সমগ্র শিক্ষা মিশন প্রকল্পের অর্থ খরচ করতে হবে একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে।
সমগ্র শিক্ষা মিশনের অর্থ নিদির্ষ্ট পদ্ধতিতে খরচ করার নির্দেশ দিল শিক্ষা দফতর। সম্প্রতি সমগ্র শিক্ষা মিশন প্রকল্পের জেলা আধিকারিকদের কাছে একটি নির্দেশ পৌঁছেছে। সেই নির্দেশে বলা হয়েছে, সমগ্র শিক্ষা মিশন প্রকল্পের অর্থ খরচ করতে হবে একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে। ওই প্রকল্পের অর্থ খরচের জন্য পৃথক একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে বলা হয়েছে। জিরো ব্যালেন্সে খোলা ওই অ্যাকাউন্ট থেকেই আগামী দিনে সমগ্র শিক্ষা প্রকল্পের যাবতীয় খরচ করতে হবে স্কুলগুলিকে। অর্থ খরচের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির একযোগে অভিযোগ, সম্প্রতি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জড়িয়ে পড়ার পরেই শিক্ষা দফতর আর্থিক স্বচ্ছতা আনতে চাইছে। কিন্তু যে পথে স্বচ্ছতা আনার চেষ্টা হচ্ছে, তাতে দুর্নীতি আরও বাড়বে বই কমবে না। কারণ তৃণমূল জমানায় শিক্ষাক্ষেত্রে ঘুণ ধরে গিয়েছে। তার ফলস্বরূপ বর্তমানে মন্ত্রী পার্থ ইডির হেফাজতে রয়েছেন। তবে সমগ্র শিক্ষা মিশন প্রকল্প নিয়ে শিক্ষা দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বিজ্ঞপ্তিটি জারি হয়েছিল ২২ জুলাই। তাই পার্থর গ্রেফতারির সঙ্গে এর কোনও যোগ নেই।
এত দিন সমগ্র শিক্ষা মিশনের অর্থ খরচের ক্ষেত্রে একটি বিশেষ অ্যাকাউন্টের পাশাপাশি, স্কুলের বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হত। কিন্তু এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার একটি স্পষ্ট নির্দেশিকা জারি করেছে। সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সমগ্র শিক্ষা মিশন প্রকল্পে সংশ্লিষ্ট স্কুলকে একটি জিরো ব্যালেন্সের অ্যাকাউন্ট খোলা বাধ্যতামূলক করতে হবে। সেখান থেকেই এই প্রকল্পের অর্থ খরচ করতে হবে। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার সমগ্র শিক্ষা মিশন প্রকল্পে অর্থ খরচের যে নির্দেশ দিয়েছে, তা এত দিন কার্যকর হয়নি কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। নতুন এই নির্দেশ তড়িঘড়ি কার্যকর করার জন্য জেলা আধিকারিকদের ওপর চাপ বাড়ানোর তৎপরতা দেখে মনেই হচ্ছে কিছু একটা ঘটেছে। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী হয়তো এখন গ্রেফতার হয়েছেন, কিন্তু শিক্ষা দফতরে দুর্নীতি তো অনেক বছর ধরে ধারাবাহিক ভাবে চলছে।’’
তবে এ প্রসঙ্গে নবান্নের সাফাই, ১৬ জুলাই সব দফতরের আর্থিক উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। সেই বৈঠকেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে পাওয়া অর্থ যেন সঠিক ভাবে খরচ করা হয়। এবং কোনও অর্থ যেন ফিরে না যায়। তাই ওই নির্দেশনামা জারি হয়েছে। এই নির্দেশিকার সঙ্গে পার্থর গ্রেফতারির কোনও যোগ নেই।