শাহজাহানের কন্যা শাবানা ইয়াসমিন এবং শাহজাহান শেখ। — নিজস্ব চিত্র।
সিবিআই হেফাজত শেষ হল না সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের। রবিবার তাঁর হেফাজতের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করে বসিরহাটের মহকুমা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল সিবিআই। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করে আরও চার দিন বাড়িয়ে দেয় শাহজাহানের সিবিআই হেফাজত। এই নির্দেশ শোনার পরেই আদালত চত্বরে ক্ষোভ ঝরে পড়ল শাহজাহানের মেয়ের গলায়।
রবিবার শাহজাহানকে নিয়েই বসিরহাট মহকুমা আদালতে হাজির হয়েছিল সিবিআই। উপস্থিত ছিলেন তাঁর আইনজীবী এবং কন্যা শাবানা ইয়াসমিনও। আদালতের নির্দেশের পর উপস্থিত সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা ঘিরে ধরেন শাবানাকে। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, বাবার সিবিআই হেফজত নিয়ে কী বলবেন? আপনার বাবাকে কি ফাঁসানো হয়েছে? জবাবে শাবানা বলেন, ‘‘বাবাকে অবশ্যই ফাঁসানো হয়েছে। আমার বাবা নির্দোষ।’’ এর পরে তাঁকে প্রশ্ন করা হয় কারা ফাঁসিয়েছে। জবাবে নিরুত্তর ছিলেন শাবানা। তাঁকে আবার প্রশ্ন করা হয় দল ফাঁসিয়েছে বলে আপনি মনে করেন। শাবানা এই প্রশ্নের জবাব না দিয়ে সামনে তাকিয়ে সোজা হেঁটে বেরিয়ে যেতে থাকেন। প্রশ্ন আসে, বিজেপির উপর কোনও রাগ আছে কি? এ প্রশ্নের সরাসরি জবাব দেন না শাহজাহান-তনয়া। তবে আর নিরুত্তর থাকেননি। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘সত্যিটা খুব শিগগিরই বেরিয়ে আসবে। তদন্ত হলেই সব জানা যাবে।’’ রবিবার সিবিআই আদালতকে জানিয়েছিল শাহজাহানের বিরুদ্ধে আরও নতুন নতুন তথ্যপ্রমাণ তাদের হাতে আসবে। তাই এখনই যেন শাহজাহানকে সিবিআইয়ের হেফাজত মুক্ত না করা হয়। এই মর্মে আরও চার দিন সন্দেশখালির তৃণমূল নেতাকে হেফাজত চেয়েছিল সিবিআই। বসিরহাট মহকুমা আদালতে শাহজাহানের আইনজীবী রাজা ভৌমিক জানান, আদালত সিবিআইয়ের আর্জি মেনেই আগামী চার দিনের জন্য তাঁকে সিবিআই হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। তবে শাহজাহানের তরফে এর পাল্টা কোনও জামিনের আবেদন করা হয়নি।
রেশন দুর্নীতি মামলায় শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন ইডির কর্তারা। লাঠি, পাথর, ইট হাতে গ্রামবাসীরা তাঁদের উপর চড়াও হন। ইডি এই ঘটনায় শাহজাহানকেই দায়ী করে বলেছিল, তাঁর নির্দেশেই ইডির উপর হামলা হয়েছে। ইডি এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের খুনের চেষ্টার অভিযোগও করেছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই এফআইআর দায়ের করে শাহজাহানের বিরুদ্ধে তদন্তে নামে সিবিআই।
এই ঘটনায় শাহজাহানকে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি তার মোবাইলের সন্ধান করছে সিবিআই। যদিও রাজ্যের বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, ওই মোবাইল আগেই রাজ্যপুলিশের হস্তগত হয়েছে এবং তারা ওই মোবাইল সম্ভবত নষ্ট করে ফেলেছে।