স্তব্ধ: জাতীয় সড়ক। ছবি: সুদীপ ঘোষ
হুগলির ফুরফুরার পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী ও তাঁর অনুগামীদের উপরে হামলার অভিযোগ উঠল। সিদ্দিকীর অভিযোগ, হামলাকারীরা তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক। তৃণমূল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সোমবার সকালে ভাঙড়ের বোদরার কাঁচদিয়া গ্রামে ওই ঘটনার পরে দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনা, হুগলি-সহ কিছু জেলার নানা জায়গায় রাস্তা অবরোধ করে প্রতিবাদ শুরু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে ভাঙড়ের ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।
ঘটনার পরে সিদ্দিকী সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে তাঁর সংগঠন ‘আহালে সুন্নাতুল জামাতের কর্মীদের রাস্তা অবরোধ করার ডাক দেন। তার পরেই বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা অবরোধ করা হয়। ভিডিয়ো-বার্তায় সিদ্দিকী বলেন, ‘‘আমি সংগঠনের এক আক্রান্ত সদস্যকে দেখতে যাচ্ছিলাম। তখনই পরিকল্পিত ভাবে তৃণমূলের লোকজন হামলা চালায়। আমাকে মারধর করার পাশাপাশি, গাড়ি ভাঙচুরও করে।’’
অভিযোগ উড়িয়ে ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা বলেন, ‘‘উনি মিথ্যা অভিযোগ করছেন। এলাকায় এসে তিনি উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখেন। আমাদের নেত্রী ও দলের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছিলেন। কর্মীরা এর প্রতিবাদ জানান। খবর পেয়ে আমি নিজে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে তাঁকে সসম্মানে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করি।’’ ঘটনা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি তৃণমূলের জেলা ও রাজ্য নেতত্ব। তবে সূত্রের খবর, হামলার ঘটনার প্রতিবাদে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নানা জায়গায় শাসক দলের শওকত-বিরোধী গোষ্ঠীর লোকজনও শামিল হয়েছিলেন।
বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, ‘‘আব্বাস সিদ্দিকী ওই এলাকায় আসার পরে তাঁকে ঘিরে ক্ষোভ, বিক্ষোভ তৈরি হয়। তিনি আটকে পড়েছিলেন। পুলিশ গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে কিছু লোকজন ঘটকপুকুরে বাসন্তী হাইওয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। আমরা তাঁদের বুঝিয়ে অবরোধ তুলে দিই।’’
ঘটনার প্রতিবাদে হুগলির চণ্ডীতলার কুমিরমোড়ায় রাস্তা অবরোধ করা হয়। পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে অবরোধ তুলতে গেলে ইট ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। ইটের আঘাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) সুরিন্দর সিংহ-সহ মোট ৭ পুলিশকর্মী জখম হন। জখম পুলিশকর্মীদের চণ্ডীতলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) তথাগত বসু। মোট চার জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বিভিন্ন এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো হয় দুপুর থেকে। অশোকনগরে হাবড়া-নৈহাটি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো হয়। যশোর রোডে অবরোধ চলে গুমা, বিড়া, রাউতাড়া এলাকায়। হাবড়ার রাউতাড়াতে অবরোধ তোলা নিয়ে গোলমালের জেরে পুলিশ আক্রান্ত হয়। আমডাঙার রফিপুর ধামকলমোড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। যানবাহন আটকে পড়ে। কর্মস্থল থেকে ফিরতে মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন।