সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখ। —ফাইল চিত্র।
সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখকে আবার তলব করল ইডি। রেশন ‘দুর্নীতি’ মামলায় তাঁকে এই নিয়ে তৃতীয় বার তলব করা হল। এর আগের দু’বারই হাজিরা এড়িয়েছেন শাহজাহান। হাজিরা দেওয়া দূরের কথা, শাহজাহানকে খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না। এক মাসের বেশি সময় ধরে তিনি ‘নিখোঁজ’।
ইডি সূত্রে খবর, আগামী সোমবার শাহজাহানকে সল্টলেকে ইডির দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। এর আগে দ্বিতীয় তলবের দিন শাহজাহানের চিঠি নিয়ে তাঁর আইনজীবী ইডি দফতরে গিয়েছিলেন। তবে সেই চিঠি ফিরিয়ে দেওয়া হয়। সূত্রের খবর, শাহজাহান কেন্দ্রীয় সংস্থার কাছ থেকে কিছুটা সময় চেয়েছিলেন। তাঁর আইনজীবীর দাবি, চিঠি পড়েও জমা নেয়নি ইডির দফতর।
এই শাহজাহানের গ্রেফতারির দাবিতেই সন্দেশখালিতে বিক্ষোভ চলছে। তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন গ্রামবাসীরা। গত তিন দিন ধরে সন্দেশখালির পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ। শাহজাহানের গ্রেফতারির দাবি তুলে থানাও ঘেরাও করা হয়। বিক্ষোভের নেতৃত্বে বাঁশ, লাঠি, কাটারি, দা হাতে রয়েছেন মহিলারা। এই পরিস্থিতিতে আবার শাহজাহানকে ডেকে পাঠানো হল।
সন্দেশখালিতে শাহজাহানের ‘ডান হাত’ বলে পরিচিত উত্তম সর্দারকে শনিবার দল থেকে সাসপেন্ড করেছে তৃণমূল। তাঁর বিরুদ্ধেও সরব হয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। রেড রোডের ধর্নামঞ্চ থেকে পার্থ ভৌমিক জানান, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে উত্তমকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ছ’বছরের জন্য তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। পার্থ জানান, মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে শাহজাহান ঘনিষ্ঠ উত্তমের বিরুদ্ধে। সেই কারণেই তাঁকে সাসপেন্ড করা হল। উল্লেখ্য, শাহজাহানের বিরুদ্ধে এখনও কোনও পদক্ষেপ করেনি তৃণমূল।
গত ৫ জানুয়ারি রেশন ‘দুর্নীতি’ মামলায় শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়েছিল ইডি। সে দিন শাহজাহানের অনুগামীদের হাতে ইডি আধিকারিকেরা মার খেয়েছিলেন। অভিযোগ, শাহজাহান সে দিন বাড়ির ভিতরেই ছিলেন। সেখান থেকেই ফোন করে বাইরে অনুগামীদের তিনি জড়ো করেন। সে দিনের পর থেকে শাহজাহানের খোঁজ নেই। ইডি সন্দেহ প্রকাশ করেছিল, তিনি বাংলাদেশে পালিয়েছেন। সন্দেশখালির বিক্ষুব্ধ জনতার দাবি, এলাকাতেই আছেন শাহজাহান। পুলিশ তাঁকে নিরাপত্তা দিচ্ছে।
ইডির হাজিরা এড়ালেও শাহজাহান আগাম জামিনের আবেদন জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। সেই মামলার শুনানি চলছে।