নিয়োগ মামলায় অভিযুক্ত সন্তু গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলা থেকে জামিন চেয়ে এ বার আদালতের দ্বারস্থ হলেন অন্যতম অভিযুক্ত সন্তু গঙ্গোপাধ্যায়। বুধবার কলকাতার বিচারভবনে জামিনের আবেদন জানান তিনি। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসাবে পরিচিত এই সন্তুকে গত বছর নভেম্বরে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। তাঁর বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রার্থীদের কাছ থেকে প্রায় ছ’কোটি টাকা তোলার অভিযোগ ছিল।
বুধবার সন্তুর আইনজীবী আদালতে জানান, নিয়োগ দুর্নীতিতে যে ১০ জনের বিরুদ্ধে সিবিআই অভিযোগ এনেছিল, তাঁদের মধ্যে আট জনই জামিন পেয়ে গিয়েছেন। সন্তুর বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের মূল অভিযোগ ছিল, তিনি এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষ এবং অয়ন শীলের সঙ্গে টাকার লেনদেন করেছেন। তাঁদের কাছ থেকে টাকা পেয়েছেন বা তাঁদের টাকা দিয়েছেন। সেই কুন্তল এবং অয়নেরও সিবিআইয়ের মামলা জামিন হয়ে গিয়েছে। সন্তুকে ১০ বার তলব করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে। সমগ্র তদন্ত প্রক্রিয়ায় প্রথম থেকেই সন্তু সিবিআইয়ের সঙ্গে সহযোগিতা করেছেন, আদালতে জানান তাঁর আইনজীবী।
সন্তুর জামিনের বিরোধিতা করেছে সিবিআই। তারা আদালতে জানায়, চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রার্থীদের কাছ থেকে ছ’কোটি টাকা তুলেছেন এই সন্তু। এজেন্টদের মাধ্যমে টাকা তোলার কাজ করেছেন তিনি। পাশাপাশি, এক সাক্ষীকে ফোন করে ভয় দেখানোর অভিযোগও উঠেছে সন্তুর বিরুদ্ধে। সিবিআইয়ের বক্তব্য, জামিন দেওয়ার আগে নিয়োগ দুর্নীতিতে সন্তুর ভূমিকা বিবেচনা করা উচিত।
শুধু সিবিআই নয়, নিয়োগ মামলায় ইডির চার্জশিটেও সন্তুর নাম ছিল। তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিটে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনেছিল ইডি। পার্থের বিধানসভা এলাকা বেহালার বাসিন্দা সন্তু। একসময়ে তৃণমূলের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে অয়ন শীলকে ইডির জেরার সময়েই প্রথম উঠে এসেছিল সন্তুর নাম। পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’ সন্তুর সঙ্গে তাঁর যোগাযোগের কথা অয়ন স্বীকার করেছিলেন। জানিয়েছিলেন, ২০১২ এবং ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়োগের জন্য ৪৫ কোটি টাকা তাঁকে দিয়েছিলেন বিভিন্ন জেলার এজেন্টরা। এর মধ্যে ২৬ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা তিনি তুলে দেন বেহালার সন্তুর হাতে। জেরায় ইডিকে একই কথা জানান শান্তনুও। সেই কুন্তল, শান্তনুরা জামিন পেয়ে গিয়েছেন। অয়নকেও জামিন দেওয়া হয়েছে। তবে অন্য মামলার কারণে তিনি এখনও জেলে।