শান্তনুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ প্রতিবেশী সাগর বন্দ্যোপাধ্যায়ের। নিজস্ব চিত্র।
টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিল ইডি। এ বার নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে জমি কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ তুললেন বলাগড়ের এক বাসিন্দা। সাগর বন্দ্যোপাধ্যায় নামে ওই ব্যক্তির আরও অভিযোগ, ১৯ লক্ষ টাকায় চুক্তি হলেও মাত্র ১০ লক্ষ টাকায় জমিটি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন তিনি।
শান্তনুর অন্যান্য সম্পত্তির সঙ্গে বলাগড়ের রিসর্ট এবং গেস্ট হাউসেও শনিবার তল্লাশি চালান ইডি আধিকারিকেরা। বলাগড়ের ওই গেস্ট হাউসের পাশে থাকা সাগরের বয়ান অনুযায়ী, গেস্ট হাউসের মালিক প্রথমে শান্তনু ছিলেন না। জনৈক প্রদীপ দে সাগরের থেকে জমি কিনে গেস্ট হাউসটি তৈরি করেছিলেন। পরে প্রদীপের কাছ থেকে জমি-সহ গেস্ট হাউসটি কিনে নেন শান্তনু। সাগরের দাবি, তারপরই প্রাক্তন তৃণমূল নেতার নজর পড়ে লাগোয়া জমির দিকে। আড়াই বিঘা জমি বিক্রি করার জন্য শান্তনু তাঁকে হুমকি দেন বলে দাবি করেন সাগর। তাঁর কথায়, “শান্তনুর সাঙ্গপাঙ্গরা আমায় গেস্ট হাউসের ভিতর গিয়ে মাত্র ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে সই করতে বলল। মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে বলল, সই না করলে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেব। কোনও বাবা টের পাবে না।” সাগরের দাবি, এই ভাবেই বন্দুক ঠেকিয়ে কোনও পয়সা না দিয়ে প্রদীপের কাছ থেকে সম্পত্তি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। প্রদীপ কাঁদতে কাঁদতে এলাকা ছাড়েন বলে দাবি করেন সাগর।
সাগরের আরও অভিযোগ, কাগজে সই করিয়ে নেওয়ার পর জমি ছেড়ে উঠে যাওয়ার জন্য সময় চাইলেও, তাঁকে তা দেওয়া হয়নি। উল্টে হুমকি দিয়ে বলা হয়, উঠে না গেলে পরিণতি খারাপ হবে। তড়িঘড়ি জেসিবি মেশিন নিয়ে তাঁদের বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বলেও দাবি করেন সাগর। তাঁর কথায়, ‘‘২০ লক্ষ টাকার চুক্তিতে এই জায়গা অন্য আর এক জনকে বিক্রি করব ভেবেছিলাম। সেই ক্রেতা অগ্রিম ৫ লক্ষ টাকাও দিয়েছিল। কিন্তু শান্তনু বলল, ‘জমি আমাকেই দিতে হবে।’ বাধ্য হয়ে চুক্তি ভেঙে শান্তনুকেই জমি দিলাম।” প্রাণের ভয়েই পুলিশ প্রশাসনকে কিছু জানাননি বলে দাবি করেছেন এই প্রতিবেশী। তাঁর কথায়, “কাকে বলব? ওদের হাতেই সব কিছু। যদি মেরে ফেলে? তাই কাউকে কিছু বলতে পারিনি।” হুমকির মুখে জমি হারিয়ে সাগর কাঁদতে কাঁদতে বলে চলেন, “আশা রাখি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ব্যবস্থা নেবেন। তাঁকে আমি আমার জমিটা ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানাব।”