বৃহস্পতিবার পানিহাটিতে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে কথোপকথন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজমুদারের। —নিজস্ব চিত্র।
সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মুখ খুলেছিলেন আগেও। এ বার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে সামনে পেয়ে ফের সেই অভিযোগ তুলে ধরলেন আরজি করের নির্যাতিতার বাবা-মা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার এক জন আধিকারিকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ভাবে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। নির্যাতিতার বাবা-মায়ের সেই অভিযোগ উপযুক্ত স্থানে পৌঁছে যাবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। সিবিআই তদন্ত নিয়ে অভিযোগ জানাতে বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গেও দেখা করার কথা নির্যাতিতার মা-বাবার।
সংসদের বাজেট অধিবেশনে যোগ দিতে বৃহস্পতিবারই দিল্লি যাবেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও উত্তর-পূর্ব উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তবে দিল্লি রওনা হওয়ার আগে তিনি আরজি করের নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটিতে। ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া সঞ্জয় রায়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ঘোষিত হওয়ার পরে এই প্রথম বার রাজ্য বিজেপির সভাপতি দেখা করলেন নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে।
সিবিআইয়ের তদন্তে যে তাঁরা সন্তুষ্ট হতে পারেননি, নির্যাতিতার বাবা-মা সে কথা আগেই জানিয়েছিলেন। রাজ্য এবং সিবিআই হাই কোর্টে গিয়েছে সঞ্জয়ের ফাঁসি চেয়ে। সেই মামলাতে সঞ্জয়ের ফাঁসির আর্জির বিরোধিতাই করেছে নির্যাতিতার পরিবার। তদন্তের স্বার্থে সঞ্জয়ের বেঁচে থাকা জরুরি বলে এখন তাঁদের মত। বৃহস্পতিবার সুকান্তকে সামনে পেয়ে নির্যাতিতার বাবা-মা ফের সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে নিজেদের অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন।
সিবিআইয়ের গোটা তদন্তকারী দলের বিরুদ্ধে অবশ্য অভিযোগ নয়। সুকান্তের কাছে নির্দিষ্ট ভাবে এক জন আধিকারিকের বিরুদ্ধে নির্যাতিতার বাবা-মা বৃহস্পতিবার অভিযোগ করেছেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিজেও অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তবে কোন আধিকারিকের বিরুদ্ধে নির্যাতিতার বাবা-মা অভিযোগ করেছেন, তা যদিও সুকান্ত খোলসা করেননি। নির্যাতিতার বাবা-মায়ের অভিযোগ ঠিক কী? আনন্দবাজার অনলাইনকে সুকান্ত বললেন, ‘‘আদালতের রায়ে যে কথা রয়েছে, ওঁরাও সে কথাই বলেছেন।’’
তদন্তে বেশ কিছু খামতির কথা স্পষ্ট ভাবেই বলা হয়েছে শিয়ালদহ আদালতের রায়ে। তদন্তে এমন কিছু বিষয় খতিয়ে দেখা জরুরি ছিল, যা দেখার সুযোগও ছিল। কিন্তু হয়নি। বিচারক অনির্বাণ দাসের পর্যবেক্ষণ এ রকমই ছিল। নির্যাতিতার পরিবার মনে করছে, এই খামতির জন্য মূলত এক জন আধিকারিকই দায়ী। সুকান্তের কাছে তাঁদের অভিযোগ অন্তত সে রকমই। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কথায়, ‘‘এক জন আধিকারিকের ভূমিকা সম্পর্কে তাঁদের অভিযোগ রয়েছে। আমাকে সে বিষয়ে তাঁরা জানিয়েছেন। আমি বলেছি, অভিযোগ উপযুক্ত স্থানে আমি পৌঁছে দেব।’’
সিবিআইয়ের গতিবিধির নিয়ন্ত্রণ এখন অমিত শাহের মন্ত্রকের হাতে। আরজি করের নির্যাতিতার পরিবার যে অভিযোগ জানিয়েছেন, তা কি সুকান্ত সেই মন্ত্রকেই পৌঁছে দেবেন? না কি সরাসরি সিবিআইয়ের কোনও শীর্ষকর্তার সঙ্গে কথা বলবেন? এ বিষয়ে বিশদে কিছু জানাননি সুকান্ত। তবে দিল্লি যাওয়ার আগে যে ভাবে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে সুকান্ত দেখা করে গেলেন, তাতে পরিবারের অভিযোগ নর্থ ব্লকে পৌঁছনোর সম্ভাবনাই বেশি।