ফাইল চিত্র
লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলের সঙ্গে রাজ্যে ‘সখ্যের বার্তা’য় তাদের প্রবল অস্বস্তি। তাই আগামী ১৯ জানুয়ারি তৃণমূলের ব্রিগে়ড সমাবেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে সনিয়া বা রাহুল গাঁধী যাতে না আসেন, সেই আর্জি নিয়ে দিল্লিতে দরবার করতে যাচ্ছে বাংলার কংগ্রেস।
লোকসভা ভোটে কোনও দলের সঙ্গে সমঝোতার প্রশ্নে সেই রাজ্য কংগ্রেস নেতৃত্বের মতামতকে গুরুত্ব দিচ্ছেন রাহুল। একই ভাবে এআইসিসি-র তরফে বাংলার কংগ্রেসকে জানানো হয়েছিল, তৃণমূলের ব্রিগে়ড আমন্ত্রণ সম্পর্কে প্রদেশ নেতৃত্বের মতামত মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছেন, রাজ্যে বিজেপির বাড়বাড়ন্তের নেপথ্যে তৃণমূলের মেরুকরণের রাজনীতি বহুলাংশে দায়ী। তা ছাড়া, জেলায় জেলায় কংগ্রেসকে ভেঙেছে শাসক দল তৃণমূলই। সেই তৃণমূলের মঞ্চে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের উপস্থিতি লোকসভা ভোটের আগে রাজ্যে কংগ্রেসের লড়াইকে দুর্বল করে দেবে বলে মনে করছেন দলীয় নেতৃত্ব।
বরং, সনিয়া বা রাহুল কেউ এলে মমতা দেখাতে পারবেন, কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁর পাশেই আছেন। তিন রাজ্যে বিজেপিকে হারিয়ে সরকার গড়ার পরে এ রাজ্যেও তাদের ঘিরে যে উৎসাহ বাড়ছে, তার ফায়দা তোলা তখন কঠিন হয়ে যাবে বলে মনে করছে বাংলার কংগ্রেস। সেই বার্তাই কংগ্রেস সভাপতিকে পৌঁছে দিতে চাইছে বিধান ভবন।
আরও পড়ুন: আড়াই বছরেও মিলল না অর্থ কমিশনের বরাদ্দ
বাংলার ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি নেতা গৌরব গগৈ এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের আগামী ২০ ডিসেম্বর দিল্লিতে রাহুলের সঙ্গে দেখা করার কথা। তখনই প্রদেশ কংগ্রেসের মনোভাব কংগ্রেস সভাপতির সামনে ব্যাখ্যা করতে চান সোমেনবাবুরা। ডিএমকে নেতা এম কে স্টালিন রাহুলকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী বলে মন্তব্য করায় তৃণমূলের প্রতিক্রিয়ার কথাও এআইসিসি-কে জানাতে চান তাঁরা। কংগ্রেস সূত্রের খবর, একান্তই সৌজন্যের খাতিরে এআইসিসি যদি মমতার সভায় যাওয়ার কথা বলে, তা হলে তুলনায় কম ওজনদার কোনও প্রতিনিধিকে পাঠানোর আর্জি জানানো হবে। তৃণমূল যে ভাবে রাহুলের অনুষ্ঠানে নাদিমুল হককে পাঠায়, সেই উদাহরণ হাতে রয়েছে তাঁদের।
প্রকাশ্যে এই নিয়ে এখনই বিশেষ মুখ না খুলে সোমেনবাবু শুধু বলছেন, ‘‘বুধবার দিল্লি যাচ্ছি। কংগ্রেস সভাপতির সঙ্গে দেখা করার সময় পেয়েছি ২০ তারিখ। তখনই যা আলোচনা হওয়ার, হবে।’’ রাহুল অবশ্য সোমবারই জয়পুরে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে বাংলার নেতাদের কাছে এ রাজ্যের পরিস্থিতির খোঁজ নিয়েছেন। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান তাঁকে বলেছেন, বাংলার কংগ্রেস ২০২১ সালে ‘পরিবর্তন’ আনার লড়াইয়ে হাইকম্যান্ডের পূর্ণ মদত চায়। রাহুল তাঁদের সর্বশক্তি দিয়ে সংগঠনকে চাঙ্গা করতে বলেছেন। কংগ্রেস কর্মীদের মনোবল বাড়াতে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তীসগঢ়ের নবনির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীকে এনে বাংলায় সভা করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে রাহুলকে। মান্নানের কথায়, ‘‘রাহুলজি’র কোনও আপত্তি নেই। ওঁদের সঙ্গে কথা বলে নিতে বলেছেন।’’