roopa ganguly

লকেট, অগ্নিমিত্রা পদ্মের কোর কমিটিতে, নাম নেই প্রাক্তন সাংসদ রূপার, কী কারণ? কী বললেন তিনি?

গত এপ্রিল মাসে রাজ্যসভা পদ থেকে অবসর নিয়েছেন রূপা। একই সঙ্গে অবসর নেন স্বপন দাশগুপ্তও। সোমবার জেপি নড্ডা রাজ্য বিজেপির যে ২৪ জনের কোর কমিটি ঘোষণা করেছেন, তাতে স্বপনের নামও রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২২ ২১:৫২
Share:

রূপা গঙ্গোপাধ্যায়।

রাজ্য বিজেপির কোর কমিটিতে নজরকাড়া নাম অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। জায়গা পেয়েছেন লকেট চট্টোপাধ্যায় এবং অগ্নিমিত্রা পালও। কিন্তু ঠাঁই হল না প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের।

Advertisement

গত এপ্রিল মাসে রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে অবসর নিয়েছেন রূপা। একই সঙ্গে অবসর নেন স্বপন দাশগুপ্তও। সোমবার দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি জেপি নড্ডা রাজ্য বিজেপির যে ২৪ জনের কোর কমিটি ঘোষণা করেছেন, তাতে স্বপনের নামও রয়েছে। যা গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে রূপার ‘দূরত্ব’-এর তত্ত্বকে আরও জোরালো করে তুলল বলে মনে করছে দলের একাংশ। যদিও এই বিষয়টি নিয়ে বিন্দুমাত্র বিচলিত নন দলের প্রাক্তন সাংসদ। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি স্পষ্ট জানালেন, তাঁকে যে দায়িত্ব দেওয়া হবে, সেই দায়িত্বই পালন করবেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘কে কোন কমিটিতে থাকবেন, কে থাকবেন না, তা তো আমি ঠিক করব না। তাঁরা যা ঠিক বুঝেছেন, তাই করেছেন। এ নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। আমায় যে দায়িত্ব দেওয়া হবে, সেটা পালন করব।’’

দলীয় সূত্রে খবর, রূপা অনেক দিন ধরেই দলে ততটা ‘সক্রিয়’ নন। দলীয় কর্মসূচিতেও তাঁকে দেখা যায় না বললেই চলে। তিনি দলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য হলেও চলতি বছরের জুলাই মাসে হায়দরাবাদে কর্মসমিতির বৈঠকে তাঁকে যোগ দিতে দেখা যায়নি। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে কোর কমিটিতে তাঁর স্থান না-পাওয়া খুব একটা অস্বাভাবিক ঠেকছে না দলের একাংশের কাছে। তবে অন্য অংশের যুক্তি, গত বিধানসভা নির্বাচনের পর মিঠুনও কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছিলেন। তাঁকেও দলের কোনও কর্মসূচিতে বছরখানেক দেখা যায়নি। হালে মিঠুন ‘সক্রিয়’ হলেও কোর কমিটিতে থাকার পক্ষে যথেষ্ট কি না, তা নিয়ে অনেকের মনে সন্দেহ আছে। তাই, ওই অংশের দাবি, মিঠুন যদি ওই কমিটিতে থাকতে পারেন, তা হলে রূপাকেও জায়গা দেওয়া উচিত ছিল। কারণ, বাংলায় বিজেপির এত বড় কোর কমিটি এর আগে তৈরি হয়নি।

Advertisement

রূপার ঘনিষ্ঠ মহলের বক্তব্য, এক সময় রাজ্য বিজেপির মহিলা মোর্চার সভাপতিও ছিলেন অভিনেত্রী। পরে সেই পদে লকেট এবং অগ্নিমিত্রা এসেছেন। তাঁদের যদি ওই কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয়, তা হলে রূপা কেন নন? দলের একটি অংশ অবশ্য পাল্টা যুক্তি দেখিয়ে বলছে, এই মুহূর্তে রূপার সঙ্গে লকেট এবং অগ্নিমিত্রার তুলনা টানাই উচিত নয়। কারণ, লকেট বর্তমানে হুগলির সাংসদ এবং অগ্নিমিত্রা আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক। একই সঙ্গে তাঁরা রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক পদেও রয়েছেন। সেই সূত্রেই তাঁদের ওই কমিটিতে রাখা হয়েছে।

গত বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজ্য বিজেপিতেও সেই অর্থে বড় কোনও দায়িত্ব পাননি রূপা। উল্টে দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধেই বিভিন্ন মাধ্যমে তাঁকে সরব হতে দেখা গিয়েছে বেশ কয়েক বার। বাবুল সুপ্রিয় এবং পরে অর্জুন সিংহ যখন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে এসেছেন, সেই সময়েও রূপার নাম নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। সম্প্রতি তাঁকে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের সঙ্গেও দেখা গিয়েছিল একটি অনুষ্ঠানে। তখনও রূপার তৃণমূলে যোগ দেওয়া নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়। অবশ্য রূপা এবং কুণাল দু’জনেই ওই সাক্ষাৎ ‘ব্যক্তিগত এবং সৌজন্যমূলক’ বলে দাবি করেছিলেন। কিন্তু জল্পনা থামেনি। রূপাও বরাবরই এই ধরনের জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন। প্রশ্ন করা হলে সটান জবাবে বলেছেন, ‘‘সবাই বিক্রি হয় না!’’ তবে বিজেপি সূত্রের খবর, কোর কমিটি গঠনের সময় এই সমস্ত বিষয় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নজরে আনা হয়ে থাকতে পারে।

প্রসঙ্গত, বিজেপির কোর কমিটিতে প্রথম সারিতেই রয়েছেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কমিটিতে রয়েছেন অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রথম বার বিজেপির এমন কমিটিতে জায়গা পেলেন বিধানসভায় বিজেপির মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা, সাংসদ জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো, জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়, রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী এবং তাঁর সহকারী সতীশ ধন্ড।

২৪ জনের কমিটিতে ২০ জন সাধারণ সদস্য এবং চার জনকে বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য হিসাবে রাখা হয়েছে। তাঁরা হলেন বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুনীল বনসল, কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডে এবং দুই সহকারী পর্যবেক্ষক অমিত মালবীয় এবং আশা লাকরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement