প্রতীকী ছবি।
কোভিড-১৯-এ সচেতনতা প্রসারে তাঁদের ভূমিকা রয়েছে। এমনকি করোনা মোকাবিলার নানা অস্ত্র হাতশুদ্ধি, বর্মবস্ত্র, অ্যাপ্রন, মুখাবরণ তৈরিও করেছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে ডেঙ্গি মোকাবিলাতেও তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। এ বার সেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের আরও শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করাতে চায় রাজ্য সরকার। তেমনই চর্চা, জল্পনা চলছে প্রশাসনের অন্দরে। তাতে আরও জলবাতাস দিয়েছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের তথ্য সংগ্রহ, ফোনালাপ। যা চলছে প্রশাসনের শীর্ষস্তর থেকে।
১৬ অক্টোবর পরে থেকে সরকারি নানা দফতর ছুটি শুরু হয়। আজ, সোমবার পুজোর ছুটি শেষে দফতর খুলবে। তার মাঝেও কিছু দফতরে নিয়মিত ভাবে এসেছেন কর্মী-আধিকারিকরা। এই পুজোর ছুটির মধ্যে দ্রুততার সঙ্গেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করেছেন প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী-আধিকারিকরা। যোগাযোগ করেছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে। সেক্ষেত্রে প্রশাসনের শীর্ষস্তরের নির্দেশ মতোই ওইসব ফোন পাচ্ছেন ওই সদস্যরা।
স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা কী কী কাজ করেন, কোথায় অসুবিধা হচ্ছে, আর কী কী করলে তাঁদের সুবিধা হবে বা কী কী কাজ করতে পারেন তাঁরা অথবা কী কী করতে চান-এইসব বিষয় ফোনালাপের মূল উপজীব্য বলে খবর। স্বাভাবিকভাবে এইসব বিষয়ে দীর্ঘদিন কাজকর্ম করা কর্মী-আধিকারিকরাই দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। আর এই ফোন তৎপরতার পরে প্রশাসনিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের হয়তো আরও বৃহৎ ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে পারে রাজ্য সরকার। আবার অনেকের মতে, আর্থিকভাবে কোনও সুবিধার মাধ্যমে ওইসব মানুষজনকে আরও শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করানো যায় কী না, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা রয়েছে। চলতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার প্রশাসনিক বৈঠক করার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি নানা সামগ্রী প্রদর্শনীর সুযোগ করোনা আবহে অনেকটাই কম। ফলে আর্থিকভাবে সমস্যা আরও বাড়বে রাজ্যের কয়েক লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যের। সেই অবস্থায় তাঁদের জীবনযাপনে কিছুটা সহায়তা করতে ইতিমধ্যে নানা পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার। ওই সব গোষ্ঠীর তৈরি সামগ্রী বিকোনোর জন্য মলগুলিতে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করেছে তারা। একই সঙ্গে, অনলাইনের মাধ্যমে যাতে আমজনতার কাছে পৌঁছতে পারে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি সামগ্রী, তার জন্য পদক্ষেপও করেছে রাজ্য। পাশাপাশি, স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে অনলাইনমুখী করতে পদক্ষেপ করছে কেন্দ্র সরকারও।
কয়েক মাস পরেই এ রাজ্যে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। ইতিমধ্যে বঙ্গে রাজনীতির পারদ সূচক ঊর্ধ্বমুখী। এই পরিস্থিতির মধ্যে স্বনির্ভর গোষ্ঠী নিয়ে প্রশাসনিক ব্যস্ততায় ‘ভোট-রাজনীতি’ খুঁজছেন অনেক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক। তাঁদের মতে, ভোটে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ভূমিকা নিতে পারেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা। সে কারণে তাঁদের জন্য রাজ্য সরকারের বিশেষ ভাবনা থাকা অস্বাভাবিক নয়। যদিও এর সঙ্গে অন্য কোনও অর্থ খুঁজতে নারাজ প্রশাসনিক কর্মী-আধিকারিকরা। তাঁদের মতে, বিভিন্ন সময়েই বিভিন্ন ক্ষেত্রের নানা তথ্য সংগ্রহ করা হয়। কথা বলা হয় গ্রাহকদের সঙ্গে। এটাও তেমনই।