প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে রাখা হয়েছে আরজি কর মামলায় দোষী সঞ্জয় রায়কে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
দোষী সাব্যস্ত হয়ে গিয়েছেন। এ বার শাস্তি ঘোষণার পালা। সোমবারই শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস জানিয়ে দেবেন, কী শাস্তি দেওয়া হবে আরজি কর মামলায় দোষী সঞ্জয় রায়কে। তবে তার এক দিন আগে সঞ্জয়ের মধ্যে কোনও তাপ-উত্তাপ চোখে পড়ল না। প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে অন্যান্য দিনের মতোই দিব্যি খাবার খেলেন তিনি। ঘুরে বেড়ালেন নিজের মতো। এমনকি, ক্যারমও খেললেন।
প্রেসিডেন্সি জেল সূত্রে খবর, শনিবার আরজি কর মামলার রায় শুনে কিছুটা হতাশ হয়েছিলেন সঞ্জয়। সে দিন রাতে কিছু খাননি তিনি। তবে রবিবার সকাল থেকে তাঁর আচরণে তেমন পরিবর্তন চোখে পড়েনি। জেলে ‘স্বাভাবিক’ থেকেছেন সঞ্জয়। ক্যারমও খেলেছেন অন্যদের সঙ্গে।
সঞ্জয়কে আদালত দোষী সাব্যস্ত করার পর থেকে একটাই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে। কী শাস্তি দেওয়া হবে তাঁকে? শনিবারই আদালত জানিয়ে দিয়েছিল, তাঁর অপরাধ প্রমাণিত। এতে সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত তাঁকে দেওয়া হতে পারে। জেলে কি নিজের জন্য প্রার্থনা করলেন সঞ্জয়? সংশোধনাগার সূত্রে খবর, তেমন কিছু কারও চোখে পড়েনি। অর্থাৎ, প্রকাশ্যে প্রার্থনা করতে দেখা যায়নি সঞ্জয়কে।
সোমবার বেলার দিকে সঞ্জয়কে শিয়ালদহ আদালতে নিয়ে যাওয়া হবে। বেলা ১২টার পর বসবে বিচারক দাসের এজলাস। সঞ্জয়, তাঁর আইনজীবীর কথা শুনবেন বলে আগেই জানিয়েছিলেন বিচারক। শোনা হবে নির্যাতিতার পরিবারের বক্তব্যও। তার পর দুপুরে শাস্তি ঘোষণা করা হবে।
শনিবার আদালতে সঞ্জয় দাবি করেছিলেন, তিনি নির্দোষ। তাঁকে ‘ফাঁসানো’ হচ্ছে। গলায় রুদ্রাক্ষের মালার কথা উল্লেখ করে বলেছিলেন, ‘‘রুদ্রাক্ষের মালা পরে এই অপরাধ করব? আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমি কিছু করিনি। করলে রুদ্রাক্ষের মালা ছিঁড়ে যেত।’’ রায় ঘোষণার পরেও ‘স্যর’ ‘স্যর’ বলে চিৎকার করতে থাকেন সঞ্জয়। হাত জোড় করে বিচারকের কাছে অনুরোধ করেন। তাঁকে একপ্রকার জোর করে এজলাসের বাইরে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ।
আরজি কর মামলায় সঞ্জয়কেই একমাত্র অভিযুক্ত হিসাবে চার্জশিটে উল্লেখ করেছিল তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত একাধিক নমুনার সঙ্গে সঞ্জয়ের নমুনা মিলে গিয়েছে। সাক্ষীদের বয়ান এবং তদন্তে প্রাপ্ত নথি, তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তাঁকে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৮, ৬৬ এবং ১০৩(১) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে বলে জানান বিচারক।
(ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির ঘটনায় যত ক্ষণ না অভিযুক্তকে ‘দোষী’ সাব্যস্ত করা হচ্ছে, তত ক্ষণ তাঁর নাম, পরিচয় প্রকাশে আইনি বাধা থাকে। আনন্দবাজার অনলাইন সেই নিয়ম মেনেই আরজি কর পর্বের প্রথম দিন থেকে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের নাম বা ছবি প্রকাশ করেনি। শনিবার আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করায় আমরা তাঁর নাম এবং ছবি প্রকাশ করা শুরু করছি।)