—ফাইল চিত্র।
সারদা তদন্তে সিবিআইয়ের নজর এ বার নবান্নের দিকে। প্রয়োজনে নবান্নের তিন শীর্ষ কর্তাকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ডাকতে পারে বলে সূত্রের খবর। সিবিআই সূত্রের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রাজ্যকে বার বার বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছিল। সেই সব নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে কী পদক্ষেপ করা হয়েছিল, রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের ডেকে সে সবই জানতে চাওয়া হবে।
সিবিআইয়ের দাবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, সেবি, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এবং সর্বোপরি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের দফতর বার বার চিঠি লিখে রাজ্য সরকারকে ব্যবস্থা নিতে বলেছিল। তার পরেও রমরমিয়ে আরও প্রায় তিন বছর বাজার থেকে কোটি কোটি টাকা তুলেছিল অর্থলগ্নি সংস্থাগুলি। তার পরেও কেন সরকার কোনও ব্যবস্থা নেয়নি, সরকারি আধিকারিকেরা ফাইলে কী লিখেছিলেন তা দেখতে চান সিবিআইয়ের কর্তারা। সেই কারণেই নবান্নের তিন কর্তাকে ডেকে কিছু ‘ব্যাখ্যা’ চায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
সিবিআইয়ের খবর, তাদের কাছে জমা পড়া অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চেয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর দফতর। সেই রিপোর্ট দিতে তিন বছর লেগে গিয়েছিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রাজ্য পুলিশকে সতর্ক করে অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানাতে বলেছিল। পুলিশ প্রধান সিআইডি-কে দিয়ে সে ব্যাপারে তদন্ত করান। তদন্তের পর বলা হয়, রাজ্যের হাতে এমন কোনও বিশেষ আইন নেই, ফলে রাজ্য ব্যবস্থা নিতে অপারগ। একইভাবে সেবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং অর্থ মন্ত্রকের অধীন আর্থিক পরিষেবা বিভাগ এবং এসএফআইও বেশ কয়েকটি চিঠি পাঠিয়ে রাজ্যের শীর্ষ আমলাদের কাছে রিপোর্ট চেয়েছিলেন। সিবিআইয়ের অভিযোগ, কোনও ক্ষেত্রেই অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে তৎপরতা দেখায়নি রাজ্য।
২০১৮ সালে নবান্নে বার বার চিঠি দিয়ে সিবিআই জানতে চেয়েছিল, বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থার সতর্কবার্তার পরিপ্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। সেই সংক্রান্ত ফাইলও চেয়ে পাঠিয়েছিল তারা। অভিযোগ, প্রথম দিকে সেই সব চিঠির কোনও জবাবই দিতে চাননি নবান্নের শীর্ষ আমলারা। সিবিআই সূত্রের দাবি, রাজীব কুমারের বাড়িতে হানার পর সর্বোচ্চ আদালতে অবমাননার মামলা দায়ের হল একে একে জবাব আসতে থাকে। সেই জবাবের সূত্রেই নবান্নের কর্তাদের ডাকা হবে বলে জানান এক সিবিআই আধিকারিক।