সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত। ফাইল চিত্র।
লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই বড় পরিসরে মাঠে নামতে চলেছে আরএসএস। সবকিছু ঠিক থাকলে সামনের বছর ২৩ জানুয়ারি ব্রিগেড ময়দানে সভা করতে পারেন সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত। আয়োজকদের দাবি, সেই সমাবেশে ‘কয়েক লক্ষ’ মানুষের জমায়েত হবে। সরকারি ভাবে আরএসএস বিজেপিকে এই কর্মসূচির থেকে দূরে রাখতে চাইছে। সঙ্ঘের পূর্বাঞ্চলীয় সঙ্ঘ চালক অজয় নন্দী বলেন, “সামাজিক কর্মসূচিতে যোগ দিতে উনি আসছেন। ওঁর সামনে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সঙ্ঘের কার্যকর্তারা বিভিন্ন কসরত প্রদর্শন করবেন। উনি তাঁদের সামনে কিছু কথা বলবেন। এই কর্মসূচিতে কোনও রাজনৈতিক নেতার উপস্থিত থাকার কথা নয়। আমরা কাউকে আমন্ত্রণ করছি না।” তবে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কলকাতায় বড় ধরনের সমাবেশ হলে রাজ্যজুড়ে বিজেপি সমর্থকদের উপরে তার প্রভাব পড়তে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। তার ‘সুবিধা’ পেতে পারে বিজেপি।
২২ জানুয়ারি বিকেলে কলকাতায় আসতে পারেন ভাগবত। সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন উপলক্ষে ২৩ জানুয়ারি বঙ্গ আরএসএসের বিশেষ কার্যক্রম উপলক্ষে প্রকাশ্য সভায় বক্তৃতা করার কথা তাঁর। ভাগবতের সফর ঘিরে ইতিমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে সঙ্ঘ। সম্প্রতি প্রয়াগরাজে সঙ্ঘের দীপাবলি বৈঠকে বাংলার রিপোর্টে খুশি নাগপুরে বড় কর্তারা। তার পরেই বাংলায় বড় সমাবেশের পরিকল্পনা করেন তাঁরা। আর সেই কারণেই ২০১৭ সালের পর ফের কলকাতায় বক্তব্য রাখতে শোনা যেতে পারে ভাগবতকে। সঙ্ঘ সূত্রের দাবি, সেই বক্তব্যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, জন্মনিয়ন্ত্রণ বিলের মতো সংবেদনশীল বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা শোনা যেতে পারে ভাগবতের গলায়।
সূত্রের দাবি, ভাগবতের অতিথি এবং সাক্ষাৎ প্রার্থীর তালিকাতেও কোনও বিজেপি নেতার নাম থাকছে না। তবে অনেকেই আছেন যাঁরা সঙ্ঘের পুরনো কার্যকর্তা। তাঁরা যদি সেই পরিচয়ে ব্যক্তিগত ভাবে আসেন এবং ভাগবত যদি সময় দেন, তবে দেখা হতে পারে। তবে বেশ কিছু বিশিষ্টজনের সঙ্গে দেখা করতে পারেন তিনি। এর আগের সফরেও তিনি বিশিষ্টজনের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। প্রত্যেকে তাঁর সঙ্গে দেখা করে সন্তোষ প্রকাশ করলেও শেষ পর্যন্ত কেউই বিজেপি শিবিরে নাম লেখাননি।
এ দিকে ব্রিগেড ময়দানে ভাগবতের সভার জন্য ইতিমধ্যেই সেনাবাহিনীর অনুমতি মিলেছে। যদিও পুলিশের অনুমতি এখনও মেলেনি। যা নিয়ে চিন্তায় আয়োজকেরা। ২০১৭ সালেও শেষ মুহূর্তে আদালতে গিয়ে অনুমতি আদায় করতে হয়েছিল সঙ্ঘকে। এ বার অবশ্য অনুমতি মিলবে না ধরে নিয়েই বিকল্প স্কুলের মাঠ দেখতে শুরু করেছেন আয়োজকেরা। তবে তাঁদের প্রথম পছন্দ ব্রিগেড। অজয় বলেন, “পুলিশ আইন-শৃঙ্খলার দোহাই দিয়ে অনুমতি দেওয়া নিয়ে টালবাহানা করছে। ওরা ১০ দিন আগে সিদ্ধান্ত জানায়। তাই আমরা বিকল্প রাস্তা ভেবে রাখছি।”