গ্রেফতার সন্দীপ রায় এবং তাঁর বাবা অনুপ রায় (বাঁ দিকে)। নিজস্ব চিত্র।
কন্যাশ্রী প্রকল্পের ৮ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠল দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের একটি স্কুলের অশিক্ষক কর্মীর বিরুদ্ধে। স্কুল কর্তৃপক্ষের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার ওই কর্মী-সহ তাঁর বাবাকে গ্রেফতার করেছে জয়নগর থানার পুলিশ। শনিবার ধৃতদের বারুইপুর আদালতে তোলা হবে।
পুলিশ সূত্রে খবর, জয়নগরের মজিলপুর শ্যামসুন্দর বালিকা বিদ্যালয়ের ডেটা এন্ট্রি অপারেটর সন্দীপ রায় এবং তাঁর বাবা অনুপ রায়ের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। তদন্তে নেমে ওই দু’জনেরই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ২০১৭ সাল থেকে ওই স্কুলে ডেটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন সন্দীপ। স্কুলের সব তথ্যই তাঁর কাছে থাকত। তবে সন্দেহজনক কাজের অভিযোগে গত বছরের অক্টোবরে তাঁকে কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। গত সপ্তাহে কয়েক জন ছাত্রী স্কুলে এসে অভিযোগ করে যে বছর ঘুরলেও কন্যাশ্রীর টাকার আবেদনে সাড়া পায়নি তারা। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গিয়ে কর্তৃপক্ষের নজরে প়ড়ে যে কন্যাশ্রীর পোর্টালে ছাত্রীদের বদলে নিজের এবং আত্মীয়পরিজনদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর আপলোড করেছেন সন্দীপ। ২১ জুলাই স্কুলের পরিচালন সমিতির বৈঠকে তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশে লিখিত অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সকালে জয়নগর থানায় গিয়ে সন্দীপ রায়ের বিরুদ্ধে কণ্যাশ্রী প্রকল্পের অর্থ তছরুপের অভিযোগ করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা স্বাগতা মণ্ডল।
পুলিশের দাবি, গত তিন বছর ধরে কন্যাশ্রীর টাকা আত্মসাৎ করছেন সন্দীপ। তদন্তে নেমে এ ধরনের ৩২টি ভুয়ো অ্যাকাউন্টের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। বাংলার শিক্ষা ও কন্যাশ্রী পোর্টালে ছাত্রীদের নামঠিকানা আপলোড করলেও সন্দীপ সেখানে ছাত্রীদের অ্যাকাউন্ট নম্বর না দিয়ে নিজের ও পরিচিতের অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়েছিলেন। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে জয়নগর-মজিলপুর পুরসভার প্রশাসক সুজিত সরখেল বলেন, ‘‘এই তছরুপের সঙ্গে আরও কারা জড়িত তা তদন্ত করে বার করুক পুলিশ।’’ তবে স্কুলের পরিচালন সমিতি শাসকদল তৃণমূলের দখলে থাকার পরও কী ভাবে এক জন ডেটা এন্ট্রি অপারেটর ছাত্রীদের টাকা এ ভাবে আত্মসাৎ করতে পারেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বহু অভিভাবক।