বাঘাযতীনে হেলে পড়া চারতলা সেই ফ্ল্যাটবাড়ি। —ফাইল চিত্র।
যথাযথ ভাবে মাটি পরীক্ষা এবং রিপোর্ট তৈরি না করা, যথোপযুক্ত যন্ত্রপাতি ব্যবহার না করা, স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারের পরামর্শ না নিয়েই নির্মাণের কাজ হয়েছিল বাঘাযতীনের হেলে পড়া সেই বহুতলের! কাজ হয়েছিল, কলকাতা পুরসভার কোনও অনুমোদন ছাড়াই। প্রাথমিক বিপর্যয়ের পরে ‘লিফটিং’-এর কাজও প্রযুক্তিগত নিয়ম না মেনেই করা হয়েছিল। মঙ্গলবার বহুতল বিপর্যয়ের এ রকম সাতটি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণের পরে ওই রিপোর্ট পুর কমিশনার ধবল জৈনের কাছে জমা দিয়েছে কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ। রিপোর্টে বাড়ির জমি জলাশয় ছিল না বলেই উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বাড়ি তৈরিতে কোনরকম অনুমতি নেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ করা হয়েছে। এই সমস্ত কাজের জন্য সরাসরি ধৃত প্রোমোটারকেই অভিযুক্ত করা পুরসভার রিপোর্টে। রিপোর্টের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে শো-কজ করা হয়েছে।
গত ১৪ জানুয়ারি বাঘাযতীনের বিদ্যাসাগর কলোনি এলাকায় চারতলা ওই ফ্ল্যাটবাড়ি এক দিকে হেলে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েক জন জানিয়েছেন, প্রথম থেকেই বহুতলের এক দিক ছিল নিচু। সম্প্রতি তা উঁচু করার কাজ শুরু হয়েছিল। মাসখানেক আগেই ওই কাজের জন্য বহুতলের বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়। ফলে ঘটনার সময়ে বহুতলে কেউ ছিলেন না। তাই হতাহত হওয়ার ঘটনা এড়ানো গিয়েছে। সে রাত থেকেই বহুতলটি ভেঙে ফেলার কাজ শুরু হয়েছিল। বহুতলের ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত প্রোমোটার পলাতক ছিলেন। ১৬ জানুয়ারি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বকখালির একটি রিসর্ট থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ববি বলেছিলেন, ‘‘গাড়ি তোলার যন্ত্র দিয়ে ফ্ল্যাটবাড়ি তোলার (লিফটিং) চেষ্টা হয়েছিল। সেখান থেকেই বিপত্তি ঘটেছে।’’