হাসপাতালে অসুস্থ আবদুল মান্নান। —নিজস্ব চিত্র।
বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নানকে সাসপেন্ড করলেন স্পিকার। ধুন্ধুমার বেঁধে গেল বিধানসভায়। মার্শাল দিয়ে মান্নানকে বার করে দেওয়ার চেষ্টা হতেই ঝাঁপিয়ে পড়লেন সব কংগ্রেস ও বাম বিধায়করা। তুমুল ধস্তাধস্তি, মহিলা বিধায়কের সঙ্গে অশালীন আচরণ এবং বিরোধী দলনেতার গলা টিপে ধরার অভিযোগ উঠল। অসুস্থ মান্নানকে স্ট্রেচারে করে বার করতে হয়েছে বিধানসভা থেকে। এই ঘটনাকে ‘ন্যক্কারজনক’ আখ্যা দিয়ে বিধানসভা থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন সব বিরোধী বিধায়করা।
আন্দোলনের নামে সরকারি সম্পত্তি এবং তাণ্ডব করা যাবে না। আগেই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। যাঁরা সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করবেন, প্রয়োজন হলে তাঁদের জমি-বাড়ি বাজেয়াপ্ত করে সরকার ক্ষতিপূরণ আদায় করে নেবে, সেই লক্ষ্যে আইন আনা হচ্ছে। জানিয়েছিলেন তিনি। সেই বিলই আজ, বুধবার বিধানসভায় পেশ হয়। কংগ্রেস এবং বামেরা এই বিলের তীব্র বিরোধিতা করে। বিরোধীদের কণ্ঠরোধের চেষ্টাতেই আন্দোলনকারীদের থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের আইন তৈরি করছে সরকার। বলছেন বিরোধীরা। বিলের বিরোধিতা করে প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে অধিবেশন কক্ষে ঢুকেছিলেন বিরোধী বিধায়করা। স্পিকার বিধায়কদের প্ল্যাকার্ড নামিয়ে রাখতে বলেন। কিন্তু বিরোধীরা রাজি হননি। এই নিয়ে বাগবিতণ্ডা ক্রমশ বাড়তে থাকে।
বিধানসভা থেকে আজ ওয়াকআউট করেছেন কংগ্রেস ও বাম বিধায়করা। যৌথ বিক্ষোভ করেছেন তাঁরা। (প্রতীকী ছবি / সংগৃহীত)
যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই আন্দোলনের নামে বিধানসভা ভাঙচুর করেছিলেন, তাঁরই সরকার কী ভাবে এই আইন আনছে, সেই প্রশ্নই তোলেন বিরোধীরা। বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। এর পর স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী দলনেতাকে বিধানসভা থেকে সারা দিনের জন্য সাসপেন্ড করে দেন। মান্নান স্পিকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান এবং বিধানসভা থেকে না বেরিয়ে তিনি আসন ছেড়ে ওয়েলে বসে পড়েন। এর পর মার্শাল ডেকে মান্নানকে বার করে দিতে বলেন স্পিকার। তাতেই প্রবল উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিধানসভা। বাম ও কংগ্রেস যৌথ ভাবে প্রতিরোধে নামে। মার্শালদের তারা বাধা দেয়। তুমুল ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এই ধস্তাধস্তির মধ্যে আবদুল মান্নানের গলা টিপে ধরা হয় বলে অভিযোগ। বিরোধী দলের এক মহিলা বিধায়কের সঙ্গে অশালীন আচরণ করা হয়েছে বলেও বহরমপুরের কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী এবং রঘুনাথগঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক আখরুজ্জামানের দাবি।
আরও পড়ুন: ছয় বছরে তিন, ফের সরলেন এজি
জুতো খুলে মারার অভিযোগ সত্ত্বেও ঝুমের লঘু শাস্তি কেন? পার্থ ব্যাখ্যা চাইলেন
আবদুল মান্নান অসুস্থ হয়ে পড়ায় স্ট্রেচারে করে তাঁকে সভাকক্ষ থেকে বার করে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁকে হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়েছে। এই ‘আক্রমণে’র প্রতিবাদ জানাতে বাম ও কংগ্রেস বিধায়করা সভাকক্ষ থেকে ওয়াকআউট করেন। বিধানসভা চত্বরে বিক্ষোভ শুরু হয়। বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী-সহ অশোক ভট্টাচার্য, আনিসুর রহমান, তন্ময় ভট্টাচার্যরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। কংগ্রেস ও বাম বিধায়করা জানিয়েছেন, এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ হবে। দু’দল বৈঠকে বসে যৌথ কর্মসূচি শীঘ্রই ঘোষণা করবে বলে জানানো হয়েছে। বাম-কংগ্রেস যৌথ অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছে।