আবার নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে হাজিরা মানিক-ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলের। ফাইল চিত্র।
রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সোমবার আবার সিবিআই দফতরে হাজিরা দিলেন তাপস মণ্ডল। এ দিন কলকাতার নিজাম প্যালেসে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দফতরে কিছু নথি নিয়ে হাজির হন তিনি। এর আগেও গত ৩ জানুয়ারি সিবিআই দফতরে হাজিরা দিয়েছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তাপস।
সিবিআইয়ের একটি সূত্রের খবর, কিছু নথি নিয়ে তাপসকে তাদের দফতরে আসার কথা বলা হয়েছিল। সেই মতো নথি নিয়ে বুধবার তিনি সিবিআই দফতরে হাজির হলেন। গত ৩ জানুয়ারি তাপসকে প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন তদন্তকারীরা। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় সেই প্রথম তাপসকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই।
এর আগে তাপসকে একাধিক বার জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডি। সূত্রের খবর, ইডির জিজ্ঞাসাবাদে যে কথা জানিয়েছিলেন তাপস, সেই একই কথা সিবিআইকে তিনি জানান। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সংবাদমাধ্যমে তাপস বলেছিলেন, ‘‘ইডির কাছে যা বলেছি, সিবিআইকেও সেটাই বলেছি। মানিকবাবুর সঙ্গে যা ঘটেছিল, তা ইডিকে বলেছি। সিবিআই সেটাই যাচাই করল। ২১ কোটি টাকার হিসাব আগে দিয়েছি। ছাত্রপিছু ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল। উনি কোনও রসিদ দিতেন না।’’
ডিইএলএড কোর্সে পড়ুয়াদের কাছ থেকে অফলাইনে ভর্তির জন্য প্রায় ২১ কোটি টাকা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন তাপস। লোক পাঠিয়ে এই টাকা সংগ্রহ করতেন মানিক! এমনটাই অভিযোগ করেছিলেন তাপস। এ কথা ইডির জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছিলেন মানিক-ঘনিষ্ঠ।
এর আগে ইডির আধিকারিকরা তাপসের বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালিয়েছিলেন। ৩টি বিএড কলেজ ছাড়াও, তাপসের সংস্থা ‘মিনার্ভা এডুকেশনাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’ও ইডির আতশকাচের নীচে রয়েছে। এই সংস্থার অধীনে ৬-৭টি পলিটেকনিক এবং আইটিআই কলেজ রয়েছে বলে জানিয়েছিল ইডি। সূত্রের খবর, মানিক-পুত্র শৌভিক ভট্টাচার্যের সংস্থার সঙ্গে ৫৩০টি বেসরকারি বিএড, ডিএলএড কলেজের মানন্নোয়নের জন্য যে ২.৬৪ কোটি টাকার চুক্তি হয়েছিল, সে সম্পর্কেই তাপসের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। এ ছাড়াও নিয়োগের ক্ষেত্রে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কোনও যোগসূত্র রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে ইডি সূত্রে খবর।
রাজ্যের ৫৩০টি বেসরকারি বিএড এবং ডিএলএড কলেজের থেকে মানিক-পুত্রের সংস্থা এককালীন ৫০ হাজার টাকা করে নিয়েছিল বলে অভিযোগ তুলেছিল ইডি। এই আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে তাপস কিছু জানেন কি না, তা তাঁর কাছে আগেই জানতে চেয়েছিল ইডি।