পরিবার সূত্রের খবর, ‘চিপ’টি বসানোর ফলে মস্তিষ্কে জল জমার সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে মুকুলের। ফাইল চিত্র।
অসুস্থ মুকুল রায়ের মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হয়েছে। সেই অস্ত্রোপচারে তাঁর মাথায় একটি ‘চিপ’ বসানো হয়েছে। আপাতত তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল।
বৃহস্পতিবার কলকাতার ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস সংলগ্ন এক হাসপাতালে মুকুলের মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হয়েছে। কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক মুকুলকে অসুস্থ অবস্থায় ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। তাঁকে পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা ওই অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেন। সেই অস্ত্রোপচার হয়েছে গত বৃহস্পতিবার। শনিবার হাসপাতাল সূত্রে বলা হয়েছে, মুকুলের অবস্থা আপাতত ‘স্থিতিশীল’। তবে এখন কয়েক দিন তাঁকে হাসপাতালেই থাকতে হবে।
ফেব্রুয়ারি মাসে স্নায়ুরোগজনিত সমস্যা নিয়ে ওই হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছিলেন মুকুল। তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, স্নায়ুরোগজনিত সমস্যার কারণে মস্তিষ্কে জল জমছিল মুকুলের। বেশ কয়েক বার মস্তিষ্কে জমা জল সাময়িক ভাবে বার করা হয়েছিল। শেষে ফেব্রুয়ারি মাসে যখন চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন মুকুল, তখনই পাকাপাকি সমাধানের জন্য মস্তিষ্কে ‘চিপ’ বসানোর পরিকল্পনার কথা মুকুলের পরিবারকে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। পরিবার চিকিৎসকদের কথায় সায় দেওয়ায় মার্চ মাসে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছিল। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অস্ত্রোপচার করে মস্তিষ্কে ‘চিপ’ বসানো হয়েছে মুকুলের।
পরিবার সূত্রের খবর, ‘চিপ’টি বসানোর ফলে মস্তিষ্কে জল জমার সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে মুকুলের। গত দু’বছর ধরে স্নায়ুরোগজনিত সমস্যার কারণে বার বার মাথায় জল জমছিল তাঁর। এই বিষয়ে স্থায়ী সমাধান পেতে তাঁর পরিবার চিকিৎসকদের দ্বারস্থ হয়েছিল। চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনেই স্থায়ী সমস্যার সমাধানের সিদ্ধান্ত নেয় মুকুলের পরিবার।
একদা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বিশেষ আস্থাভাজন’ মুকুল বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। ২০২১ সালে তিনি বিজেপির টিকিটে কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রে ভোটে লড়েন। জয়ীও হন। তবে ২০২১ সালের জুন মাসে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরে আসেন। কিন্তু তার পর থেকেই অসুস্থতার কারণে রাজনীতির অন্দরমহলে আর তাঁকে সে ভাবে দেখা যায় না। বিধায়ক হলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে নিজের কেন্দ্রেও যেতে পারেন না তিনি। বিধানসভাতেও আসতে পারেন না। এর মধ্যেই তাঁর দলত্যাগ নিয়ে আদালতে আবেদন করেছে বিজেপি। যেখানে তাঁর বিধায়কপদ খারিজের আবেদন জানানো হয়েছে। মুকুলকে বিধানসভার ‘পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি’র চেয়ারম্যানও করা হয়েছিল। কিন্তু অসুস্থতার কারণে সে দায়িত্বও ঠিকঠাক পালন করতে পারেননি তিনি।
তাঁর ঘনিষ্ঠ এবং পারিবারিক সূত্রে খবর, পত্নীবিয়োগের পর অনেকটাই ভেঙে পড়েছিলেন মুকুল। তার পর থেকেই তাঁর কথাবার্তায় ‘অসংলগ্নতা’ দেখা যেতে থাকে। অনেক সময়েই ‘অসংলগ্ন’ মন্তব্য করে তিনি বিড়ম্বনায় পড়েছেন। বিতর্কেও জড়িয়েছেন। পরিবারের আশা, এই অস্ত্রোপচারের পর মুকুলের অবস্থার উল্লেখযোগ্য উন্নতি হবে। অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। এর পরে কয়েক দিন হাসপাতালে থাকার পর মুকুলকে ছুটি দেওয়া হবে। তবে বাড়িতে ফিরলেও বিশ্রামেই থাকতে হবে তাঁকে।