স্কুলছুট কমাতে চায় শিক্ষা দফতর। — ফাইল চিত্র।
বিদ্যালয়ে স্কুলছুটের সংখ্যা কমাতে নানা ভাবে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য থেকে কেন্দ্রের সরকার। এ বার স্কুলছুট রুখতে স্কুলগুলিকেই উদ্যোগী করতে পদক্ষেপ করল শিক্ষা দফতর। জানুয়ারি মাসের ৩ তারিখে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে স্কুল শিক্ষা দফতর। সেখানে স্কুল উন্নীত করার জন্য যে সব শর্তের কথা বলা হয়েছে, তাতেই রয়েছে এই স্কুলছুটের বিষয়টি। এ ক্ষেত্রে দু’ধরনের স্কুলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
জুনিয়র হাই ও হাই স্কুলকে পরবর্তী ধাপে উন্নীত করা নিয়ে বেশ কিছু শর্ত আরোপ করেছে শিক্ষা দফতর। জুনিয়র হাই স্কুলগুলিকে হাই স্কুলে উন্নীত করার আবেদন জানালে তাদের ৫টি শর্ত পূরণ করতে হবে। প্রতি ক্লাসে ৪০ জন ছাত্রছাত্রী থাকতেই হবে। স্কুলের পরিকাঠামোয় কোনও ফাঁকফোকর থাকা চলবে না, পর্যাপ্ত শিক্ষক থাকা আবশ্যিক, স্কুলের গ্রন্থাগারে কমপক্ষে ৫০০টি বই থাকাও বাধ্যতামূলক। তেমনই স্কুলছুটের হার ৫ শতাংশের বেশি হলে সেই স্কুলকে কোনও ভাবেই উন্নীত করা যাবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই শর্ত নিয়েই মূলত আলোচনা শুরু হয়েছে শিক্ষামহলে।
স্কুলছুট রুখতেই শিক্ষা দফতর এমন পদক্ষেপ করেছে বলেই মনে করছেন শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক। তাঁর কথায়, ‘‘সরকার স্কুলছুট রুখতে মরিয়া। তাই যাতে স্কুলগুলিই এ বিষয়ে সজাগ হয়ে উদ্যোগী হয়, সেই কারণেই এমন শর্ত আরোপ করা হয়েছে।’’ তবে শিক্ষা দফতরের এই শর্তকে সমালোচনার দৃষ্টিতেই দেখছে শিক্ষক সংগঠনের একাংশ। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘স্কুল উন্নীত করার যে সব শর্ত সরকার দিয়েছে, এই সব শর্ত মানতে গেলে খুব কম স্কুলই উন্নীত হওয়ার সুযোগ পাবে। এর ফলে আখেরে ক্ষতি হবে ছাত্রছাত্রীদেরই। বিশেষ করে গ্রামবাংলার ছাত্রছাত্রীদের।’’
মাধ্যমিক স্তরের স্কুলগুলিকে উচ্চ মাধ্যমিকে উন্নীত করার বিষয়ে এমন কোনও শর্ত দেওয়া হয়নি। তবে কোনও স্কুল মাধ্যমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিকের জন্য আবেদন করলে, সেই স্কুলের তিন কিলোমিটারের মধ্যে কোনও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল থাকলে, আবেদন গ্রাহ্য হবে না। স্কুলের মোট ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৫০০, নবম-দশম শ্রেণিতে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১৪০ বা তার বেশি হওয়া বাধ্যতামূলক। স্কুলের পর্যাপ্ত পরিকাঠামোর সঙ্গে ল্যাবরেটরি থাকাও আবশ্যিক। স্কুলের লাইব্রেরিতে ৭৫০টি বই থাকতেই হবে। আবেদনকারী স্কুল থেকে ৩ বছরে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ পরীক্ষার্থীকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করতে হবে। এ ছাড়াও স্কুলের চাহিদা অনুযায়ী ৪০ শতাংশ শিক্ষককে কর্মরত থাকতে হবে।