আগামী শিক্ষাবর্ষে বিডিএসে ১২৫টি আসনের বদলে মাত্র ৬৩টিতে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা যাবে দন্ত চিকিৎসা শিক্ষার জন্য। প্রতীকী ছবি।
চিকিৎসকের অভাব সারা বাংলায়। অথচ যন্ত্রপাতি, সাজসরঞ্জামের ঘাটতি থাকায় এবং শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী-সহ লোকবল কম বলে আগামী শিক্ষাবর্ষে কলকাতার আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজের বিডিএসের আসন কমে যাচ্ছে। এই মর্মে সুপারিশ করেছে ডেন্টাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া (ডিসিআই)। তাদের পরিদর্শনে ওই কলেজের ১৯ দফা খামতি ধরা পড়েছে। এ ভাবে আসন হ্রাসে অস্বস্তি বেড়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রশাসনের।
আগামী শিক্ষাবর্ষে বিডিএসে ১২৫টি আসনের বদলে মাত্র ৬৩টিতে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা যাবে দন্ত চিকিৎসা শিক্ষার জন্য। পরিকাঠামো ও লোকবলের অভাবেই পড়ুয়া ভর্তিতে রাশ টানা হচ্ছে বলে স্বাস্থ্য শিবির সূত্রের খবর। ডিসিআই-এর সাম্প্রতিক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং সেই অনুযায়ী সুপারিশ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কাছে। ডিসিআই জানিয়ে দিয়েছে, যন্ত্রপাতি ও লোকবলের অভাবে কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে ২৫% স্নাতকোত্তর আসনও। পরিকাঠামোর প্রশ্নে এশিয়ার সব চেয়ে পুরনো এবং এ রাজ্যের বৃহত্তম আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজের আসন কমানোর সুপারিশ করা হয়েছে।
আচমকা এমন ঘটনায় অস্বস্তি বেড়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের। ওই ডেন্টাল কলেজে আট বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ সামলানো তপনকুমার গিরি এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। মুখে কুলুপ স্বাস্থ্য দফতরেরও।
দেশের দন্ত চিকিৎসা শিক্ষার নিয়ামক সংস্থা ডিসিআইয়ের এগ্জ়িকিউটিভ কমিটির বৈঠকের আলোচনার যে-সারাংশ প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে দু’দফা পরিদর্শনে ওই কলেজের ১৯ দফা খামতি ধরা পড়েছে। তার মধ্যে গুরুত্ব পেয়েছে কলেজে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীর অভাব। বেশির ভাগ ডেন্টাল চেয়ার ও যন্ত্রপাতি জং ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি কলেজের নিজস্ব প্রেক্ষাগৃহ না-থাকা, হস্টেলের সমস্যা, বিভিন্ন ল্যাবের দুর্দশা এবং সার্বিক পরিচ্ছন্নতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে ডিসিআই।
পড়ুয়া ভর্তির আসন ছাঁটাইয়ের খবরে স্বাস্থ্য ভবনে তোলপাড় শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য-শিক্ষা বিভাগের কর্তারা ওই কলেজের অধ্যক্ষকে তলব করে শুক্রবার দফায় দফায় বৈঠক করেন। স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশের দাবি, ডিসিআই আসন কমানোর সুপারিশ করলেও ছাত্র ভর্তি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। তাই পরিকাঠামো ও লোকবল উন্নয়নের মুচলেকা দিয়ে যাতে এ বছরের মতো অন্তত বিডিএসে ১২৫ জন এবং স্নাতকোত্তর এমডিএসে ২৮ জন পড়ুয়াকেই ভর্তি করা যায়, সেই চেষ্টা চলছে। যদিও স্বাস্থ্যকর্তারা ব্যক্তিগত স্তরে মানছেন যে, তিন বছর আগে শতবর্ষ পালনকারী ঐতিহ্যবাহী কলেজে ছাত্র ভর্তি কমিয়ে দেওয়ার কেন্দ্রীয় সুপারিশ রীতিমতো লজ্জার।