স্বয়ং সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত। ফাইল চিত্র।
বাংলায় শাখার ‘সংখ্যা বৃদ্ধি’ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্বয়ং সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত। কিন্তু তাতেই থেমে থাকতে নারাজ বঙ্গ আরএসএস। এ বার প্রতিটি ওয়ার্ডে, প্রতিটি পঞ্চায়েতে সংগঠনের বিস্তার চায় তারা। সেই প্রস্তুতি ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। সঙ্ঘের বার্ষিক সভায় সেই পরিকল্পনা পেশ করবেন বঙ্গের নেতৃত্ব।
প্রতি বছর মার্চ মাসে সঙ্ঘের বার্ষিক সভা হয়। তিন বছর অন্তর সেই সভার গন্তব্য হয় সঙ্ঘের গর্ভগৃহ নাগপুরে। বাকি বছরগুলিতে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেশের বিভিন্ন রাজ্য এই বৈঠক বসে। সূত্রের খবর, এই বছর ১২-১৪ মার্চ পানিপথে এই সভা হচ্ছে। এই সভা থেকেই রাজ্যওয়াড়ি এবং কেন্দ্রীয় ভাবে আগামী এক বছর সঙ্ঘের কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। সঙ্ঘ সূত্রের দাবি, বাংলা থেকে ৮৬ জন প্রতিনিধি এই সভায় উপস্থিত থাকতে চলেছেন। তার মধ্যে তিনটি প্রান্ত থেকে ৩২ জন প্রতিনিধি এবং ৫৪ জন বিভাগীয় কর্মী বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেন।
প্রতিটি রাজ্যের যে আলোচনা হবে, তা দু’টি পর্যায়ে ভাঙা থাকবে। একটি পর্যায়ে সাংগঠনিক বিষয় অর্থাৎ শাখার অবস্থা নিয়ে রিপোর্ট দেওয়া হবে। অন্য পর্যায়ে সামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে। সূত্রের খবর, বাংলার যে রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে, সেখানে আগামী এক বছরের মধ্যে শহরাঞ্চলে প্রতিটি ওয়ার্ডে এবং গ্রামাঞ্চলে প্রতিটি পঞ্চায়েতে সঙ্ঘের কাজ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য শাখা, মিলন, মণ্ডলী গঠনের প্রস্তুতির কথা তুলে ধরা হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী স্বয়ংসেবকেরা প্রতি সপ্তাহে সেখানে যাবেন এবং সমমনস্ক মানুষকে জড়ো করার কাজ করবেন। তাদের মধ্যে সঙ্ঘের আদর্শ প্রচার করার কাজ চালাবেন তাঁরা।
এ ছাড়া, সারা বছর ‘শিক্ষা বর্গ’ (আলোচনা ও প্রশিক্ষণের শিবির) আয়োজনেরও পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, হাওড়ার তাঁতিবেড়িয়া ও খড়্গপুরের গোপালীতে দক্ষিণ প্রান্তের দু’টি শিক্ষা বর্গ আয়োজিত হবে। একই রকম শিক্ষা বর্গ মধ্য ও উত্তরবঙ্গ প্রান্তেও হবে। সূত্রের খবর, এক একটি বর্গের কাজ ২০ দিন চলবে। সেখানে ২৪ ঘণ্টাই সকলে এক সঙ্গে থাকবেন, খাবেন, বিশ্রাম নেবেন। একই রকম পোশাক পরবেন। বর্গে প্রতি দিন চার ঘণ্টা শরীরচর্চা, এক ঘণ্টা সেবা কর্মসূচির প্রশিক্ষণ ও বাকি সময় বিষয়ভিত্তিক আলোচনা হবে।
সামাজিক পরিস্থিতির ব্যাখ্যায় উঠে আসতে পারে ভাগবতের সাম্প্রতিক বঙ্গ সফরের প্রসঙ্গও। সঙ্ঘ মনে করছে, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে নিয়ে সঙ্ঘের কর্মসূচি এবং সেখানে ভাগবতের উপস্থিতি বিশেষ দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে। ইতিমধ্যে সমাজের বিভিন্ন স্তরে এই নিয়ে আলোচনা চলছে বলে তাদের দাবি।
বঙ্গ অরএসএসের দক্ষিণ প্রান্ত প্রচার প্রমুখ বিপ্লব রায় বলেন, ‘‘আমরা তিন বছরের যোজনা নিয়েছি। পরিকল্পনা সফল ভাবে রূপায়িত হলে সঙ্ঘের কাজ বাড়বে। সমাজে সঙ্ঘের প্রভাব বাড়বে।’’