প্রতীকী ছবি।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে অতিমারির তাণ্ডব, দেশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর প্রধান প্রতিবন্ধকতা হয় যোগাযোগের ক্ষেত্রে। ইন্টারনেট থেকে স্যাটেলাইট ফোনের জিপিএস সাময়িকভাবে হলেও হোঁচট খায়। যার ফলে সামগ্রিকভাবে সমস্ত পরিষেবা ব্যাহত হয়। এতদিন এই অবস্থায় যোগাযোগ টিঁকে থাকত হাই ফ্রিকোয়েন্সি (এইচএফ) রেডিয়োর উপর ভর করে। কিন্তু আবহাওয়ার তারতম্যে তাতে অনেক সময় কথা বুঝতে না পারা এবং অবাঞ্ছিত আওয়াজ ব্যাঘাত ঘটাত। এ বার রেডিয়ো এবং স্যাটেলাইটের যুগলবন্দিতে এই সমস্যা সমাধান করলেন হ্যাম রেডিয়ো অপারেটররা।
গত শুক্রবার থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফ্রেজারগঞ্জে উপকূলরক্ষী বাহিনীর দফতরের পাশেই পরীক্ষামূলকভাবে অ্যান্টেনা বসিয়ে কাতার অস্কার ১০০ সিস্টেমে ইএসএইচএআইএল-২ নামে দক্ষিণ আফিকার উপরে অবস্থিত একটি সম্প্রচারমূলক স্যাটেলাইটের সঙ্গে সংযোগস্থাপন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে বিশ্বের ৩৬টি দেশের সঙ্গে নিরবিচ্ছিন্নভাবে কথা বলা গিয়েছে বলে জানান ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিয়ো ক্লাবের সেক্রেটারি অম্বরীশ নাগ বিশ্বাস। দেশের পূর্বাঞ্চলে এটিই প্রথম পরীক্ষামূলক সাফল্য বলেও তাঁর দাবি। কিন্তু এইচএফ রেডিয়োর সঙ্গে স্যাটেলাইটের সংযোগের বিষয়টি মোটেও সহজ নয়। এইচএফ রেডিয়ো তরঙ্গ প্রবাহিত হয় মেগাহার্জে। আর স্যাটেলাইট গিগাহার্জে তথ্য নেয় এবং দেয়। সেক্ষেত্রে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছিল ২৮ মেগাহার্জে সম্প্রচারিত এইচএফ-এর তরঙ্গ বার্তাকে আপলিঙ্ক কনভার্টার দিয়ে ২.৪ গিগাহার্জে কাতার অস্কার ১০০-এর কাছে পৌঁছনো।
একই ভাবে ডাউনলিঙ্ক কনভার্টার ব্যবহার করে ১০ কিলোহার্জ তরঙ্গকে মেগাহার্জে নিয়ে বিশ্বের নানা প্রান্তে শুনতে বা কথা বলতে পারা। এই পরীক্ষামূলক শিবিরে যোগ দেন উপকূলরক্ষী বাহিনীর ওয়্যারলেস কমিউনিকেশনের ভারপ্রাপ্তরাও। কমান্ড্যান্ট অভিজিৎ দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘এ বার যে কোনও প্রতিকূলতায় যোগাযোগ হারানোর আশঙ্কাটা কমল।’’ দেশের প্রতিরক্ষা থেকে যে কোনও বিপর্যয়ে এই স্যাটেলাইট সংযোগ কার্যকরী হবে বলে জানিয়েছেন হ্যাম রেডিয়োর সদস্যরা।