মিড ডে মিলের সামগ্রী কেনার দায়িত্বে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি। প্রতীকী চিত্র।
এ বার থেকে মিড ডে মিলের খাদ্যসামগ্রী কিনতে পারবেন না শিক্ষক, শিক্ষিকা এবং অশিক্ষক কর্মচারীরাও। সম্প্রতি নবান্নে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর নেতৃত্বে ‘স্টেট প্রোগ্রাম মনিটরিং কমিটি’র বৈঠক হয়। সেখানেই এই সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে মিড মিল নিয়ে নানা অভিযোগ উঠেছে। বেশকিছু ক্ষেত্রে তো আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগও উঠেছিল। যা নিয়ে রাজ্য সরকারকে প্রবল অস্বস্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে। সেই কারণেই এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন।
এ বার থেকে মিড ডে মিলের খাদ্যসামগ্রী কেনার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে। চাল, ডাল, আলু, রান্নার তেল, মশলা প্রভৃতি কেনার দায়িত্বে থাকবে এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি। তবে মিড ডে মিল সংক্রান্ত গোটা বিষয়টির উপর নজদারি চালাবে সংশ্লিষ্ট স্কুলের পরিচালন সমিতি। এই মর্মে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে জেলাশাসকদের কাছে। তাঁদের মারফত সেই নির্দেশ নিচুতলায় কার্যকর করতে বলা হয়েছে। প্রশাসনিক কর্তাদের কথায়, মিড ডে মিলের খাদ্য সামগ্রী কেনার ক্ষেত্রে বিস্তর অনিয়মের দৃষ্টান্ত সামনে এসেছে। হিসাবনিকাশে গোলমালের অভিযোগ রয়েছে। সেই বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনতেই তাদের হাত থেকে দায়িত্ব সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সঙ্গে তাঁদের আরও দাবি, মিড ডে মিলের কাজের ফলে শিক্ষক-শিক্ষিকারা পঠনপাঠনের কাজে পুরো সময় দিতে পারছিলেন না। সেই কাজ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে হলে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সময় বাঁচবে। ফলে তাঁরা স্কুলের পঠনপাঠনের দিকে মনোযোগী হতে পারবেন। তেমনই দ্বিতীয়ত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের কাজের পরিধিও বাড়বে।
১ এপ্রিল থেকেই পাইলট প্রকল্প হিসেবে এই পদ্ধতি রাজ্যের প্রতিটি ব্লকের ৪ থেকে ৫টি ব্লকে চালু হবে। পরবর্তীকালে রাজ্য জুড়ে এই নিয়ম চালু করা হবে। রাজ্যে ৮৪ হাজার স্কুলের মাধ্যমে প্রতিদিন ১.২ কোটি পড়ুয়াকে মিড ডে মিল পরিবেশন করা হয়। আবার নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের মাধ্যমে পরিচালিত রাজ্যের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেও এ বার থেকে চাল, ডাল, তেল ও নুন সরবরাহের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে। এই কাজ এতদিন পাইলট প্রকল্প হিসেবে চলছিল। ১ এপ্রিল থেকে প্রতিটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেই সেই নিয়ম মানা হবে।