প্রতীকী ছবি।
প্রথমে অভিযোগ ছিল, স্কুলের উদাসীনতায় অনেক বেসরকারি স্কুলের ছাত্রীরা কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ বার কিছু অভিভাবক অভিযোগ করলেন, আবেদন করা সত্ত্বেও তা মঞ্জুর না-হওয়ায় বেসরকারি স্কুলের মেয়েরা কন্যাশ্রীর সুবিধা পাচ্ছেন না।
সরকারি, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত ও সরকার পোষিত স্কুলের সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যের সব বেসরকারি স্কুলের ছাত্রীদেরও কন্যাশ্রীর সুবিধা পাওয়ার কথা। অভিভাবকের আয়ের কোনও ঊর্ধ্বসীমা নেই। ১৮ বছর বয়স হলেই কন্যাশ্রীতে সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের সব মেয়েকে ২৫ হাজার টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা চালু হয়েছে কয়েক বছর আগে। কিন্তু বেসরকারি স্কুলের অভিভাবকদের একাংশের অভিযোগ, আবেদন করা সত্ত্বেও তাঁদের মেয়েরা কন্যাশ্রীর টাকা পাচ্ছেন না।
ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় নামে মেদিনীপুরের ডিএবি পাবলিক স্কুলের এক অভিভাবক বলেন, “বেসরকারি স্কুলের ছাত্রীরাও কন্যাশ্রীর সুবিধা পাবে জেনে প্রয়োজনীয় নথি দিয়ে স্কুলে আবেদন করি। তবু আমার মেয়ে সেটা পেল না। মেয়ে এ বার দ্বাদশ শ্রেণি পাশ করেছে। ও আর এই সুবিধা পাবে না।” ওই স্কুল-কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, কন্যাশ্রীর জন্য সব শর্ত পূরণ করে তাঁরা তাঁদের ছাত্রীদের আবেদন জেলাশাসকের দফতরে জমা দেন বছরখানেক আগে। উত্তর মেলেনি।
কন্যাশ্রীর সুবিধা না-পাওয়ায় কিছু বেসরকারি স্কুলের ছাত্রীরা অন্যান্য সরকারি প্রকল্প থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিভাবকদের অভিযোগ। তাঁরা জানান, কন্যাশ্রী না-পাওয়ায় রাজ্য সরকারের অন্যতম প্রকল্প স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপের সুবিধাও পাচ্ছেন না তাঁদের মেয়েরা। এক অভিভাবক বলেন, “স্কুল জানিয়েছে, বেসরকারি স্কুলের মেয়েরাও বিবেকানন্দ স্কুলারশিপ পেতে পারে যদি তারা কন্যাশ্রীর সুবিধা পায়। কিন্তু আমার মেয়ে কন্যাশ্রী না-হওয়ায় ওই বৃত্তিও পেল না।” অভিভাবকদের একাংশ জানাচ্ছেন, করোনা-কালে অনেকেরই রুজিরোজগারে টান পড়েছে। বেসরকারি স্কুলে পড়াশোনার পরে পরবর্তী পর্যায়ে ভর্তির জন্য পর্যাপ্ত টাকা নেই অনেকের হাতে। কন্যাশ্রীর টাকা পেলে উচ্চশিক্ষায় মেয়েদের ভর্তি হতে সুবিধা হত।
স্কুলের তরফে জেলা প্রশাসনের কাছে কন্যাশ্রীর জন্য আবেদনপত্র পাঠানো সত্ত্বেও অনেক ছাত্রী এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কেন? কন্যাশ্রী প্রকল্পটি দেখে রাজ্যের নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতর। ওই দফতরের এক কর্তা বলেন, “নির্দিষ্ট কোনও স্কুলের ছাত্রীরা কন্যাশ্রী পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ থাকলে আমরা তা খতিয়ে দেখব। সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকদের সঙ্গেও কথা বলব।”