ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর এমন সুড়ঙ্গেই কাজ শুরু হয়েছে। ফাইল চিত্র
লকডাউনের জেরে প্রায় তিন মাস বন্ধ থাকার পরে শুক্রবার বৌবাজারে ফের শুরু হল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ খননের কাজ।
গত বছরের ৩০ জুলাই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গে আচমকা ধস নামে এবং জল ঢুকতে শুরু করে। ওই দুর্ঘটনার ফলে বৌবাজারের অনেকগুলি বাড়ি ভেঙে পড়ে। বাসিন্দাদের তড়িঘড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হয়। ফের যাতে সেখানে ধস না নামে, সেই ব্যবস্থা করা হলেও এখনও ওই সুড়ঙ্গে খননকাজ শুরু করা যায়নি। কার্যত জলে ভর্তি প্রকোষ্ঠের মধ্যেই পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম) ‘চণ্ডী’। বৌবাজারে ওই বিপর্যয়ের পরে পুরোপুরি থমকে যায় সুড়ঙ্গ খননের কাজ।
পরে কলকাতা হাইকোর্টের প্রত্যক্ষ নজরদারিতে এবং চেন্নাই আইআইটি-র তদারকিতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে পাশের পূর্বমুখী সুড়ঙ্গ ফের খননের কাজ শুরু হয়। নির্মলচন্দ্র স্ট্রিটের কাছে থমকে থাকা টিবিএম ‘উর্বী’ আবার চলতে শুরু করে। কিন্তু গত মার্চে করোনা-আতঙ্কে লকডাউন শুরু হওয়ার পরে মেট্রোর কাজ ফের বন্ধ করে দিতে হয়। মাত্র ৫০-৬০ মিটার অগ্রগতির পরেই থমকে যায় কাজ। ঠিকাদার সংস্থার অধীনে থাকা শ্রমিকেরা অনেকেই বাড়ি চলে যান। লকডাউন শিথিল হওয়ায় এ মাসের শুরুতে ফের সুড়ঙ্গ খননের তৎপরতা শুরু হয়।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে নতুন করে কাজ শুরু করতে গিয়ে একাধিক সতর্কতা নিতে হচ্ছে বলে মেট্রো সূত্রের খবর। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং শ্রম মন্ত্রকের নির্দেশিকা মেনেই ওই কাজ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেডের (কেএমআরসিএল) কর্তারা।
শ্রমিকদের সবাইকে একসঙ্গে কাজে না লাগিয়ে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। করোনামুক্ত এলাকা থেকে শ্রমিক আনার বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, সংক্রমণ রুখতে কাজ শুরু করার আগে শ্রমিকদের কোয়রান্টিনে রাখা হচ্ছে বলেও কে এম আর সি এল সূত্রের খবর।
পূর্বমুখী সুড়ঙ্গে টিবিএম ‘উর্বী’ শিয়ালদহ স্টেশন থেকে এখনও প্রায় ৮০০ মিটার দূরে রয়েছে। আপাতত আগামী তিন-চার মাসের মধ্যে ওই সুড়ঙ্গের কাজ নির্বিঘ্নে শেষ করাই মেট্রো কর্তৃপক্ষের লক্ষ্য।
ওই টিবিএম শিয়ালদহে পৌঁছনোর পরে সেটিকে সুড়ঙ্গ থেকে বার করে উপরে তুলে আনা হবে। তার পরে শিয়ালদহ থেকেই ফের ওই টিবিএম-কে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গে নামিয়ে বৌবাজারের দিকে খননকাজ শুরু করা হবে। পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের কাজ শেষ করার পরে বৌবাজার থেকে মাটি খুঁড়ে ‘উর্বী’ এবং আগের পরিত্যক্ত টিবিএম ‘চণ্ডী’কে বার করা হবে।