(বাঁ দিক থেকে) ইস্টবেঙ্গলের খেলোয়াড় শৌভিক চক্রবর্তী এবং কোচ অস্কার ব্রুজ়ো, ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের কোচ রুবেন আমোরিম ও খেলোয়াড় ব্রুনো ফের্নান্দেস। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
প্রথম দল ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম সফল ক্লাবগুলির একটি। একশো বছরের সোনালি ইতিহাসে রচিত হয়েছে অনেক অধ্যায়। খেলে গিয়েছেন বহু নামীদামি, বরেণ্য ফুটবলার। কোচিং করিয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রশিক্ষকেরা। ক্যাবিনেটে রয়েছে অনেক ঐতিহ্যশালী ট্রফি। তবে সময়ের ফেরে তারাই এখন তলানিতে। অতীত গৌরব হারিয়েছে অনেক দিনই। যা চলছে, তাতে আরও লজ্জা বাঁচানোই এখন প্রধান লক্ষ্য।
দ্বিতীয় দল শুধু ইংল্যান্ড নয়, গোটা বিশ্বের অন্যতম সেরা এবং সফল ফুটবল ক্লাব। দেড়শো বছরের ইতিহাসে এমন কোনও বীরগাথা নেই, যা রচিত হয়নি। গোটা বিশ্বের ফুটবলারেরা এই ক্লাবে খেলতে মুখিয়ে থাকেন। পৃথিবীর সফলতম কোচেরা এই ক্লাবের ডাগআউটে বসার স্বপ্ন দেখেন। উপচে পড়া ট্রফি ক্যাবিনেট অনেকেরই ঈর্ষার কারণ। কিন্তু সুসময় সেখানেও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। এখন এমন অবস্থা তাদের যে, প্রথম সারির লিগ থেকেই না নেমে যেতে হয়। খোঁজ চলছে সেই জাদুদণ্ডের, যা বুলিয়ে অতীত গরিমা ফিরিয়ে আনা যাবে।
এতটুকু পড়ে অনেকেই হয়তো এই দুই ক্লাবের নাম বুঝে গিয়েছেন। তবু যাঁদের সংশয় রয়েছে তাঁদের জন্য বলে দেওয়া যাক, প্রথম ক্লাবটি ইস্টবেঙ্গল। দ্বিতীয়টি ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড। একে অপরের থেকে ৮০৪৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হলেও, সাম্প্রতিক অতীত দুই ক্লাবকেই মিলিয়ে দিয়েছে। একের সঙ্গে অপরের অহরহ তুলনা হচ্ছে। বিভিন্ন বিষয় বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, সেই তুলনা অমূলক নয়। দুই ক্লাবের পতনের ধারার মধ্যে মিল রয়েছে অনেক। লাল জার্সিধারীদের এ কী হাল!
বিনিয়োগকারী/মালিকানা বদলের প্রভাব
কলকাতা ময়দানে প্রথম বার বড় মাপের বিনিয়োগকারী এনেছিল ইস্টবেঙ্গলই। ২০১৮ সালে তারা চুক্তি করে কোয়েস সংস্থার সঙ্গে। এর ফলে ক্লাবের অর্থের সংস্থান অনেক বাড়ে। ভাল মানের ফুটবলার নিতেও তারা সক্ষম হয়। সেই মরসুমে আই লিগে খারাপ খেলেনি ইস্টবেঙ্গল। অল্পের জন্য ট্রফি জিততে পারেনি তারা। কিন্তু কোয়েসের সঙ্গে ক্লাবকর্তাদের বনিবনা বেশি দিন টেকেনি। দু’বছর পরেই কোয়েসের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়। শ্রী সিমেন্ট আসে বিনিয়োগকারী হিসাবে। তাদের হাত ধরেই প্রথম বার আইএসএলে খেলতে নামে ইস্টবেঙ্গল। সেই চুক্তিও টেকেনি। দু’বছরের মধ্যেই সেই সম্পর্কও শেষ হয় ক্লাবকর্তাদের সঙ্গে ঝামেলার কারণে। এর পর ইমামি গ্রুপের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধে ইস্টবেঙ্গল। সেই সম্পর্ক দু’বছর অতিক্রম করেছে। তবে ইস্টবেঙ্গলের অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। বার বার বিনিয়োগকারী বদলেছে। কিন্তু ফলাফল থেকেছে একই। পাঁচ বছর আইএসএলে খেললেও তারা নবম স্থানের বেশি উঠতে পারেনি। কান পাতলেই বিনিয়োগকারীর সঙ্গে ক্লাবের ঝামেলার কথা শোনা যায়। তার প্রভাব পড়ছে পারফরম্যান্সে।
ইংল্যান্ডের ক্লাবগুলিতে অবশ্য বিনিয়োগকারী নয়, সরাসরি ব্যক্তিগত অংশীদারি রয়েছে। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের অংশীদারির বেশিটাই ছিল গ্লেজ়ার পরিবারের হাতে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরেই ক্লাবের মালিকানা নিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েন ম্যালকম গ্লেজ়ার। অভিযোগ ছিল, তিনি ক্লাবের উন্নতিতে যথেষ্ট পরিমাণে বিনিয়োগ করছেন না। গ্লেজ়ার যুক্তি দেখিয়েছিলেন, ক্লাবের বিপুল দেনা তাঁকেই শোধ করতে হচ্ছে। অবশেষে ২০২৩ সালে ইনিয়োস সংস্থার মালিক স্যর জিম র্যাটক্লিফ ক্লাবের প্রায় ২৫ শতাংশ শেয়ার কিনে নেন। তিনি আবার এসেই বিভিন্ন দিক থেকে কাটছাঁট শুরু করে দেন। খরচ কমাতে উঠেপড়ে লাগেন। তার প্রভাব পড়ে দলগঠনে। ফলে ইস্টবেঙ্গলের মতোই ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডেরও হাল বদলায়নি।
যা শোনা যাচ্ছে, ফুটবল চালানোর জন্য যতটা টাকা ঢালা দরকার, বা আরও স্পষ্ট করে বললে, পাশের ক্লাব মোহনবাগানের জন্য যে টাকাটা সঞ্জীব গোয়েন্কা বিনিয়োগ করেন, তার ধারেকাছেও যেতে চাইছে না ইমামি। তাদের যুক্তি, দল যেখানে ম্যাচের পর ম্যাচ খারাপ খেলছে, সেখানে বেশি টাকা ঢেলে কী হবে? ক্লাবের একাংশের পাল্টা যুক্তি, প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ হচ্ছে না বলেই ভাল দল গড়া যাচ্ছে না এবং দল ডুবছে। এই চিরাচরিত সংঘাত লাল-হলুদে শুরু থেকে। যদিও ক্লাবকর্তা দেবব্রত সরকার এর মধ্যে একাধিক বার বৈঠক করেছেন ইমামির কর্তাদের সঙ্গে। তিনি আশাবাদী, ইমামি আরও টাকা বিনিয়োগ করবে। আনন্দবাজার ডট কমকে সেই আশার কথাই শুনিয়েছেন দেবব্রত, ময়দান যাঁকে ‘নীতু’ নামে চেনে।
মরসুমের মাঝপথে কোচ বদল
লাগাতার ব্যর্থ হলেও বার বার কোচ বদলালে আদৌ কোনও লাভ হয় না। ফুটবলের এই সারসত্যটাই এখন ইস্টবেঙ্গল এবং ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড বুঝতে পারছে না। ২০১৮ থেকে এখনও পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গলে আট বার কোচ বদল হয়েছে। তবে কার্লেস কুয়াদ্রাত বাদে কোনও কোচই ট্রফি দিতে পারেননি। আইএসএলে শুরুর দিকে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে কোচিং করিয়ে গিয়েছেন রবি ফাউলারের মতো কিংবদন্তি। তিনিও দলকে ২০টি ম্যাচের মধ্যে তিনটির বেশি জেতাতে পারেননি। কুয়াদ্রাত ট্রফি দিলেও গত আইএসএলের শুরুতে খারাপ পারফরম্যান্সের কারণে মাত্র চারটি ম্যাচের পরেই সরিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। তার পর অস্কার ব্রুজ়োর অধীনে ইস্টবেঙ্গল কিছুটা ভাল খেললেও প্রত্যাশিত সাফল্য পায়নি। সুপার কাপ থেকে বিদায় নেওয়ার পর অস্কার বলেছিলেন, ‘‘খুব হতাশাজনক ফলাফল। যা হয়েছে তার সম্পূর্ণ দায় আমার। ছেলেদের মানসিকতা দেখে সত্যি খারাপ লেগেছে। ওদের পারফরম্যান্সও খুবই খারাপ ছিল। খেলার মানটাও খুবই হতাশাজনক ছিল।”
অন্য দিকে, টানা ২৭ বছর কোচ থাকার পর ২০১৩ সালে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের কোচ হিসাবে স্যর অ্যালেক্স ফার্গুসন বিদায় নেওয়ার সময় নিজের হাতেই নতুন কোচ (ডেভিড মোয়েস) বেছে দিয়েছিলেন। মোয়েসকে বলা হত ‘দ্য চোজ়েন ওয়ান’। মোয়েস তো দূর, ম্যাঞ্চেস্টারে গত এক দশকে কোনও কোচই টিকতে পারেননি। হোসে মোরিনহো এবং এরিক টেন হ্যাগ বাদে বাকিরা ব্যর্থের দলে। গত বার ইস্টবেঙ্গল যেমন মরসুমের মাঝে অস্কারকে নিয়ে আসে, ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড নিয়ে আসে রুবেন আমোরিমকে। অস্কারও ইস্টবেঙ্গলের হাল ফেরাতে পারেননি। আমোরিমের অধীনে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড একের পর এক লজ্জার নজির তৈরি করে চলেছে।
ভাল ফুটবলার এনেও সঙ্গী সেই ব্যর্থতা
টাকা না ঢেলেও ভাল ফুটবলার পাওয়া যায়— এই ধারণা আজকের ফুটবলে অচল। যিনি যত নামী এবং প্রতিভাবান ফুটবলার, তাঁর দাম তত বেশি। অথচ বিনিয়োগকারী এবং ক্লাবের ঝামেলায় গত কয়েকটা মরসুমে ইস্টবেঙ্গল ভাল ফুটবলারই নিতে পারেনি। কেরিয়ারের শেষের দিকে থাকা কিছু ভারতীয় ফুটবলার এবং অচল বিদেশিদের নিয়ে কাজ চালাতে হয়েছিল। কারণ ভাল ফুটবলারেরা সবাই অন্যান্য ক্লাবে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন। গত মরসুমে তবু ছবিটা বদলায়। মোটা ট্রান্সফার ফি এবং ভাল অর্থ খরচ করে আনা হয় আইএসএলের সফল ফুটবলার দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোস, মাদিহ তালাল, জিকসন সিংহ, আনোয়ার আলিদের। নিট ফল শূন্য। ক্লাব যে তলানিতে ছিল সেখানেই রয়েছে। লাল-হলুদের জার্সি পরে তারকা ফুটবলারেরা নিজেদের খেলাই ভুলে গিয়েছেন। মরসুমের মাঝপথে আনন্দবাজার ডট কমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মোহনবাগানের স্ট্রাইকার দিমিত্রি পেত্রাতোস বলেছিলেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গল খুবই ভাল দল। ওরা কেন ভাল খেলতে পারছে না জানি না। সেটা বিচার করতে বসব না।’’ মরসুমের শেষেও পেত্রাতোসের মন্তব্যের ব্যতিক্রম খুঁজে পাওয়া যায়নি। ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ফুটবলার মেহতাব হোসেন বলেছিলেন, “এ দেশের ফুটবলে বিদেশিরাই পার্থক্য গড়ে দেয়। ব্যারেটোকে দেখেছি মোহনবাগানে। আমাদের দলে উগা ওপারা, টোলগে, চিডিকে দায়িত্ব নিয়ে খেলতে দেখেছি। লিডারশিপ কোয়ালিটি ছিল ওদের মধ্যে। নেতিবাচক কথা বলতে পছন্দ করি না। কিন্তু এখন সত্যি কী যে হচ্ছে বুঝতে পারছি না।”
ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের অবস্থাও সে রকম। সাম্প্রতিক সময়ে মোটা টাকা খরচ করে কেনা হয়েছে ব্রুনো ফের্নান্দেস, কাসেমিরো, ম্যাসন মাউন্ট, ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেন, রাসমাস হোয়লুন্ড, জেডন সাঞ্চোদের। কেউই নিজের আস্থার দাম রাখতে পারেননি। যে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের জার্সি এক সময় এরিক কঁতোনা, ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো, ডেভিড বেকহ্যাম, ওয়েন রুনির মতো ফুটবলার পরেছেন, সেই জার্সিতেই ব্রুনো, এরিকসেন, হোয়লুন্ডরা যা খেলেন তা চোখে দেখা যায় না। এ ক্ষেত্রে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড এবং ইস্টবেঙ্গলের ভাগ্য খারাপই বলতে হবে। ইস্টবেঙ্গলের বিনিয়োগকারী বা ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের মালিক, কেউই ভাল ফুটবলার কিনতে টাকা খরচের কথা মাথাতেই রাখেননি।ফলে প্রাপ্তির ভাঁড়ার শূন্যই।
সমর্থকদের পাশ থেকে সরে যাওয়া
যে কোনও ক্লাবেরই অন্যতম শক্তি হল তাদের সমর্থকেরা। ক্লাবের সাফল্য এবং ব্যর্থতার সময়ে তাঁরাই পাশে থাকেন। উচ্ছ্বাস যেমন করেন, তেমনই খারাপ সময়ে শক্তিও জোগান। কিন্তু ব্যর্থতা লাগাতার চলতে থাকলে এবং অদূর ভবিষ্যতে পরিস্থিতি বদলানোর আশা দেখতে না পেলে কত দিনই বা তাঁরা প্রিয় ক্লাবের পাশে থাকবেন? ইস্টবেঙ্গল এবং ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড— দুই ক্লাবের ক্ষেত্রেই এটা লক্ষ করা যাচ্ছে। ইস্টবেঙ্গলের খেলা দেখতে এখন কত জন সমর্থক যান তা হাতে গুনে বলে দেওয়া যাবে। সমাজমাধ্যমে সব সময়েই তাঁদের বিপ্লব দেখা যায়। কিন্তু মাঠে গিয়ে সমর্থন করার সময়ে তাঁদের যত সমস্যা।
গত বারের আইএসএলে ইস্টবেঙ্গলের দর্শকসংখ্যা ক্রমশ কমেছে। একটি ম্যাচে দেখা গিয়েছিল যে, দশ হাজার লোকও মাঠে যাননি! যে ক্লাবের কোটি কোটি সমর্থক রয়েছেন, তাদের ম্যাচে ১০ হাজারও দর্শকসংখ্যা হবে না, এটা বিশ্বাস করা কঠিন। লাগাতার ব্যর্থতার কারণে সেটাই হয়েছে। ক্লাবের পাশ থেকে সমর্থকেরা ধীরে ধীরে সরে গিয়েছেন। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের অবস্থা অবশ্য এতটা খারাপ নয়। ইংল্যান্ডের ফুটবল লিগগুলিতে মোটামুটি মাঠ ভর্তিই থাকে। কিন্তু ৭৫ হাজারের ওল্ড ট্র্যাফোর্ড স্টেডিয়ামে সাম্প্রতিক কালে ‘ফুল হাউস’ হয়নি। সমাজমাধ্যমে ভাইরাল রয়েছে লাল চেয়ার ফাঁকা পড়ে থাকার দৃশ্য। প্রশ্নও উঠছে, অবনমনের সামনে থাকা প্রিয় ক্লাবের থেকে কি এ বার সত্যিই মুখ ফিরিয়ে নিলেন সমর্থকেরা?
চিরশত্রু দলের একের পর এক সাফল্য
‘থ্রি ইডিয়টস্’ সিনেমায় বিখ্যাত একটি সংলাপ ছিল, ‘দোস্ত ফেল হো যায়ে তো দুখ হোতা হ্যায়। লেকিন দোস্ত ফার্স্ট আ যায়ে তো জ়াদা দুখ হোতা হ্যায়’। বন্ধু ফেল করলে দুঃখ লাগবে। কিন্তু প্রথম হলে আরও বেশি দুঃখ হবে।
ইস্টবেঙ্গল এবং ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের অবস্থা এ ব্যাপারেও একই। তাদের ক্ষেত্রে ‘বন্ধু’ শব্দের বদলে প্রতিবেশী বা চিরশত্রু শব্দ বসাতে হবে। ইস্টবেঙ্গলের ব্যর্থতার সময় যেমন পরের পর সাফল্য পাচ্ছে মোহনবাগান, তেমনই ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের খারাপ দশা চললেও গত কয়েক বছর ধরে সোনালি সময় যাচ্ছে ম্যাঞ্চেস্টার সিটির। ফলে মোহনবাগান বা ম্যান সিটি— কারও সমর্থকেরাই প্রতিবেশীদের খোঁচা দেওয়ার একটি সুযোগও ছাড়ছেন না।
ইস্টবেঙ্গল কোনও দিন আই লিগ জেতেনি। ঘরোয়া লিগ শেষ বার জিতেছে ২০০৩ সালে। মোহনবাগান ২০১৫ সালের পর থেকে দু’বার আই লিগ জিতেছে। অধুনা মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট দু’বার আইএসএল কাপ, দু’বার লিগ-শিল্ড, এক বার ডুরান্ড কাপ, এক বার ফেডারেশন কাপ জিতেছে। অর্থাৎ ছ’টি সর্বভারতীয় ট্রফি। ইস্টবেঙ্গলের সর্বভারতীয় ট্রফি বলতে ২০২৪-এ জেতা কলিঙ্গ সুপার কাপ, যা ১২ বছর পরে এসেছে।
ম্যাঞ্চেস্টার সিটি গত ছ’বছরে পাঁচ বার ঘরোয়া লিগ জিতেছে। তার মধ্যে টানা চার বার। এ ছাড়া লিগ কাপ, এফএ কাপ, কমিউনিটি শিল্ড, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, উয়েফা সুপার কাপ, ক্লাব বিশ্বকাপ— কী নেই! ট্রফি ক্যাবিনেট ভরেই চলেছে। সেখানে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের সাম্প্রতিক সাফল্য বলতে লিগ কাপ এবং এফএ কাপ। কথা তো শুনতে হবেই।
দুই ক্লাবের কাছেই এখন সোনালি সময় ফেরানোর চ্যালেঞ্জ। সেই সময়টা কবে আসে, সেটাই দেখার।