—প্রতীকী ছবি।
প্রেমে কী না হয়!
বাবার মতো ছেলেও ছিলেন সিপিএম কর্মী। বিজেপি নেতার মেয়েকে ভালবেসে বিয়ে করে তাঁর রংবদল। এখন তিনি গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী। তাঁর বিরুদ্ধে ভোট-যুদ্ধে সিপিএম প্রার্থী হয়েছেন তাঁরই বাবা।
বাঁকুড়ার রানিবাঁধ পঞ্চায়েত সমিতির ৬ নম্বর আসনে তৃণমূলের প্রার্থী থাকলেও সিপিএম প্রার্থী কালীপদ মাহাতো ও তাঁর ছেলে বিজেপি প্রার্থী মহীতোষ মাহাতোর লড়াই এখন আকর্ষণের কেন্দ্রে চলে এসেছে। দু’জনেই জানাচ্ছেন, বিনা লড়াইয়ে সূচ্যগ্র মেদিনী ছাড়তে তাঁরা নারাজ।
রাজাকাটা পঞ্চায়েতের সিন্দুরপুর গ্রামের বছর ৫৪-র কালীপদ দীর্ঘদিন ধরেই সিপিএম কর্মী বলে পরিচিত। পেশায় ইটভাটার ম্যানেজার কালীপদ একসময় দলের হয়ে স্কুল পরিচালন সমিতির ভোটে জিতেছিলেন। তাঁর ছেলে গেঞ্জিকলের কর্মী মহীতোষও সিপিএম করতেন। তাহলে তিনি কী ভাবে বিজেপির প্রার্থী হয়ে গেলেন?
কালীপদ বলেন, ‘‘কয়েক বছর আগে ছেলে পাশের গ্রামের বিজেপি নেতার মেয়েকে ভালবেসে বিয়ে করেছে। ছেলে নিজের রাজনৈতিক চিন্তাধারায় বিজেপি মনোভাবাপন্ন হয়ে ওই দলের প্রার্থী হয়েছে। সেখানে আমার হস্তক্ষেপ করার কিছু নেই। তবে রানিবাঁধে সিপিএমের ভিত্তি পোক্ত। আমিই জিতব।’’ বছর ত্রিশের মহীতোষের দাবি, ‘‘তৃণমূলকে হারাতে পারে একমাত্র বিজেপিই। তাই বিজেপি করছি। বাবার বিরুদ্ধে নামলেও প্রচারে আলগা দেব না।’’
রাজনৈতিক আদর্শ আলাদা হলেও বাড়িতে বাবা-ছেলের সম্পর্কে অবশ্য ফাটল ধরেনি। একসঙ্গেই তাঁদের ওঠবোস। তবে স্বামী না ছেলে, কাকে ভোট দেবেন, তা ভাঙেননি কালীপদর স্ত্রী গীতা। নাতি না ছেলে কাকে ভোট দেবেন? কালীপদর মা ৭৫ বছরের ঊষা বলেন, ‘‘ভোটের দিন এলেই তা ঠিক করব।’’
নেতাদের তরজা অবশ্য জমে উঠেছে। সিপিএমের রানিবাঁধ এরিয়া কমিটির সম্পাদক মধুসুদন মাহাতো দাবি করেন, ‘‘রানিবাঁধ একসময়ে সিপিএমের শক্ত ঘাঁটি ছিল। মাঝখানে কিছু লোকজন ভুল বুঝে চলে গেলেও সবাই দলে ফিরছেন। তাই ওই আসনে সিপিএমের দীর্ঘদিনের কর্মী কালীপদই বিপুল ভোটে জিতবেন।’’ বিজেপির রানিবাঁধ ১ মণ্ডল সভাপতি তপন মাহাতোরও দাবি, ‘‘আমার জামাই মহীতোষ দীর্ঘদিনের বিজেপি কর্মী। তাঁর জয় নিয়ে আমি নিশ্চিত।’’
রানিবাঁধ ব্লক তৃণমূল সভাপতি চিত্তরঞ্জন মাহাতোর অবশ্য দাবি, ‘‘বিজেপি বা সিপিএমের সংগঠন নেই। ওই আসনে তৃণমূল প্রার্থী শিশির মাহাতোই বিপুল ভোটে জয়ী হবেন।’’