আউশগ্রামের বাউল মেলায় রাশিয়ার শিল্পীরা। নিজস্ব চিত্র।
দেশে এখন গানবাজনা কার্যত বন্ধ। সীমান্তে গোলাগুলির আওয়াজ। ভিন্ দেশে গান গাইতে এসেও সেখানে মন পড়ে রয়েছে রাশিয়ার চার শিল্পীর। পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের ‘বাউল-ফকিরি মেলা’য় আমন্ত্রণ পেয়ে আসা ওই শিল্পীরা জানালেন, ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধ হোক, চান তাঁরাও।
কলকাতার একটি সংস্থার উদ্যোগে আউশগ্রামের বননবগ্রামে আয়োজিত তিন দিনের ওই মেলায় যোগ দিতে এসেছেন সেন্ট পিটার্সবার্গের গানের ব্যান্ড ‘ওটাভা ইয়ো’-র ওই চার সদস্য। নিজেদের দেশের লোকগানের পাশাপাশি, বাংলার বাউল শিল্পীদের সঙ্গেও গান পরিবেশন করেন তাঁরা। রবিবার যোগ দেন প্রভাতি অনুষ্ঠানে। ওই দলের নেতা, বছর পঁয়তাল্লিশের অ্যালেক্সি বেলকিন জানান, এর আগেও দু’বার এ দেশে এসেছেন। ঘুরে গিয়েছেন কলকাতা ও গোয়ায়। এ বার এই অনুষ্ঠানে ডাক পেয়েই পেয়েই ছুটে এসেছেন।
ফেব্রুয়ারি থেকে যুদ্ধ চলছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের। অ্যালেক্সি বলেন, ‘‘আমাদের দেশের নাগরিকদের কাছে এখন কঠিন সময়। আমার বাবা রাশিয়ার, মা ইউক্রেনের। দেশে অনেকেই আছেন যাঁদের বাবা-মা দুই দেশের মানুষ। তাঁদের কাছে আরও বেশি কষ্টের সময়। পরিস্থিতি পরিবর্তনটা আমাদের জন্য জরুরি।’’ তাঁরা জানান, দেশে কয়েক মাস ধরে গানবাজনার চর্চা প্রায় বন্ধ। অন্য নানা দেশে অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন। তবে মন পড়ে থাকছে দেশেই। তাঁদের কথায়, ‘‘বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন তথ্য পাচ্ছি। কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল, সব বুঝতেও পারছি না। আমরা চাই, সবাই ঘরে ফিরে যেন এক সঙ্গে বড়দিনের উৎসবে শামিল হতে পারি।’’
আউশগ্রামের অনুষ্ঠানটির আয়োজকদের তরফে অমিতাভ ভট্টাচার্য জানান, রাশিয়ার ওই শিল্পীদের সঙ্গে অক্টোবরে পর্তুগালে তাঁর দেখা হয়। তখনই তাঁদের এখানে আমন্ত্রণ জানান। তিনি বলেন, ‘‘অনুষ্ঠানে দুই দেশের সংস্কৃতির আদানপ্রদান হয়েছে।’’ অ্যালেক্সিরা বলছেন, ‘‘লোকগান দেশ-কালের ঊর্ধ্বে উঠে মানবতার কথা বলে। এখানকার বাউল শিল্পীদের সঙ্গে সময় কাটিয়ে খুব ভাল অভিজ্ঞতা হল।’’