school

কন্যাশ্রী-শিক্ষাশ্রীর কাজে রেহাই চান স্কুলপ্রধানেরা

প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ জানান, সম্প্রতি একটি স্কুলে মিড-ডে মিলে কত পড়ুয়ার জন্য রান্না হবে, তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:৫৭
Share:

হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে স্কুলপ্রধানদের। প্রতীকী ছবি।

মূলত পঠনপাঠন এবং স্কুল প্রশাসনের কাজকর্ম নিয়েই তাঁদের মাথা ঘামানোর কথা। কিন্তু মিড-ডে মিল, কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রীর মতো ১৬-১৭টি প্রকল্পের তদারক করতে গিয়ে পড়াশোনার মূল কাজটাই মার খাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। তাই সরকারি প্রকল্পের কাজ থেকে অব্যাহতি দিয়ে পাঠদান ও প্রতিষ্ঠানের কাজে স্কুলপ্রধানদের আরও বেশি দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে এ বার সরব হয়েছে প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’।

Advertisement

ওই সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতির অভিযোগ, “প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এখন স্কুলে প্রায় ১৭ রকম সরকারি প্রকল্পের কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। ফলে তাঁরা পড়ানো এবং স্কুল পরিচালনার কাজ ঠিকমতো করতে পারছেন না। পড়ানোর কাজে স্কুলপ্রধানেরা যাতে আরও বেশি মনোনিবেশ করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করার জন্য বিবিধ প্রকল্পের কাজ থেকে তাঁদের অব্যাহতি দিতে স্কুলশিক্ষা সচিব, কমিশনার, পর্ষদ ও সংসদ সভাপতিকে আর্জি জানিয়েছি।”

সম্প্রতি মিড-ডে মিলের কাজ থেকে অব্যাহতি চেয়ে স্কুলশিক্ষা দফতরের কমিশনার শুভ্র চক্রবর্তীকে স্মারকলিপি দিয়ে প্রধান শিক্ষকদের ওই সংগঠন অভিযোগ করেছিল, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মাথাপিছু চার টাকা সাতানব্বই পয়সা এবং ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির জন্য পড়ুয়া-পিছু সাত টাকা পঁয়তাল্লিশ পয়সায় কোনও ভাবেই মিড-ডে মিল রান্নার কাজ করা যায় না। হয় মিড-ডে মিলের মানোন্নয়নে বরাদ্দ বাড়ানো হোক অথবা ওই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক তাঁদের। অভিযোগ, খাবারের নিম্ন মানের জন্য অনেক সময়ই অভিভাবকেরা সরাসরি প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দায়ী করছেন। অনেক সময় নানা ভাবে হেনস্থারও শিকার হতে হচ্ছে স্কুলপ্রধানদের। প্রশাসনিক স্তরেও মিড-ডে মিল নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলছেন আধিকারিকেরা।

Advertisement

প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ জানান, সম্প্রতি একটি স্কুলে মিড-ডে মিলে কত পড়ুয়ার জন্য রান্না হবে, তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। অভিযোগ, সেখানকার প্রধান শিক্ষক যত সংখ্যক পড়ুয়ার কথা বলেছিলেন, তার থেকে কম সংখ্যক পড়ুয়া ওই পরিষেবা পাচ্ছে। প্রধান শিক্ষক কেন পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়িয়ে বললেন, সেই প্রশ্ন ওঠে প্রশাসনিক স্তরেও।

প্রধান শিক্ষকদের মতে, যত পড়ুয়া স্কুলে দুপুরের খাবার পায়, তার থেকে কিছু বেশি সংখ্যক পড়ুয়ার জন্য রান্না করতে হয়। এক প্রধান শিক্ষক বলেন, “স্কুলে যাঁরা মিড-ডে মিল রান্না করেন, তাঁদেরও তো খেতে দিতে হয়। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী দুপুরের খাবার রান্নার পরে তার গুণমান যাচাই করতে আগে স্কুলেরই কয়েক জন শিক্ষক-শিক্ষিকার তা খেয়ে দেখার কথা। মাঝেমধ্যে একাদশ-দ্বাদশের পড়ুয়াও বাড়ি থেকে খেয়ে আসেনি বলে খেতে চায়।”

চন্দন জানান, ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা নিয়ে অভিভাবকদের অভিযোগ, ভর্তির সমস্যা, ঠিকমতো ক্লাস হচ্ছে কি না দেখা— এই ধরনের অজস্র কাজ আছে প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। সেই সঙ্গে তাঁদের বিভিন্ন ক্লাসও নেওয়ার কথা। নানান প্রকল্পে নজর দিতে গিয়ে তাঁরা এ-সব কাজে মনোনিবেশ করতে পারছেন না। স্কুল পরিচালনার ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement