প্রতিবাদ: কলেজে কলেজে ভর্তির সময়ে কাটমানির টাকা তুলেছে টিএমসিপি— এই অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার কলেজ স্ট্রিট এলাকায় বিক্ষোভ এসএফআইয়ের। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার পরেই কাটমানি নিয়ে রাজ্য উত্তাল। তার ঢেউ এ বার লাগল শিক্ষাঙ্গনেও। কাটমানির টাকা ফেরতের দাবি উঠল খাস কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এ ক্ষেত্রে মূলত তৃণমূল ছাত্র পরিষদ বা টিএমসিপি-র দিকেই অভিযোগের তির এসএফআইয়ের। তাদের অভিযোগ, সাম্প্রতিক কালে যাঁরা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজগুলিতে পড়তে এসেছেন, তাঁদের ভর্তির সময় কাটমানির টাকা তুলেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। এই নিয়ে মঙ্গলবার এসএফআইয়ের বিক্ষোভ-অবস্থানে কলেজ স্ট্রিট এলাকা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। তীব্র যানজট হয় ওই এলাকায়।
এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ মিছিল করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঢুকে পড়ে এসএফআই। স্লোগানের সঙ্গে সঙ্গে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে কাটামনির টাকা ফেরতের দাবিতে বিভিন্ন পোস্টারও সেঁটে দেয়। স্মারকলিপি দেয় সহ-উপাচার্য আশিস চট্টোপাধ্যায়কে। পরে কলেজ স্ট্রিট ঘুরে এসে ফের বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের রাস্তায় ধর্নায় বসে। মুখ্যমন্ত্রীর কুশপুতুল পোড়ানো হয়। ‘‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, গত আট বছর ধরে কলেজে ছাত্র ভর্তির নামে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ যে-কাটমানি তুলেছে, তা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করতে বলুন। নইলে আমরা আরও বৃহত্তর আন্দোলনে নামব,’’ বলেন এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক সমন্বয় রাহা।
কলেজে ভর্তির নামে ছাত্রনেতাদের বিরুদ্ধে টাকা তোলার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এ ভাবে টাকা তোলা বন্ধ করতেই অনলাইনে ভর্তির ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এই ব্যবস্থায় ভর্তির জন্য ছাত্রছাত্রীদের সশরীরে কলেজে যেতে হচ্ছে না। ফলে টাকা তোলার অভিযোগও উঠছে না বলে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের দাবি। তবে এসএফআই নেতাদের অভিযোগ, অনলাইনেও স্বচ্ছতা নেই। তৃণমূলের ছাত্রনেতারা বিভিন্ন কলেজের আশেপাশে অনলাইনে ভর্তির হেল্প ডেস্ক খুলে টাকা তুলছেন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘এসএফআইয়ের এই অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা। এখন অনলাইনে ভর্তি নেওয়া হচ্ছে। এই পদ্ধতি অত্যন্ত স্বচ্ছ। বরং কাটমানি তোলে এসএফআই। তারা চাঁদা তোলার নামে কৌটো নাড়িয়ে যে-কাটমানি তোলে, সেটা বন্ধ করুক।’’
অন্য দিকে, কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচনের দাবি নিয়ে এ দিন দুপুরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অভিযান করে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)। তারা শ্যামবাজার মেট্রো স্টেশনের এক নম্বর গেট থেকে মিছিল করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে যায়। কলেজ স্ট্রিট মোড়ে তাদের মিছিল আটকে দেয় পুলিশ। তার পরে ওই সংগঠনের পাঁচ প্রতিনিধি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে সহ-উপাচার্য আশিসবাবুকে স্মারকলিপি দেন। এবিভিপি-র কলকাতা মহানগর সম্পাদক মৃন্ময় দাস বলেন, ‘‘ছাত্র সংসদের নির্বাচন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। ডিসেম্বরে ছাত্রভোট না-হলে আমরা রাজ্যে বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।’’