দূষণ আর ধোঁয়াশায় জেরবার দিল্লি। ছবি: পিটিআই।
পর পর চার দিন। দিল্লির দূষণের ছবির কোনও রকম হেরফের হল না। যত দিন যাচ্ছে দূষণদাপটে ‘শ্বাসরুদ্ধ’ হয়ে উঠছে রাজধানী। শনিবারেও বাতাসের গুণগত মান (একিউআই) রয়েছে চারশোর উপরে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে ধোঁয়াশার দাপটও। ফলে প্রতি দিনই দৃশ্যমানতা নেমে যাচ্ছে। সড়ক এবং বিমান পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে।
শনিবারও ঘন ধোঁয়াশার চাদরে মোড়া রাজধানীর বিস্তীর্ণ অঞ্চল। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রক বোর্ডের তথ্য বলছে, দিল্লির বাতাসের গুণগত মান ৪০৬। যা ‘অত্যন্ত খারাপ’ পর্যায়ের মধ্যে পড়ে। দূষণের দাপটে বাড়ছে কাশি, চোখজ্বালা এবং শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গও।
কোন এলাকায় কী পরিস্থিতি, ড্রোনের মাধ্যমে তা নজরদারি চালানো হচ্ছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, এমস এবং প্রগতি ময়দান এলাকায় ধোঁয়াশার চাদরে মুড়ে রয়েছে। প্রগতি ময়দানে বাতাসের গুণগত মান ৩৫৭। যা ‘খুব খারাপ’ পর্যায়ের মধ্যে পড়ে। দূষণের অন্য ‘হটস্পট’গুলি হল কালিন্দী কুঞ্জ, ইন্ডিয়া গেট। এখানে একিউআই ৪১৪। যা ‘অত্যন্ত ভয়ানক’ পর্যায়ের মধ্যে পড়ে। পরিস্থিতি সামলাতে দূষণের ‘হটস্পট’গুলিতে যান্ত্রিক উপায়ে জল ছেটানোর কাজও চলছে। কিন্তু দিল্লিবাসীদের দাবি, সরকারের এই প্রচেষ্টাও খুব একটা কাজে আসছে না।
রাজধানীর রাস্তায় যাতে একসঙ্গে অনেক গাড়ি না নামে, তার জন্য সরকারি অফিসগুলিতেও সময় বদলানোর কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী অতিশী। রাস্তায় যান চলাচলও কমবে, তাতে দূষণের মাত্রাও কিছুটা কমবে বলে যুক্তি দিল্লি সরকারের। ঘোষণা অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সরকারি অফিসগুলি শুরু হবে সকাল ৯টায়। শেষ হবে সাড়ে ৫টায়। দিল্লি সরকারের অফিসগুলি শুরু হবে সকাল ১০টায়, শেষ হবে সাড়ে ৬টায়। আর দিল্লি পুরনিগমের কাজ শুরুর সময় সকাল সাড়ে ৮টা। শেষ হবে বিকেল ৫টা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ‘গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান’ (গ্র্যাপ-৩) চালু করেছে দিল্লি সরকার। যে এলাকায় বেশি যানবাহন চলে, সেখানে নিয়মিত জল ছেটানো হচ্ছে। দূষণ বৃদ্ধি করতে পারে এমন কাজগুলির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
বিএস-৩ পেট্রল এবং বিএস-৪ ডিজেল গাড়িগুলি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আইন অমান্য করলে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে বলেও প্রশাসনের তরফে বার্তা দেওয়া হয়েছে। দিল্লির বাইরে থেকে আসা ডিজেলচালিত ছোট বাণিজ্যিক গাড়িগুলিকে জরুরি পরিষেবা ছাড়া ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।