প্রতীকী ছবি।
এনআইআরএফ-এর মূল্যায়নে প্রথম একশোয় জায়গা পেয়েছে রাজ্যের সাতটি কলেজ। সেই তালিকায় অবশ্যই জেলার কোনও কলেজের নাম নেই। তবে প্রতিযোগিতায় ছিল জেলার কলেজও। এই প্রথমবার তাতে যোগ দিয়েছিল সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজ ও মল্লারপুরের টুরকু হাঁসদা লপসা হেমরম মহাবিদ্যালয়। তবে প্রথম দুশোর মধ্যেই নাম নেই দুই কলেজের। তার জন্য হতাশা নয়, বরং সেটাকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন দুটি কলেজের অধ্যক্ষ।
বিদ্যাসাগর কলেজের অধ্যক্ষ তপনকুমার পরিচ্ছা এবং মল্লারপুর কলেজের অধ্যক্ষ অমিত চক্রবর্তীরা জানাচ্ছেন, সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতায় না যোগ না দিলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নতিতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, কোন কোন দিকে বাড়তি নজর দিতেই এমন ভাবনা। তাঁদের কথায়, ‘‘সর্বভারতীয় স্তরে আমাদের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবস্থান ঠিক কোথায় সেটা বুঝতেই এনআইআরএফ অংশ নেওয়া। র্যাঙ্কিং নিয়ে ভাবিনি।’’
দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সূত্রে খবর, ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল (নাক)-এর ভিজিট যে সব কলেজে হয়েছে সেখানে পরিকাঠামো গত মানোন্নয়ন হয়ে থাকে। এনআইআরএফ আবেদনের ক্ষেত্রে নাকের মূল্যায়ন হওয়া বাঞ্ছনীয়। ৭৫ পার করা সিউড়ি বিদ্যাসাগর হোক বা মাত্র এক যুগের মল্লারপুর কলেজ দুটি সেই মানদণ্ড পেরিয়ে এসেছে। এর পর এনআইআরএফ এ আবেদন করতে যে যে বিষয়গুলি দেখা হয় সেগুলির মধ্যে রয়েছে গত তিন বছর ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়ার সংখ্যা। পড়ুয়া-শিক্ষকের অনুপাত। পরীক্ষার ফল। ছাত্রীর সংখ্যা। পিছিয়ে পড়া ছাত্র ও ছাত্রীর সংখ্যা। তাঁদের কত জনকে পোস্ট গ্রাজুয়েট বা তার থেকে উচ্চতর শিক্ষায় বা গবেষণায় নিয়ে যাওয়া গিয়েছে। প্লেসমেন্ট কেমন। পিএইচডি শিক্ষকেরা কোন কোন বিষয়ে গবেষণা করেছেন। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষক ও পড়ুয়াদের জন্য কলেজে কী কী সুবিধা রয়েছে এমন নানা তথ্য। যথাযথ তথ্য নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হয়। যাতে কারও কোনও আপত্তি থাকলে সেটা সামনে আসে। এরপরে মূল্যায়ন করার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের ওই বিভাগের।
কলেজ মূলত কোথায় পিছিয়ে?
দুটি কলেজের অধ্যক্ষের অভিজ্ঞতা বলছেন, ‘‘মফস্সলের কলেজগুলিতে পড়ুয়াদের ড্রপ আউটের সংখ্যা (বিশেষ করে পাস কোর্সে ভর্তি হওয়া পড়ুয়াদের) যথেষ্টই বেশি। সমস্যা রয়েছে পড়ুয়াদের প্লেসমেন্ট ও কলেজ থেকে বেরিয়ে গিয়ে উচ্চতর শিক্ষায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়েও। সেই জন্যই বাকিদের থেকে পিছিয়ে যেতে হয়েছে। আগামী দিনে সেই সব বিষয়ে নজর দেওয়া হবে।’’ দুটি কলেজের শিক্ষকদের আশা, আগামী দিনে নিশ্চয়ই তাঁদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভাল জায়গা পাবে। শুধু কলেজ শিক্ষক বা বর্তমান পড়ুয়ারা থেকে প্রতিষ্ঠিত প্রাক্তনীদের মিলিত চেষ্টা প্রয়োজন।