সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। — নিজস্ব চিত্র
ভোটকর্মীদের নিরাপত্তার স্বার্থে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাই। এই দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা ঘোষণা করল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। রবিবার মঞ্চের তরফ থেকে এ কথা জানিয়েছেন সংগঠনের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ। ১৫ জুন বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত ভোটে নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের পক্ষে রায় দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। স্পর্শকাতর বলে কমিশনের চিহ্নিত সব ক’টি এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী নামানোর নির্দেশ দেয় আদালত। হাই কোর্টের অভিমত, ভয়মুক্ত পরিবেশের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নেওয়া উচিত কমিশনের।
কিন্তু কলকাতা হাই কোর্টের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সঙ্গে রাজ্য সরকারও কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবে। তাই রবিবার বিবৃতি দিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার পাশাপাশি, তারা কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে একটি স্মারকলিপি মেল করেছে নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহকে। কিন্তু সেই দাবি যে পূরণ হবে না তা ভালই বোঝে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। তাই সোমবার সকালেই এই সংক্রান্ত বিষয়ে মামলা দায়ের করার যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে তাঁরা।
আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি, রবিবার দিনভর জেলায় জেলায় নিজেদের প্রতিবাদ কর্মসূচিও সংগঠিত করেছেন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের নেতারা। সঙ্গে ভোটের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিতে কোথাও বিক্ষোভ কর্মসূচি, কোথাও আবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে ভোটকর্মীদের স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাঁরা। মুর্শিদাবাদ, কোচবিহার, পশ্চিম মেদিনীপুর, রঘুনাথগঞ্জ, হুগলিতে ভোটকর্মীদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিতে বিক্ষোভ হয়। হুগলি জেলার গোঘাটের কামারপুকুরে স্বাক্ষর সংগ্রহ করে ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোতায়েনের দাবি করেন।
সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের নেতাদের দাবি, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের অভিজ্ঞতা তাদের রয়েছে। সেই ভোটে উত্তর দিনাজপুরে ভোটকর্মী রাজকুমার রায়ের মৃত্যু হয়েছিল। সেই বছর ১৪ মে পঞ্চায়েত ভোট হয়েছিল, ওই দিনের সন্ত্রাস এখনও ভোটকর্মীরা ভোলেননি। চলতি পঞ্চায়েত ভোটে এখনও পর্যন্ত ৬ জন নিরীহ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এমন পরিস্থিতি দেখে সরকারি কর্মচারীরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। তা ছাড়া কলকাতা হাই কোর্টও ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী আনার নির্দেশ দিয়েছে, তা সত্ত্বেও কমিশন হাই কোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে। তাই তারা সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে সরব হবে।