রাজ্যসভায় পাঁচটি আসনেই প্রার্থী দিতে চলেছে তৃণমূল। আর বাম-কংগ্রেসের প্রস্তুতি চলছে বোঝাপড়ার ভিত্তিতে ‘নির্দল’ কাউকে পঞ্চম আসনে দাঁড় করানোর। বাংলায় রাজ্যসভার ভোট ঘিরে বাড়ছে উত্তেজনা!
দলের হাতে থাকা চারটি আসনের তিনটিতেই এ বার নতুন মুখ আনবে শাসক দল। বিদায়ী সাংসদদের মধ্যে শুধু নাদিমুল হকের ফের মনোনয়ন পাওয়া প্রায় পাকা। তবে নতুন মুখ কারা হবেন, সেই সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে বুধবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘দলএখনও প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করেনি।’’ দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে রাতে রাজ্যসভা নির্বাচনের কৌশল নিয়ে কথাও বলেছেন তিনি।
নির্বাচনী কৌশল নিয়ে চর্চার মধ্যেই এ দিন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে মুর্শিদাবাদের দুই কংগ্রেস বিধায়ক আবু তাহের ও মইনুল হককে নিয়ে গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। দুই মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও ফিরহাদ হাকিমকে সঙ্গে নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন মমতা। যার জেরে গুঞ্জন শুরু হয়েছে, তা হলে কি পঞ্চম আসনে তৃণমূলের প্রার্থীকে কংগ্রেসের একাংশ ভোট দিয়ে জিতিয়ে দেবে? না কি কংগ্রেসের ‘সরকারি’ প্রার্থীর বিরুদ্ধে পাল্টা প্রার্থী দাঁড়ালে তাঁকে তৃণমূল সমর্থন দেবে?
কংগ্রেস শিবিরের অন্যান্য তৎপরতা অবশ্য তৃণমূলের সঙ্গে ‘আঁতাঁতে’র ওই গুঞ্জনকে খারিজ করছে। কারণ, মুখ্যমন্ত্রীর ঘর থেকে বেরিয়েই বিরোধী দলনেতা একান্তে কথা বলতে গিয়েছিলেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর সঙ্গে। দিল্লি ও বাংলার দুই অবসরপ্রাপ্ত আমলা এবং রাজ্যের এক অভিনেতা—তিনটি নাম নিয়ে দুই শিবিরে মত বিনিময় হয়েছে। আর এ সবের আগে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর উপস্থিতিতে কংগ্রেস বিধায়কদের বৈঠক থেকে রাহুল গাঁধীর কাছে লিখিত প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, বাম সমর্থনে ‘নিরপেক্ষ’ কাউকে রাজ্যসভায় পাঠানো যেতে পারে। কিন্তু তৃণমূলের সঙ্গে বোঝাপড়ায় পরিষদীয় দল রাজি নয়। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার ছাড়া হয়েছে কংগ্রেস সভাপতির উপরেই। এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক সি পি জোশী প্রস্তাব পেয়ে প্রদেশ নেতাদের সঙ্গে কথাও বলেছেন।
অধীরবাবু এ দিন খোলাখুলিই বলেছেন, ‘‘সিপিএম সীতারাম ইয়েচুরিকে প্রার্থী করলে আমরা এখনও সমর্থন করতে রাজি! তা না হলে নির্দল প্রার্থীই দিতে হবে।’’ সুজনবাবুরও বক্তব্য, ‘‘নির্দল প্রার্থীর প্রস্তাবে আমাদেরও আপত্তি নেই।’’ তবে কংগ্রেস শেষমেশ রাজনৈতিক মুখ দিলে পাল্টা প্রার্থী দিতে তৈরি সিপিএমও।