প্রতীকী ছবি।
এর আগেও বহু বার তাঁরা শিক্ষা দফতরের কাছে আবেদন করেছেন। এমনকি করোনা অতিমারির মধ্যেও প্রয়োজনীয় নথি জমা দিয়ে এসেছেন জেলা স্কুল পরিদর্শকদের অফিসে। কিন্তু এখনও বর্ধিত হারে পেনশন ও অবসরকালীন সুযোগ-সুবিধা থেকে তাঁরা বঞ্চিত। ২০১৬-র ১ জানুয়ারি থেকে ২০২০-র ডিসেম্বরের মধ্যে যে-সব প্রাথমিক, মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী অবসর নিয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশেরই এই অভিযোগ।
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের দাবি, ৩০ থেকে ৩২ হাজার প্রাক্তন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী ২০১৯ সালের রোপা (রিভিশন অব পে অ্যান্ড অ্যালাওয়েন্সেস) অনুযায়ী বর্ধিত হারে পেনশন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। হুগলির শ্যামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক অমলেন্দু মুখোপাধ্যায় জানান, তিনি ২০১৯-এর জুলাইয়ে অবসর নেন। বর্ধিত হারে পেনশন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার জন্য যে-সব নথি দরকার, তার সবই জমা দিয়ে এসেছেন জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে। কিন্তু এখনও তিনি বর্ধিত হারে পেনশন পাননি। অমলেন্দুবাবু বলেন, ‘‘গত জুলাইয়ে করোনা আবহেও আমরা কয়েক জন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জেলা
স্কুল পরিদর্শকের অফিসে গিয়ে নথি জমা দিয়েছি। করোনার মধ্যে দূরদূরান্ত থেকে গাড়ি ভাড়া করে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা পরিদর্শকের দফতরে নথি জমা দিয়েছেন। কিন্তু কোনও ফল হয়নি।’’
বর্ধিত হারে পেনশন না-পাওয়ায় তাঁদের কয়েক লক্ষ টাকা আর্থিক লোকসান হচ্ছে বলে জানান অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের। হাওড়ার সালকিয়া হিন্দু স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক তপন রায় জানান, তিনি অবসর নেন ২০১৮-র ৩১ জানুয়ারি। ‘‘গ্র্যাচুইটি বাবদ ১২ লক্ষ টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু পেয়েছি
ছ’লক্ষ। পেনশনের কিছু অংশ অগ্রিম নেওয়া যায়। সেই টাকাও আমরা অগ্রিম পাইনি। পাইনি বর্ধিত পেনশনের কানাকড়িও। ফলে আর্থিক ভাবে খুবই কষ্টে আছি,’’ বললেন তপনবাবু।
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, এত দিন শিক্ষা দফতরে বা জেলা স্কুল পরিদর্শকের অফিসে অভিযোগ জানালে তাঁরা অনেক সময় জানাতেন, করোনা-কালে সকলে আসছেন না বলে কাজ এগোচ্ছে না। কিন্তু এখন তো করোনার প্রভাব অনেক কমেছে. অফিসকাছারি খুলে গিয়েছে। তবু কেন তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন, উঠছে প্রশ্ন।
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বঞ্চনার বিষয়ে সরব হয়েছে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন। পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নবকুমার কর্মকার বলেন, ‘‘একাধিক বার লিখিত ভাবে বিষয়টি শিক্ষা দফতরে লিখিত জানিয়েছি। অবিলম্বে ওঁদের বর্ধিত হারে পেনশন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার দাবি জানিয়েছি।’’
শিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, দ্রুত কাজ হচ্ছে। চলতি জানুয়ারির মধ্যেই ৭০ শতাংশ শিক্ষক যাতে অবসরকালীন সুবিধা পান, সেই বিষয়ে তাঁরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন।