলগ্ন সার্কিট হাউস থেকে কয়েক হাজার তৃণমূল কর্মী-সমর্থক ওই মিছিলে পাঁচমাথা মোড় পর্যন্ত হাঁটেন। মিছিলে সঙ্গে হুডখোলা গাড়িতে ছিলেন শত্রুঘ্ন। রামপুরহাটের পাঁচমাথা মোড়ে শত্রুঘ্ন সভাও করলেন। শত্রুঘ্ন ছাড়াও মিছিলে ও সভায় উপস্থিত ছিলেন আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। এ ছাড়া মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, বিকাশ রায়চৌধূরী, কাজল শেখ উপস্থিত ছিলেন।
দিন দু’য়েক আগে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সিপিএম ও বিজেপি রামপুরহাটে মিছিল করেছিল। ওই দিনই তৃণমূল রামপুরহাটে পাল্টা মহামিছিল ও সভা করার সিদ্ধান্ত নেয়। দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের অনুপস্থিতিতে বীরভূম জেলা নিজে দেখবেন বলে ক’দিন আগেই জেলায় এসে ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বীরভূমে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক লড়াই, সততা নিয়ে প্রশংসা করে শত্রুঘ্ন বলেন, ‘‘কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের ঔদ্ধত্য, স্বেচ্ছাচারী রাজ, স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বিজেপি ছেড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে হাত মিলিয়েছি।’’
আদানি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করেন শত্রুঘ্ন। তিনি বলেন, ‘‘বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কেবলমাত্র একজন ব্যক্তিকে সমস্ত ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। লোকসভায় এই সব নিয়ে প্রশ্ন তুললে প্রধানমন্ত্রী কোনও মন্তব্য করেন না।’’ তাঁর তোপ, ‘‘এতটাই অহঙ্কারী প্রধানমন্ত্রী যে এখনও পর্যন্ত কোনও সাংবাদিক সম্মেলন করেন না। আদানি প্রসঙ্গে সমস্ত দিক খতিয়ে যাচাই করে দেখা উচিত।’’
রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে বিরোধী দলের অভিযোগের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘‘এটা আদালত যেমন দেখছে তেমনই আদানি প্রসঙ্গে আদালতে বিচার হওয়া উচিত।’’ অনুব্রত প্রসঙ্গ অবশ্য স্থানীয় বিষয় বলে এড়িয়ে যান তিনি। সেই সঙ্গেই তিনি দাবি করেন, সমস্ত নির্বাচনের মতো পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল জয়ী হবে। এ দিনের সভায় শত্রুঘ্ন ছাড়া আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকও বক্তৃতা করেন।