ফাইল চিত্র।
৩০ জানুয়ারি গাইঘাটার ঠাকুরনগরে মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আসবেন বলে জানালেন বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর। মঙ্গলবার ঠাকুরবাড়িতে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘‘অমিত শাহ এখানে বক্তৃতা করবেন। নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করা নিয়ে তাঁর মতামত জানাবেন। সিএএ কার্যকর করা নিয়ে আমরা মতুয়ারা সংশয়ে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তা দূর করবেন। আমরা এটাই চেয়েছিলাম। আমরা আনন্দিত।’’ শান্তনু জানান, ঠাকুরবাড়িতে সরাসরি রাজনৈতিক কর্মসূচি তাঁরা চান না। উদ্বাস্তু মতুয়াদের সভায় আসবেন শাহ।
নাগরিকত্ব আইন দ্রুত প্রয়োগ নিয়ে কিছু দিন ধরেই দলের উপরে চাপ বাড়াচ্ছিলেন শান্তনু। দলের কর্মসূচি এড়িয়ে চলছিলেন। নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করা নিয়ে মতুয়া মহাসঙ্ঘের একাংশের চাপ আছে তাঁর উপরে, তা বার বারই জানাচ্ছিলেন। সেই সূত্রেই তাঁর দাবি, শাহ ঠাকুরনগরে এসে নাগরিকত্ব আইন প্রয়োগ নিয়ে কেন্দ্রের অবস্থান স্পষ্ট করুন।
‘বেসুরো’ শান্তনুকে নিয়ে খানিক অস্বস্তিতে ছিল বিজেপি। বোলপুরের সভায় এসে শাহ জানিয়ে যান, অতিমারি-আবহে নাগরিকত্ব আইন প্রয়োগের কথা এখনই ভাবছে না কেন্দ্র। তাতে শান্তনুর গোঁসা বাড়ে। দিন কয়েক আগে তাঁকে কলকাতায় ডেকে কথা বলেন রাজ্য নেতারা। দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, শান্তনুর দাবি মেনে বনগাঁকে দলের সাংগঠনিক জেলা ঘোষণা করে শান্তনু-ঘনিষ্ঠ এক জনকে সভাপতিও করা হয়েছে।
তবে শান্তনুর সঙ্গে দলের ফাটলের ইঙ্গিত পেয়ে তৃণমূল নেতানেত্রীরা তাঁকে কিছু দিন ধরে ‘বার্তা’ দিতে শুরু করেছিলেন। তৃণমূলের ‘প্ল্যাটফর্ম’ ব্যবহার করে মতুয়াদের জন্য তাঁকে কাজ করার আহ্বান জানান খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর দাবি, ঠাকুরনগর এবং ঠাকুরবাড়িকে ঘিরে মতুয়া সমাজকে কলুষিত করার চেষ্টা করছে তৃণমূল ও বিজেপি। বামফ্রন্ট সরকারের আমলে মতুয়া সমাজকে রাজনীতির শিকার হতে হয়নি। আজ বাড়ি ও মতুয়া সমাজ ভেঙেছে। সেই সুযোগে সিএএ চাপানোর চেষ্টা হচ্ছে। মতুয়ারা ভোট দেন। সংবিধানে বলা হয়েছে, সব নাগরিকের ভোটাধিকার রয়েছে। সুতরাং মতুয়ারা নাগরিক।
তবে এ দিন শান্তনুর গলায় দলের প্রতি ভরসার সুরই শোনা গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘নাগরিকত্ব বিল আইন হয়েছে। তা প্রয়োগ করতে কিছুটা সময় লাগবেই। সেই বিষয়টি জানাতে অমিত শাহ আসছেন।’’ কিছু দিন ধরে দলের বিরুদ্ধে তাঁকে ‘সুর চড়াতে’ হয়েছিল বলে মেনে নিয়ে শান্তনু বলেন, ‘‘সিএএ কার্যকর হতে দেরি হওয়ায় মতুয়াদের চাপ আমার উপরে ছিল। তাঁদের বোঝাতে হয়েছে। সে সময়ে সুর হয় তো চড়াতে হয়েছে।’’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের ঘোষণায় কি তা হলে বরফ গলল? খোলসা করেননি শান্তনু। বুধবার বাগদায় বিজেপির কর্মসূচিতে কি যাচ্ছেন? শান্তনু বলেন, ‘‘আগে থেকেই অন্য কর্মসূচি রয়েছে। তাই যেতে পারছি না।’’