কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ১৯০ বছর উপলক্ষে এক আলোচনাসভার মঞ্চে (বাঁ দিক থেকে) ফেলিক্স রাজ, ইন্দ্রজিৎ সর্দার, দেবাঞ্জন চক্রবর্তী, অমিত ঘোষ, জহর সরকার এবং তপতী গুহঠাকুরতা। শনিবার, টাউন হলে। ছবি: রণজিৎ নন্দী।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ১৯০ বছর বর্ষপূর্তিতে দাবি উঠল এর দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের, যা চিকিৎসা-শিক্ষায় আবারও অগ্রণী ভূমিকা নেবে। শনিবার টাউন হলে এর বর্ষপূর্তির সূচনা অনুষ্ঠানে একটি আলোচনাসভায় এমনই কথা শোনা গেল সঞ্চালক চিকিৎসক অমিত ঘোষের গলায়। তাঁর সঙ্গে সুর মিলিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত চিকিৎসক, অ-চিকিৎসক— সব স্তরের মানুষই ওই একই দাবি তুললেন। সেই সঙ্গে মেডিক্যাল কলেজের ঐতিহ্য, স্থাপত্য বা গরিমাকে দেশ-বিদেশের সামনে তুলে ধরার কাজের ব্রত নিলেন সেখানকার প্রাক্তনীরা।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রাক্তনীদের এক সূত্রে বেঁধে ফেলতে অমিত জানান, কী ভাবে ছাত্রাবস্থায় বিদেশে গিয়ে মেডিক্যাল কলেজের আদলে তৈরি হাসপাতাল দেখে তিনি স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘মেডিক্যাল কলেজের স্থাপত্য বর্তমান সরকার হেরিটেজ হিসাবে ঘোষণা করেছে। প্রেসিডেন্সি কলেজ, ভিক্টোরিয়া বা হাওড়া সেতু যদি কলকাতার মুখ হয়, তা হলে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ নয় কেন?’’
আলোচনাসভায় অংশ নেওয়া, ব্রিটিশ কাউন্সিলের পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের অধিকর্তা দেবাঞ্জন চক্রবর্তীর উদ্দেশে সঞ্চালক প্রশ্ন করেন, ‘‘একটি প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস বা সুনাম ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়ায় কতটা প্রভাব ফেলতে পারে?’’ উত্তরে দেবাঞ্জন জানান, একটি প্রতিষ্ঠানের গৌরবান্বিত ইতিহাস অবশ্যই প্রভাব ফেলে তার বর্তমানের
ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়ায়। তার সঙ্গে অমিত জুড়ে দেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘিরে পড়ুয়াদের স্মৃতিমেদুরতায় ভোগার গুরুত্বের কথাও। সেই প্রসঙ্গের যথার্থতা উঠে আসে সেন্ট জ়েভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফেলিক্স রাজের বক্তব্যে। ১৯২৭ সালে ওই কলেজের প্রাক্তনীদের তহবিল সংগ্রহের জন্য নিজের ছবিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সই করে দেওয়া থেকে শুরু করে কলেজের ভবন নির্মাণের সময়ে ইটপিছু দশ হাজার টাকা করে অনুদান— সবই করেছিলেন ওই কলেজের প্রাক্তনীরা। যদিও প্রাক্তন আমলা জহর সরকার জানান, স্মৃতিমেদুরতা সবাইকে একজোট করতে পারে ঠিকই, কিন্তু সবাইকে একসঙ্গে নির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে ঝাঁপাতে হবে। তবে, সবার আগে ব্র্যান্ডিং খুব গুরুত্বপূর্ণ।