ভেঙে পড়া সেই স্তম্ভ সরানোর কাজ চলছে। প্রতীকী ছবি।
মেট্রো রেলের পিলার ভেঙে পড়ে চোখের সামনে মারা গিয়েছেন স্ত্রী এবং কোলের শিশু। মঙ্গলবার সেই সন্তানহারা বাবা জানিয়ে দিলেন, তিনি ওই মেট্রো রেলের কাজ বন্ধ করেই ছাড়বেন। মৃতার বাবাও বলেন, যত ক্ষণ না সরকার ওই কাজের ঠিকাদারের চুক্তি বাতিল করছে, তিনি তাঁর কন্যার দেহ নেবেন না। তার শেষকৃত্যও করবেন না।
মঙ্গলবার বেঙ্গালুরুতে ঘটে ঘটনাটি। স্ত্রী এবং দুই ছেলে-মেয়েকে বাইকে চাপিয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন লোহিত। আপাতত তিনি এবং তাঁর কন্যা গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে। ঘটনার বিবরণ দিয়ে লোহিত বলেছেন, ‘‘কথা ছিল আমার স্ত্রী এবং সন্তানদের একটি জায়গায় পৌঁছে দিয়ে আমি নিজের কাজে যাব। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যেই ঘটে গেল দুর্ঘটনা।’’ নির্মীয়মাণ মেট্রোর কাজ হচ্ছিল যেখানে সেখানে একটি উঁচু পিলার তৈরি করা হয়েছিল। সেই স্তম্ভটি আচমকাই ভেঙে পড়ে লোহিতের বাইকের উপর। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে গুরুতর জখম লোহিত বলেছেন, ‘‘সবাই তখন রাস্তায় পড়ে গিয়েছি। নড়াচড়ার শক্তি নেই। আমার সামনে পড়েছিল আমার কন্যা। কোনও মতে পিছনে ফিরে দেখলাম আমার স্ত্রী আর পুত্র নিথর হয়ে পড়ে রয়েছে। ওঁদের দেখে ততক্ষণে আমি বুঝে গিয়েছিলাম— আমার হাতে আর কিছুই নেই।’’
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন লোহিতের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তিনি কি প্রশাসনকে কিছু বলতে চান? জবাবে লোহিত বলেন, ‘‘আমার আর কী বলার থাকতে পারে। সর্বস্ব হারিয়েছে আমার। আমার শুধু একটাই আর্জি, এমন ঘটনা যেন আর কারও সঙ্গে না হয়। আর সরকারকে বলব যে ঠিকাদারের সঙ্গে এই চুক্তি করা হয়েছে, যিনি বেআইনি ভাবে ওই উঁচু পিলার বানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে সমস্ত চুক্তি যেন বাতিল করা হয়।’’
লোহিতের মতোই একই দাবি জানিয়েছেন, তাঁর শ্বশুরমশাই মদন কুমার। মদনও এই দুর্ঘটনায় তাঁর কন্যাকে হারিয়েছেন। সরকারের অব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, এর শেষ দেখে ছাড়বেন। যত ক্ষণ না ওই ঠিকাদারের চুক্তি বাতিল করা হচ্ছে, তিনি তাঁর কন্যার দেহের সৎকার করবেন না। কন্যার দেহও নেবেন না।
লোহিতের মা, মৃতার শাশুড়ি জানিয়েছেন, ১০ দিন আগেই দুই সন্তানকে নিয়ে বেঙ্গালুরুতে ফিরেছিলেন ওই মহিলা। সন্তানকে স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার পথে ঘটে দুর্ঘটনা। লোহিতের বাবাও অবিলম্বে মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন।