উপকূলে প্রস্তুত জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। ছবি: পিটিআই।
ঘূর্ণিঝড় রেমাল স্থলভাগে আছড়ে পড়তে চলেছে রবিবার রাতে। তার প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের উপকূল অঞ্চলে ইতিমধ্যেই ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি শুরু করেছে প্রশাসন। সাগর ব্লকে মাইক প্রচার করে সতর্ক করা হচ্ছে। কোথাও আবার বালি, মাটির বস্তা দিয়ে অস্থায়ী বাঁধ সংস্কারের কাজ চলছে। গোসাবা ব্লকে মানুষজনকে সরিয়ে ইতিমধ্যে স্কুলের ভিতর ত্রাণশিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
রবিবার সকালে সাগর ব্লকে মাইকিং করে রেমাল নিয়ে সতর্ক করছে পুলিশ এবং প্রশাসন। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী তিন দিন সাগরে স্নান করা যাবে না। যে সব পুণ্যার্থী এসেছেন সাগরে, তাঁদেরও বারণ করা হয়েছে। নিরাপদ জায়গায় সরে যেতেও বলা হয়েছে। পাথরপ্রতিমায় মাইক প্রচারের মাধ্যমে ব্লক প্রশাসন নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে বসবাসকারীদের সতর্ক করেছে। তাঁদের শীঘ্র নিরাপদ জায়গায় যেতে বলা হয়েছে। মাটির বাড়িতে বসবাসকারীদের স্থানীয় ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
নন্দকুমারপুর, কঙ্কণদিঘিতে নদীর তীরবর্তী অঞ্চল থেকে স্থানীয় স্কুলে সরানো হয়েছে বাসিন্দাদের। নদীর ধারে যাঁদের মাটির বাড়ি, তাঁদের কাছে গিয়ে সতর্ক করেছেন প্রশাসনের কর্মীরা। রবিবার রাতে ঘরে না থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। স্থানীয় স্কুলে খোলা হয়েছে ত্রাণশিবির। সেখানে রান্নারও ব্যবস্থা রয়েছে। নদীতে নৌকা চালানো বন্ধ করা হয়েছে। গোসাবাতেও স্থানীয় স্কুলে খোলা হয়েছে ত্রাণশিবির। সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন বহু মানুষ। অনেকে স্কুলের বারান্দায় বেঁধে রেখেছেন পোষ্য গরু, ছাগল। সাগরদ্বীপের অদূরে সুমতিনগরে নদীতে মাটি, বালির বস্তা দিয়ে বাঁধ সংস্কারের কাজ চলছে। ইতিমধ্যে ২৩.৬ মিটার বাঁধ সংস্কার করা হয়েছে।
আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগরের উপর দিয়ে উত্তর দিকে এগোচ্ছে রেমাল। শেষ ছ’ঘণ্টায় তার গতিবেগ ছিল ৭ কিলোমিটার। রবিবার রাতে বাংলাদেশের খেপুপাড়া এবং পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপের মাঝখান দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করে বাংলাদেশের মোংলার দক্ষিণ-পশ্চিমে আছড়ে পড়তে পারে। সে সময়ে তার গতি থাকবে ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। সাময়িক ভাবে দমকা হাওয়ার গতিবেগ পৌঁছতে পারে ১৩৫ কিলোমিটার পর্যন্তও। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের শেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী, রেমাল এখন মোঙ্গলা থেকে ৩১০ কিলোমিটার দক্ষিণে রয়েছে। বাংলাদেশের খেপুপাড়ার ২৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপের ২৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্বে রয়েছে। ক্যানিংয়ের ২৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্বে রয়েছে রেমাল।
তার প্রভাবে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায়। কলকাতা-সহ ছয় জেলায় লাল সতর্কতা। তার মধ্যে উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণায় অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বাকি চার জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।