প্রতীকী ছবি।
রাজনৈতিক মত আলাদা হলেও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের তৈরি পণ্য আমজনতার কাছে পৌঁছে দিতে কেন্দ্র আর রাজ্য সরকার একই পথ ধরছে। অনলাইন। সাইবার-সরণি। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর পণ্য বেচতে অনলাইনে সামগ্রী সরবরাহকারী দুই আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেছে কেন্দ্র। রাজ্য সরকারও অনলাইনে সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার পদ্ধতি হাতেকলমে বোঝাতে প্রশিক্ষণ শুরু করেছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর পণ্য বেচতে স্থায়ী বিপণির পরিকল্পনাও করছে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। তার ঠিকানা হতে পারে সল্টলেকের সেক্টর-১।
ন্যাশনাল আর্বান লাইভলিহুড মিশনের (এনইউএলএম) অধীনে অনলাইনে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর পণ্য বিক্রির কেন্দ্রীয় চুক্তি অনুসারে রাজ্যে দু’টি জ়োন বা অঞ্চল তৈরি হয়েছে। উত্তর দমদম আর মেদিনীপুর। দুই জ়োনের লাগোয়া জেলাগুলি নিয়েই সিটি লাইভলিহুড সেন্টার দু’টির কাজ চলবে। সেখানকার জিএসটি বা প্যান রেজিস্ট্রেশনের কাজ শেষ। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ৫০ জন বাছাই সদস্য নিয়ে প্রশিক্ষণের কাজ পুজোর পরেই শুরু করবে অনলাইনে পণ্য সরবরাহকারী দুই আন্তর্জাতিক সংস্থা।
রাজ্যের সব পুরসভা থেকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর বাছাই করা হাজার দেড়েক সদস্য নিয়ে ‘ই-রিটেলিং’-এর প্রশিক্ষণ শুরু করেছে রাজ্যের নগর উন্নয়ন সংস্থা (সুডা)। পণ্যের ছবি কী ভাবে তুলতে হয়, পোর্টালে কী ভাবে তা আপলোড করতে হয়, ই-পেমেন্ট কী— এই সব বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা। তার পরে অনলাইনে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর পণ্য বিক্রির জন্য বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে পরিকল্পনা করবে পুর দফতর। রাজ্যের পুর এলাকায় ৬৮,০০০ স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। ওই পণ্য বিক্রির জন্য পরিকল্পিত স্থায়ী কেন্দ্রে সামগ্রী প্রদর্শনীর পাশাপাশি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও থাকবে।
রাজ্যের পুর দফতর সূত্রের খবর, করোনা পর্বে অনলাইনের উপরে মানুষের নির্ভরতা বেড়েছে। চাহিদা আছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর পণ্যের। মানুষ যাতে সহজে তা পেতে পারেন, সেই জন্যই ভরসা অনলাইন। করোনার জন্য এ বছর সে-ভাবে মেলা হচ্ছে না। কিন্তু পণ্য না-বেচলেই নয়। কারণ, এই পণ্য বেচেই রুটিরুজির সংস্থান হয় অনেক পরিবারের।
বর্মবস্ত্র, মুখাবরণ, হাতশুদ্ধি তৈরি করে নজর কেড়েছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যেরা। কসবার কাছে একটি মলে ছ’টি কিয়স্কে চার জেলার ৬০টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর বিভিন্ন পণ্যের প্রদর্শনী চলছে। বিক্রিবাটার ছবিটাও আশাব্যঞ্জক। প্রদর্শনী চলছে রাজ্যের ৫০টি পুর এলাকার মলেও। আরও ৩০টি পুর এলাকা এই তালিকায় আসছে। চন্দননগর পুর এলাকায় ১০টি সুসজ্জিত ভ্রাম্যমাণ ভ্যানে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর পণ্য বিক্রি হচ্ছে। এই ব্যবস্থা বাকিদের পথ দেখাবে বলে পুর দফতরের আধিকারিকদের আশা।