বিজেপির পতাকা হাতে। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
অনুব্রত-হীন বীরভূমে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ফের ভাঙন তৃণমূলে।
সোমবার তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন সিউড়ি ১ ব্লকের একাধিক নেতা-কর্মী এবং শতাধিক পরিবার। বিজেপি-তে যাঁরা দেলেন, তাঁদের অন্যতম কড়িধ্যা পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান উজ্জল সিংহ, সিউড়ি ১ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ রাজীব চট্টোপাধ্যায়, পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সদস্য আদিত্য চট্টরাজ, মল্লিকপুর পঞ্চায়েতের সদস্য জীবন সরকার, কড়িধ্যার যুব তৃণমূল নেতা শুভম সিংহ। সাম্প্রতিক কালে এই মাপের দলবদল দেখেনি জেলায় হয়নি বলেই দাবি করছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, ‘জনবিচ্ছিন্ন’ এই নেতারা টিকিট পাবেন না বুঝতে পেরেই অন্য দলে ভিরছেন। যদিও যোগদানকারীদের দাবি, বর্তমানে জেলায় তৃণমূল দলের মধ্যে কোন শৃঙ্খলা নেই। কাজ করার কোন স্বাধীনতাও নেই। তাই এই দলবদল। এর সঙ্গে নির্বাচনের টিকিটের কোনও সম্পর্ক নেই।
এ দিন বিজেপির জেলা কার্যালয়ে দলের বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা দলের পতাকা তুলে দেন উজ্জ্বল, রাজীবদের হাতে। ধ্রুব সাহার দাবি, “জেলায় তৃণমূলের সংগঠন বলে আর কিছু নেই। ওরা যে চোর, তা সবাই বুঝে গিয়েছে। মানুষের জন্য প্রকৃত রাজনীতি করার উদ্দেশ্যেই এ দিন দু'শোর বেশি পরিবার তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছে।’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘একবার তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ পেলে বাকি পুরো দলটাই হারিয়ে যাবে!” উজ্জ্বল ও রাজীব বলেন, “তৃণমূলে থেকে কাজ করা অসম্ভব হয়ে উঠছিল। চতুর্দিকে দুর্নীতি ও উপরতলার ছড়ি ঘোরানোর মাঝে কাজ করা যায় না।”
যদিও এই দল বদলে নির্বাচনে বা দলের অন্দরে কোনও প্রভাব পড়বে না বলেই মনে করছেন জেলা সভাধিপতি তথা সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী। তিনি বলেন, “অনেকদিন আগেই এই নেতাদের আমরা দল থেকে বের করে দিয়েছি। গত বিধানসভা নির্বাচনেও তাঁদের ভূমিকা নিষ্ক্রিয় ছিল। যাঁরা মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান, সেই সব নেতা আমাদের চাই না।’’ বিকাশের দাবি, রাজীব পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ থাকাকালীন তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতিরও অভিযোগ উঠেছিল। দলের টিকিট মিলবে না বুঝেই অন্য দলে যোগ দিয়েছেন।
এর প্রতিক্রিয়ায় রাজীব ও উজ্জ্বলের বক্তব্য, “টিকিট পাওয়ার জন্য আমরা বিজেপি-তে আসিনি। দল আমাদের যে দায়িত্ব দেবে, আমরা তাই পালন করব। ইতিমধ্যেই আমরা দলের হয়ে প্রচার শুরু করে দিয়েছি।”