সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখ। —ফাইল চিত্র।
প্রথম বার বাড়ির দেওয়ালে নোটিস আটকে দিয়ে এসেছিলেন ইডি আধিকারিকেরা। তিনি আসেননি। দ্বিতীয়বার শাহজাহান শেখের ইমেল আইডিতে পাঠানো হয়েছিল সমন। যাতে তিনি যেখানেই থাকুন, ইডির সমন হাতে পৌঁছতে কোনও অসুবিধা না হয়। তার পরও তিনি এলেন না।
সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহানকে বুধবার ডেকে পাঠানো হয়েছিল সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে। কিন্তু সকাল গড়িয়ে দুপুর নামলেও তাঁর দেখা মিলল না। এল না ইমেলের ফিরতি জবাবও। আদালতে এর আগে আইনজীবী মারফত নিজের সই করা আবেদনের চিঠি পাঠিয়েছিলেন শাহজাহান। কিন্তু ইডির কাছে ‘নিখোঁজ’ হয়েই রয়ে গেলেন সন্দেশখালির নেতা। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ইডির সমন এড়ালেন তিনি।
রেশন ‘দুর্নীতি’র হদিস পেতে শাহজাহানকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। কিন্তু সন্দেশখালির তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করা তো দূর, তাঁর দেখাই পাচ্ছেন না ইডির গোয়েন্দারা। এর আগে নিজেকে শাহজাহান বলে দাবি করে কথা বলা একটি ভয়েস রেকর্ডিং (আনন্দবাজার অনলাইন সেই রেকর্ডিয়ের সত্যতা যাচাই করেনি) প্রকাশ্যে এসেছিল। আদালতে সে প্রসঙ্গ তুলে ক্ষুব্ধ ইডি শাহজাহানকে জঙ্গি নেতা ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে তুলনা করে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবীরা বলেছিলেন, লাদেনের মতো ভয়েস রেকর্ডিং পাঠাচ্ছেন শাহজাহান অথচ রাজ্য পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে পারছে না।
এর পরেই আগাম জামিন চেয়ে আইনজীবী মারফৎ নিজের সই করা চিঠি আদালতে পাঠান শাহজাহান। ইডি আবার প্রশ্ন তোলে, কী ভাবে আইনজীবীর কাছে শাহজাহানের হস্তাক্ষর পৌঁছল? কেনই বা পুলিশ তার খোঁজ পাচ্ছে না! সেই জবাবও মেলেনি এখনও।
সম্প্রতি শাহজাহানকে দ্বিতীয় বার সমন পাঠিয়েছিল ইডি। ইমেলে পাঠানো সেই সমনে জানানো হয়েছিল, রেশন দুর্নীতি মামলায় তদন্তের প্রয়োজনে শাহজাহানকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় ইডি। তিনি যেন বুধবার, ৭ ফেব্রুয়ারি সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে এসে দেখা করেন। কিন্তু দেখা গেল, সশরীরে হাজির হওয়া তো দূরের কথা, ইডির চিঠির জবাবও দেননি শাহজাহান।
তবে অনেকেই বলছেন, জেনে বুঝেই নীরব থেকেছেন শাহজাহান। ইমেলে জবাব ইডির সমনের জবাব দিলে তার সূত্র ধরে শাহজাহানের হদিশ পেয়ে যেতেও পারত। তা ছাড়া তিনি যেখানে ইডির ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকার জন্য আগাম জামিনের আবেদন করছেন, সেখানে ইডির ডাকে সাড়া দিয়ে শাহজাহান সশরীরে সিজিওতে আসবেন, এমনটা সম্ভবত ইডিও আশা করছে না।