কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত ডাক্তার ও নাগরিকদের মিছিল। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে সরব মানুষজন ধর্মতলায় অনশনের সমর্থনে ডাকা কর্মসূচিকে বলছেন, ‘দ্রোহ’ উৎসব। আর মঙ্গলবার, পঞ্চমীর বিকেলে সেই ‘দ্রোহ’-র উৎসবে শামিল হলেন সাধারণ মানুষ। এ দিন বিকেলে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত গেল চিকিৎসক এবং নাগরিকদের মিছিল।
এ দিন দেখা গেল, মধ্য কলকাতার চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের এক দিক দিয়ে চলছে মিছিল। যার পুরোভাগে চিকিৎসকেরা। তার পরে প্রতিবাদী নাগরিকেরা। রাস্তার দু’ধারে দাঁড়িয়ে সেই মিছিলের ছবি তুললেন অনেকেই। সমর্থন জানালেন। কেউ বা মিছিলে মিশে গেলেন। আলো ঝলমলে শহরের রাস্তায় সন্ধ্যা নামতে মিছিলকারীরা উপস্থিতি জানান দিলেন মোবাইলের টর্চ জ্বালিয়ে। দাবি একটাই, আর জি কর কাণ্ডে দোষীদের খুঁজে বার করা হোক।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ছ’নম্বর গেট থেকে বিকেল পৌনে ৫টা নাগাদ মিছিল রওনা দেয় ধর্মতলায় জুনিয়র চিকিৎসকদের অনশন মঞ্চের উদ্দেশে। অনেকেরই হাতে ছিল জাতীয় পতাকা। সিনিয়র চিকিৎসক মানস গুমটা, সুবর্ণ গোস্বামী, উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায়েরা মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন। তাঁরা জানান, যত দিন না খুন ও ধর্ষণের ঘটনার প্রকৃত অপরাধী ধরা পড়ছে, আন্দোলন চলবে।
এ দিন ওই মিছিল নিয়ে সকাল থেকে চিকিৎসকদের সঙ্গে টানাপড়েন চলে কলকাতা পুলিশের। চিকিৎসকেরা জানান, তাঁদের মিছিলের অনুমতি দেয়নি পুলিশ, রাস্তায় যানজটের কারণ দেখিয়ে। তাই পূর্ব নির্ধারিত কলেজ স্কোয়ারের বদলে মিছিল শুরু হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ছ’নম্বর গেট থেকে।
মিছিল শুরুর আগে কলকাতা পুলিশের এক এসিপি পদ মর্যাদার আধিকারিক কথা বলতে আসেন। তাঁকে মিছিলকারীরা জানিয়ে দেন, তাঁরা রাস্তার এক দিক ধরে মিছিল করবেন। তখন মিছিলের অনুমতি মেলে। প্রতিশ্রুতি বজায় রাখতে মানববন্ধন করে মিছিল নিয়ে যাওয়া হয়। যাতে যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত না হয়। এক সময়ে মিছিলে যোগ দেন জুনিয়র চিকিৎসকদের কয়েক জন।
এ দিন আর জি করের জনা ৭০ সিনিয়র চিকিৎসক গণইস্তফা দেন। সেই প্রসঙ্গ তুলে সুবর্ণ গোস্বামী, মানস গুমটারা জানান, সরকার সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করুক, চিকিৎসকেরা গণইস্তফার পথে হাঁটলে চিকিৎসা ক্ষেত্রে তার ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়বে। অনশন মঞ্চ থেকে ঘোষণা করা হয়, সন্দীপ ঘোষের ইস্তফার সঙ্গে এ দিনের ইস্তফার তফাত নৈতিকতার। চিকিৎসা ক্ষেত্রে সামগ্রিক ভাবে উন্নতির দাবিতেই এ দিনের গণইস্তফা।
যে ঘটনায় একাধিক লোক
জড়িত বলে চিকিৎসকদের সন্দেহ, সেখানে শুধু সঞ্জয় রায় একা জড়িত, এটা কী ভাবে চার্জশিটে সিবিআই উল্লেখ করল, তা নিয়েও প্রশ্ন চিকিৎসক মহলের। তাই, সিবিআই যাতে ঠিক তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের সামনে আনে, সেই দাবিতে আজ করুণাময়ী থেকে সিজিও কমপ্লেক্স পর্যন্ত মিছিলের ডাক দিয়েছেন মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টার, সার্ভিস ডক্টর্স ফোরাম এবং নার্সেস ইউনিটি-র সদস্য চিকিৎসক ও নার্সরা।