সব্যসাচী দত্ত।—ফাইল চিত্র।
বিধাননগরের মেয়র পদে ইস্তফা দিয়েছেন। তাঁকে ঘিরে দলে বিস্তর জল্পনা-বিতর্ক রয়েছে। এমনকী, তাঁর দল বদলের সম্ভাবনা নিয়েও গুঞ্জন চলছে।
এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের বিধায়ক হিসেবে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে শুক্রবার উপস্থিত হলেন সব্যসাচী দত্ত। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বক্তব্য জানতে চাওয়ায় রাজারহাট-নিউটাউনের জলাশয় বোজানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন তিনি। কোনটা জলা আর কোনটা সাধারণ জমি, তা নিয়ে স্পষ্ট সরকারি তথ্য পাওয়া যায় না। মেয়র পদে ইস্তফা দেওয়ার দিনও সব্যসাচী এই জলাভূমি ভরাটের অভিযোগ তুলেছিলেন। এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালানো তাঁর ইস্তফার অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছিলেন সব্যসাচী।
সব্যসাচী এ দিন বলেন, ‘‘আমার বিধানসভা, রাজারহাট আরও অনেক বিধানসভায় মারাত্মক ভাবে জলাশয় ভরাট চলছে। আমার এলাকায় ২৩টা ভেড়ি, ৪২টা ঝিল আছে। জেলাশাসক, মৎস্য দফতরকে জানিয়েছি। সরকারের এক দফতরের সঙ্গে অন্য দফতরের কোনও সমন্বয় নেই। ’’ তাঁর অভিযোগ শুনে মমতা বলেন, ‘‘জলাশয় যাতে ভরাট না হয়, তা দেখতে হবে।’’ আর জমির চরিত্র সংক্রান্ত রাজ্য সরকারের ‘জমির তথ্য’ অ্যাপে মিলবে বলে ভূমি দফতরের সচিব মনোজ পন্থ জানান। সব্যসাচী পাল্টা জানান, অ্যাপে ওই তথ্য নেই।
মমতা অবশ্য সব্যসাচীকেই দুষে বলেন, ‘‘তুই নিজেও তো মেয়র ছিলি। তোরা যখন থাকিস, দেখিস না!’’
সব্যসাচী মেয়র পদে ইস্তফা দেওয়ার পরে এখনও বিধাননগর পুরসভার পরবর্তী মেয়র কে হবেন, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। এ দিন বিধাননগর পুরসভার তরফে প্রশাসনিক বৈঠকে এতদিনের ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন। মমতা তাঁরও বক্তব্য জানতে চাওয়ায় তাপস নিজ ভূমি নিজ গৃহ প্রকল্পের কাজে গতি আনার অনুরোধ করেন। দমদম বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকার খাসজমিতে কিছু লোক রয়েছে বলেও তাপস জানান। ওই বিষয়ে সরকারের কিছু করণীয় নেই জানিয়ে মমতা বলেন, ‘‘কিছু করা যাবে না। ওটা কেন্দ্রীয় সরকারের জমি। এর পরে তো নতুন বোর্ড হবে। দেখে নিও।’’
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে ডাক পেয়ে ‘কৃতজ্ঞতা’ ব্যক্ত করেছেন সব্যসাচী। পরে তিনি বলেন, ‘‘জনপ্রতিনিধি হিসেবে বৈঠকে গিয়েছিলাম। আমার বিধানসভার সকলের তরফে কথাগুলো জানিয়েছি। আমাকে বলার সুযোগ দেওয়ায় আমি কৃতজ্ঞ। আশা করি, প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।’’