Pension

Pension: কর্মীর অভাবে পেনশনে দেরি, প্রাপক নাকাল

কেন্দ্রীয় সরকারের পেনশন আগে মাসের ২৬-২৭ তারিখে ব্যাঙ্কে ঢুকে যেত। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে তা মাসের ৩০ তারিখে বা পরের মাসের প্রথম দিনে ব্যাঙ্কে আসছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২১ ০৫:৫৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

দীর্ঘস্থায়ী অতিমারি পর্বে কর্মীদের হাজিরা নিয়ন্ত্রণের ফলে ব্যাঙ্ক পরিষেবা পেতে নাকাল হতে হয়েছে গ্রাহকদের। এখনও সেই কর্মীর অভাব চলতে থাকায় নভেম্বরের পেনশন আটকে গিয়েছে অনেক প্রবীণের। সাধারণ ভাবে মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে পেনশন ঢুকে যাওয়ার কথা। কিন্তু এ বার অনেকের ক্ষেত্রে বৃহস্পতিবারেও অর্থাৎ ডিসেম্বরের ২ তারিখেও তা আসেনি। কর্মীর অভাবে এই কাণ্ড ঘটেছে বলে ব্যাঙ্ককর্মী ইউনিয়নের নেতাদের অভিযোগ।

Advertisement

কেন্দ্রীয় সরকারের পেনশন আগে মাসের ২৬-২৭ তারিখে ব্যাঙ্কে ঢুকে যেত। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে তা মাসের ৩০ তারিখে বা পরের মাসের প্রথম দিনে ব্যাঙ্কে আসছে। অনেকেরই অভিযোগ, পেনশন হিসেবে কেন্দ্র বিশাল অঙ্কের টাকা দেয় এবং তা চার দিন পরে আসার অর্থ, ওই চার দিনের সুদ ঢুকছে কেন্দ্রের ঘরেই।

অসংখ্য মানুষ এই পেনশনের উপরে পুরোপুরি নির্ভরশীল। মাসের শেষ দিনে পেনশন ঢোকার পরে সেই টাকায় প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনতে হয় তাঁদের। কিন্তু ডিসেম্বরের গোড়ায়, এ দিন পর্যন্ত পেনশন না-ঢোকায় আতান্তরে পড়েছেন পেনশনভোগী প্রবীণদের একটি বড় অংশ।

Advertisement

ব্যাঙ্কের তরফে যুক্তি, নভেম্বরে কেন্দ্রীয় সরকারের পেনশনভোগীদের ‘লাইফ সার্টিফিকেট’ জমা দিতে হয়। পেনশনভোগী যে জীবিত, তার প্রমাণ হিসেবেই এই শংসাপত্র জমা দেওয়ার কথা। তা জমা দেওয়ার সময়সীমা প্রায় এক মাস বাড়িয়ে এখন ৩১ ডিসেম্বর করেছে কেন্দ্র।

গত বছরেও এই নিয়মই বহাল ছিল এবং তখন নভেম্বরে ওই শংসাপত্র জমা পড়ার পরে নভেম্বরের পেনশন ঠিক সময়েই ঢুকেছিল ব্যাঙ্কে। এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্তার দাবি, নভেম্বরের প্রথম অর্ধে মানে ১৫ তরিখের আগে যাঁরা লাইফ সার্টিফিকেট জমা দিয়েছিলেন, তাঁদের সময়মতো পেনশন পেতে সমস্যা হয়নি। যাঁরা ১৫ নভেম্বরের পরে ওই শংসাপত্র জমা দিয়েছেন, সমস্যা হয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রেই। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা আশা করছি, ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে সবাই পেনশন পেয়ে যাবেন।’’

প্রতিরক্ষা দফতরের পেনশন পান পাপড়ি দাস। তিনি বলেন, ‘‘সাধারণ ভাবে মাসের ২৬ তারিখে আমার পেনশন ঢুকে যায়। কিন্তু এ বারেই দেখলাম, পরের মাসের ১ তারিখে ঢুকেছে। এত দেরি কখনওই হয় না।’’

অভিযোগের আঙুল উঠেছে মূলত পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের (পিএনবি) বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ব্যাঙ্ক সংযুক্তির ফলেই পেনশন পেতে হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে বহু গ্রাহককে। শুধু কেন্দ্র নয়, যাঁরা রাজ্য সরকারের পেনশন ভোগ করেন, তাঁদেরও অনেকে এখনও নভেম্বরের পেনশন পাননি। অভিযোগ, সময়মতো পেনশনের নথি প্রক্রিয়াকরণ না-হওয়ায় এই বিপত্তি।

২০২০ সালের ১ এপ্রিল থেকে পিএনবি-র সঙ্গে ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (ইউবিআই) এবং ওরিয়েন্টাল ব্যাঙ্ক কমার্সকে (ওবিসি) মিশিয়ে দেওয়া হয়। বেঙ্গল প্রভিন্সিয়াল ব্যাঙ্ক কর্মচারী সমিতির সভাপতি সৌমিত্র তলাপাত্র বলেন, ‘‘দুই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক পিএনবি-র সঙ্গে মিশে গেলেও ওই তিন ব্যাঙ্কের তথ্যপ্রযুক্তিগত সংযুক্তি এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। রয়েছে কর্মীর অভাবও। এই সব কারণেই পেনশন সংক্রান্ত নথির প্রক্রিয়াকরণ যথাসময়ে শেষ হয়নি। ফলে হেনস্থা হতে হচ্ছে বহু গ্রাহককে।’’ ব্যাঙ্ক শিবির সূত্রের খবর, ঠিক সময়ে পেনশনের টাকা অ্যাকাউন্টে জমা না-পড়ায় ওই আয়ের উপরে ভিত্তি করে যাঁরা অন্যদের চেক দিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকের চেকও ‘বাউন্স’ বা বাতিল হয়ে যাচ্ছে।

ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ় ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস বসু চৌধুরী বলেন, ‘‘ইউবিআই, ওবিসি-র মাধ্যমে যাঁরা পেনশন পেতেন, তাঁরা এই প্রথম পিএনবি-র কাছে লাইফ সার্টিফিকেট জমা দিয়েছেন। কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তিত সমস্যার কারণে অনেকের ক্ষেত্রেই তা আপলোড করা সম্ভব হয়নি।’’

পিএনবি-র চিফ জেনারেল ম্যানেজার নবীন দাস অবশ্য বলেন, ‘‘আমরা কোনও অভিযোগ পাইনি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement