‘বেনোজল’ ঢুকছে, রাজ্য বিজেপিকে সতর্ক করল আরএসএস

আরএসএসের প্রভাবিত পত্রিকার ১৭ জুন সংখ্যার প্রচ্ছদ কাহিনি হল— ‘কতটা বেনোজল আটকাতে পারবে বিজেপি’। আর সেখানে প্রকাশিত সম্পাদকীয় নিবন্ধের বক্তব্য, ‘দিন পরিবর্তনের আভাস পাইতেই আজ যাহারা বিজেপির আশ্রয়ে আসিতে চাহিতেছে, তাহারা সবাই স্বচ্ছ নয়। ইহাদের মধ্যে বেনোজলও আছে। ...

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৯ ০৩:০৩
Share:

রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়।

লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলে ‘বেনোজল’ ঢুকতে শুরু করেছে এবং তা আটকাতে প্রয়োজন ‘ছাঁকনি’। বিজেপিকে এই বলে সতর্ক করল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)। রাজ্য বিজেপিতে ‘আদি-নব’ দ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দিয়েছে বলেই এই সতর্ক-বার্তা, মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

Advertisement

আরএসএসের প্রভাবিত পত্রিকার ১৭ জুন সংখ্যার প্রচ্ছদ কাহিনি হল— ‘কতটা বেনোজল আটকাতে পারবে বিজেপি’। আর সেখানে প্রকাশিত সম্পাদকীয় নিবন্ধের বক্তব্য, ‘দিন পরিবর্তনের আভাস পাইতেই আজ যাহারা বিজেপির আশ্রয়ে আসিতে চাহিতেছে, তাহারা সবাই স্বচ্ছ নয়। ইহাদের মধ্যে বেনোজলও আছে। ... বিজেপির মতো দল, যাহারা নিজেদের পার্টি উইথ আ ডিফারেন্স বলিয়া প্রচার করে, তাহাদের তো এই বিষয়ে যথেষ্ট সতর্ক থাকাই উচিত’।

বিজেপি সূত্রের খবর, দলের ‘আদি’ কর্মীদের অনেকেই লোকসভা ভোটকে কেন্দ্র করে তৃণমূল থেকে আসা নেতাদের একাংশকে ‘বেনোজল’ বলে মনে করেন। লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলাম তৃণমূল ছেড়ে দলে যোগ দেওয়ার পরে ‘আদি’ কর্মীদেরই অসন্তোষ প্রকাশ্যে আসে। যার জেরে বিজেপি নেতৃত্ব মনিরুলকে দলের কোনও কর্মসূচিতে থাকতে নিষেধ করেছেন। যাঁর হাত ধরে মনিরুল বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, সেই মুকুল রায় অবশ্য বলেছেন, ‘‘মনিরুল নিজেই চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, তাঁকে নিয়ে দলে অশান্তি হলে তিনি সরে যাবেন।’’

Advertisement

কিন্তু সমস্যার এখানেই শেষ নয়। বিজেপি সূত্রের আরও খবর, ‘আদি’ নেতাদের অনেকেই মনে করেন, ‘বহিরাগত’ নেতাদের একাংশ দলের আদর্শকে ‘কলঙ্কিত’ করে স্বার্থসিদ্ধি করছে। ইতিমধ্যেই দলের ভিতরে কয়েকটি সংগঠন তৈরিকে ঘিরে সেই বিতর্ক সামনে এসেছে। যেমন— ‘বঙ্গীয় চলচ্চিত্র পরিষদ’। ‘নব্য’ নেতাদের একাংশ শুক্রবার ওই সংগঠনের সূচনা পর্বে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকেও তা বাতিল করেন। বলা হয়, ভাটপাড়া-কাণ্ডের জেরে তা বাতিল হয়েছে। যদিও দলীয় সূত্রের খবর, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশ ফোন করে এ ধরনের সংগঠন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব বলছেন, দল বাড়াতে অন্য দল ভাঙানো-সহ নানা কৌশল নিতে হয়। সে কথা মেনেও সঙ্ঘের বক্তব্য, ওই অস্ত্র ব্যবহারের সময় যথেষ্ট সতর্ক না থাকলে ‘স্বচ্ছ জলের সঙ্গে বেনোজলও প্রবেশ করে’। আর সেখানেই প্রয়োজন একটি ‘ছাঁকনি’র। এই মর্মে আরএসএসের পত্রিকায় সম্পাদকীয় ছাড়াও একটি প্রচ্ছদ নিবন্ধ ছাপা হয়েছে।

সঙ্ঘের এই সতর্ক-বার্তা নিয়ে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই জাতীয়তাবাদী পত্রিকাটির পৃথক মত আছে। তা নিয়ে মন্তব্য করব না। বিজেপি আলাদা দল। আমরা বেনোজলের বিষয়ে সতর্কই। অন্য দল থেকে নিচ্ছি সকলকেই। কিন্তু দলের গঠনতন্ত্রই ছাঁকনির কাজ করছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement